বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

ছােট্র মেঘের প্রশ্ন আল্লাহ’র কাছে কি মোবাইল আছে? (ভিডিও)

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬

লিহান লিমা : ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি অফিস থেকে শেষ বারের মতো ঘরে ফিরেছিলেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই নৃশংস হত্যাকন্ডের শিকার হতে হয় সম্ভাবনাময় এই দম্পতিকে। খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে গত চার বছরে সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের অনেক প্রতিশ্রুতির বুলি ছাড়লেও এখনো কোন আসামি ধরা পড়েনি। সাগর-রুনি দম্পতির একমাত্র উত্তরাধিকারী অবুঝ মেঘের সামনেই মা-বাবাকে নির্মমভাবে খুন করা হয়।dr_101793

প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মেঘ শুধু মিডিয়ায় বলতে পেরেছিল বাসায় আঙ্কেলরা এসেছিল। তিন বছরের মেঘের কাছে খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আর দক্ষ গোয়েন্দারও গত চার বছরে এই মামলার কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি । অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি পুলিশ, ডিবি হয়ে র‌্যাবের কাছে যায়। কিন্তু তারাও কোনো আশার কথা শুনাতে পারেনি সাগর-রুনির পরিবারকে।

মঙ্গলবার আমাদেরসময় ডটকমের বৈঠকে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল বলেছেন সাগর-রুনি হত্যার বিচার শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর এই দম্পতির মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে প্রশাসন ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের আশার বাণীতে আর আস্থা রাখতে পারছে না তাদের পরিবার।sagor-runi_178389

রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, সাগর-রুনি হত্যার বিচার কাজ বন্ধ রয়েছে। এ খুনের সঙ্গে অবশ্যই প্রভাবশালী কেউ জড়িত। তাই বিচারিক কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকা-ের পর সরকার মেঘের সব দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস দিলেও পরে তারা এ বিষয়ে নীরবতা পালন করে।

তবে মেঘের জীবনে হের ছায়ার পরশ বুলিয়ে দিয়েছে রুনির এক সময়ের সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠ বান্ধবী একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা রূপা। নিজ সন্তানের মতোই দেখাশোনা করে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন মেঘের স্কুলে আসা যাওয়ার কাজটি করছেন তিনি। এছাড়া অভিভাবকের অনেক দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। আর ঘরে বাইরে মেঘের ওপর ছায়া হয়ে আছেন তার মামা নওশের আলম রোমান। তাদের দুজনের আদর হে মা-বাবাকে ভুলেই গেছে মেঘ।

সারাদিন নানি ও মামার সাথে দুষ্টুমি করে ক্রিকেট খেলে ও কখনো কখনো নিজের একান্ত কাজে ব্যস্ত হয়ে সময় কাটছে মেঘের। সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মেঘ। মেঘ তার নানি নূর নাহার মির্জাকে আম্মা বলে ডাকে।

নূর নাহার মির্জা বলেন, রুনি হত্যার পর মেঘ প্রথম দিকে খুব ভয়ে ভয়ে থাকত, এখনো মাঝে মাঝে মন খারাপ করে থাকে। সবার মা-বাবা আছে, তার নেই, সে জানে তার মা-বাবা আল্লাহর কাছে আছে। সে বলে, আল্লাহর কাছে কি মোবাইল ফোন নেই? মা’র প্রতি তার ভালোবাসা অনেক। তাই তো মা দিবসে ভালবেসে মায়ের জন্য ছবি একেঁছে মেঘ। ছবির ক্যাপশনে লেখা-হ্যাপি মাদার’স ডে, গিফট ফর মাই মাদার, আই লাভ ইউ ‘মম’।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে সাগর-রুনি হত্যার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাজাবাজারে তাদের বাসায় ছুটে যান সাংবাদিক বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনরা। আরো ছুটে যান সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনসহ পুুলিশ-র‌্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

সেদিন সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর আর আসেনি সেই ৪৮ ঘণ্টা। এরপর সাহারা খাতুন অধ্যায় শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি দায়িত্বে এসে সময় নেন ৬ মাস। কিন্তু ওই ছয় মাসেও রহস্যের সমাধান হয়নি।
আমাদের সময়.কম