শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চার মাস পর বন্দর ছেড়েছে সেই জাহাজ

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬

নিউজ ডেস্ক: পচা গম নিয়ে দীর্ঘ প্রায় চার মাস মংলা বন্দরে আটকে থাকার পর অবশেষে বাংলাদেশ ছেড়েছে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি পিনটেল। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বন্দর ত্যাগ করে জাহাজটি।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) গোলাম মুক্তাদির এম ভি পিনটেল ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট লিটমন্ড শিপিংয়ের পরিচালক আক্তার হোসেন জানান, প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ পিনটেল গত বছরের ১২ অক্টোবর মংলা বন্দরে আসে।1445313657

আমদানি করা এই বিপুল পরিমাণ গম পচা, পোকাযুক্ত এবং খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় মংলা বন্দরে তা খালাস বন্ধ করে দেয় খাদ্য অধিদপ্তর। গম খালাসের বিষয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও খাদ্য অধিদপ্তরের মধ্যে চার মাস ধরে দফায় দফায় চলে বৈঠক। পরে পচা গম ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই জাহাজটি পচা গম নিয়ে ফ্রান্সের রোয়েন ডাকিং বন্দরের উদ্দেশে আজ সকালে বাংলাদেশ ছেড়ে যায়।

গত বছরের ১ এপ্রিল ফ্রান্স থেকে গম বোঝাই করে বাংলাদেশের উদ্দেশে ছেড়ে আসে এম ভি পিনটেল। জাহাজটি প্রায় ৫২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে। চট্টগ্রামে প্রায় ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গম খালাস করে। বাকি ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে মংলা বন্দরে এলে নিম্নমানের গম হওয়ায় তা খালাসকাজ বন্ধ রাখা হয়।

তদন্ত শেষে গত বছরের ২১ অক্টোবর এমভি পিনটেল নামের জাহাজের মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে আমদানি করা গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয় বলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে লিখিতভাবে জানায় খাদ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, জাহাজে থাকা বাকি ২১ হাজার টন গম মংলায় খালাস করবে না অধিদপ্তর। তবে এর আগে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই একই জাহাজ থেকে ৩১ হাজার ৫০০ টন গম চট্টগ্রামে খালাস করা হয়ে যায়।

গত বছরের ১৩ অক্টোবর মংলা বন্দরে আমদানি করা গম খালাস তদারকি কমিটির আট সদস্য জাহাজটির গম পরীক্ষা করে এবং নমুনা সংগ্রহ করে। এই কমিটি আমদানি করা গম নিম্নমানের ও পচা বলে অভিমত দিলেও ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে গমের নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

একই বছরের ১৮ অক্টোবর গম খালাস তদারকি কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী নূরুল ইসলাম জানান, এসব গম মানবদেহের জন্য উপযোগী নয়। তবে পশু বা মাছের খাদ্যের জন্য অন্যরা এই গম নিতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা পচা গম নিয়ে দেশব্যাপী হৈ চৈ শুরু হলে এমভি পিনটেল নামের এই জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’ করে চট্টগ্রামে ৩১ হাজার ৫০০ টন গম খালাস করে বাকি গম মংলা বন্দরে খালাসের জন্য আনা হয়। প্রভাবশালী মহলের চাপ থাকা সত্ত্বেও এই গমে দৃশ্যমান ক্রটি থাকায় মংলার গম খালাস তদারকি কমিটি গম খালাস করতে অনীহা প্রকাশ করে। গমের আমদানিকারক ঠিকাদার ইমপেক্স কনসালট্যান্ট লিমিটেড খাদ্য বিভাগের ওপর প্রভাব বিস্তার করে গম খালাসের তৎপরতা চালানোর অভিযোগও পাওয়া যায়।