শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সাংসদ লতিফের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মামলা

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক কাঠামো ‘বিকৃত’ করে ছবি টানানোর অভিযোগে সাংসদ এম এ লতিফের বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ ফরিদ আলমের আদালতে এক হাজার কোটি টাকার মানহানি মামলা হয়েছে। এম এ লতিফ চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর, হালিশহর ও পতেঙ্গা) আওয়ামী লীগের সাংসদ। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার বা তাঁর ওপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, এই মামলার বাদী হলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাইফুদ্দীন আহমেদ রবি। সাংসদ এম এ লতিফের বিরুদ্ধে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির অভিযোগ তোলেন। এ জন্য বিবাদীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৫০০, ৫০১ ও ৫০২ ধারায় মামলাটি হয়।26410e0dc8f269ecf04f2b909ee90a91-

বাদীর কৌঁসুলি মোসলেউদ্দীন চৌধুরীবলেন, ‘বাদী থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারায় জবানবন্দি নিয়ে এডিসি বা তাঁর ওপরের কর্মকর্তা দিয়ে তদন্তের আদেশ দেন আদালত। আরজিতে বলা হয়, সাংসদ এম এ লতিফ বিকৃত ছবি প্রচার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন। এ জন্য এক হাজার কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। তাই এই মানহানির ঘটনায় বিবাদী করা হয় সাংসদ এম এ লতিফকে।’
মামলার বাদী সাইফুদ্দীন আহমেদ রবি বলেন, ‘সাংসদ এম এ লতিফ তাঁর বডির (শারীরিক অবয়ব) সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মাথা বসিয়ে দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি জাতির জনকের সঙ্গে ফাজলামি করেছেন। তাই দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি আদালতে গিয়েছি। আদালত আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাটি একজন পদস্থ কর্মকর্তা দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ফেস্টুনে ব্যবহার করা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির মুখমণ্ডল বঙ্গবন্ধুর হলেও শরীর তাঁর নয়। অন্য কারও শরীরে কম্পিউটার কারসাজির মাধ্যমে মুখমণ্ডল যুক্ত করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফর করেন। সেদিন তিনি সেনানিবাস ছাড়াও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ (অক্সিজেন সড়কের কুয়াইশ প্রান্ত) ও আগ্রাবাদের কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে ঢাকায় চলে যান।

তাঁর চট্টগ্রাম সফরের সময় স্থানীয় সাংসদ এম এ লতিফ আগ্রাবাদ ও বিমানবন্দর সড়কে অসংখ্য ফেস্টুন লাগানোর ব্যবস্থা করেন। এসব ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিল। কিন্তু ছবিতে বঙ্গবন্ধুর শারীরিক কাঠামো পরিবর্তন করার কারণে বিতর্ক শুরু হয়। এ ঘটনা নিয়ে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরেজমিন দেখা গিয়েছিল, নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় বঙ্গবন্ধুর আপাদমস্তক (মাথা থেকে পা পর্যন্ত) ছবি লাগানো হয়। এই ছবিতে বঙ্গবন্ধুর পায়ে হালফ্যাশনের কাপড়ের কালো জুতা ছিল। এ ছাড়া পরনে লম্বা পাঞ্জাবি ও চোষ পায়জামা দেখা গেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আজীবন খাটো পাঞ্জাবির সঙ্গে ঢোলা পায়জামা পরিধান করতেন। পাঞ্জাবি-পায়জামার সঙ্গে তিনি বেশির ভাগ সময় স্যান্ডেল পরতেন। আর ফেস্টুনে লাগানো ছবিতে দাঁড়ানোর ভঙ্গিও অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে আওয়ামী লীগ নেতাসহ অনেকে মনে করছেন। বঙ্গবন্ধুকে কখনো এই ভঙ্গিতে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। ছবির নিচে বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন উন্নয়ন ও সাফল্যের বর্ণনা রয়েছে।

প্রথম আলো