শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ভারতের ফ্রি ফেসবুক বন্ধ হলো যে কারণে

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬

india fb_newsshomoyবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের টেলিকম রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ ফেসবুকের ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক নির্মাতা মার্ক জুকারবার্গ একটি স্ট্যাটাস দেন নিজের ভেরিফায়েড পেজে। তার স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন ভারতের প্রযুক্তিবিদ অনিল দাস।

তবে মজার তথ্য হলো, যারা এতদিন ভারতে ফ্রি ফেসবুক ব্যবহার করে আসছিলো, তারা মূলত প্রথম থেকেই ফ্রি ব্যবহার করতে পারতো না। এই সুবিধাটি ছিল কারো ডাটা ব্যবহার করতে করতে ডাটা শেষ হয়ে গেলেও ফ্রি ফেসবুক ব্যবহার করা যেতো। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এই ফ্রি বেসিকস অপশনটি ভারতের কেরিয়ার পার্টনারের সাথে শুরু করেছিলো। কিছু কিছু কেরিয়ার পার্টনার ফ্রিতে ফেসবুক ব্যবহার করতে দিতো তাদের সার্ভিসের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্য।

জুকারবার্গ দাবি করেছিল, পৃথিবীর ৪ বিলিয়ন লোকের ইন্টারনেট সংযোগ নেই শুধুমাত্র তারা এটার খরচ বহন করতে পারে না বা তারা যেখানে থাকে সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই এই দুই কারণে। ভারতের ক্ষেত্রেও এই দুইটি ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন্তা আরও বৃহৎ পরিসরে।

তিনি বলেন, ‘ ভারতে ৬ লাখেরও বেশি গ্রাম রয়েছে। কেউ যখন এতগুলো গ্রামের কথা শোনে তখন সে অবাক হয়। আমার লক্ষ্য হচ্ছে আগামী পাঁচ বছরে প্রত্যেকটি গ্রামে থাকবে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ।’

২০১৫ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারতে ১৩১.৪৯ মিলিয়ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ রয়েছে। এই সমীক্ষা অনুসারে ট্রায় নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৫১২ কেবিপিএসের ওপরে যেকোনো সংযোগকে ব্রডব্যান্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে তারযুক্ত, তারহীন, ওয়াই-ফাই, ওয়াই ম্যাক্স এবং ভিসেট সংযোগও অন্তর্ভূক্ত।

১.২৫ বিলিয়ন লোকের জন্য ১৩১.৪৯ মিলিয়ন ইন্টারনেট সংযোগ মাত্র ১০ শতাংশ লোকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। ভারতের যা দরকার তা হলো আরও বেশি ইন্টারনেট সংযোগ।

ফ্রি বেসিকস ইন্টারনেট ব্যবহার একটি ভুল পদ্ধতি উল্লেখ করে প্রযুক্তিবিদ অনিল দাস বলেন, ‘ইন্টারনেট.ওআরজি (internet.org) মৌলিকভাবে একটি ভুল গঠনের ওয়েবসাইট যা কিছু সেবা দেয় কিন্তু মানুষকে সাংস্কৃতিক এবং বিষয়গতভাবে উপযুক্ত সমস্যা সমাধানে কোন দিক নির্দেশনা দেয় না। এই পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষের উপকার হওয়ার সুযোগ খুবই কম কারণ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভারতের মানুষ কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। সুতরাং কিভাবে এটি ভারতের মানুষের জন্য উপযোগী হয়?’

এই প্রশ্নটি উনি জুকারবার্গের ভারতে ফ্রি বেসিকস সেবা বন্ধ করে দেয়ার কারণে দেয়া স্ট্যাটাসের কমেন্টে করেন।

উল্লেখ্য, ভারতে ফেসবুক স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সাথে পাবলিক ওয়াই ফাই দেয়ার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ওদিকে গুগলও ভারতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য কাজ করছে।

ভারতের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাভি শংকর প্রসাদ বলেন, ‘ আগামী ৭ মাসের মধ্যে আরও ১০০ মিলিয়ন ভারতীয় নাগরিকের কাছে ই্ন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়া হবে।’

গুগল যে ওয়াই ফাই সেবা দিবে, তা লিমিটেড থাকবে না। বরং দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবাই হবে। চলতি বছরের মধ্যে ভারতের রেলওয়ের সাথে যৌথ প্রযোজনায় ৪০০টি রেল স্টেশনে ওয়াইফাই হট স্পট তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতে জন্ম নেয়া গুগলের প্রধান কার্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই।