শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বাহুবলের ৪ শিশুকে হত্যা করা হয় পাঁজর ভেঙে, শ্বাসরোধ করে

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশুর বুকের পাঁজর ভেঙে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার চার শিশুর ময়নাতদন্ত হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়। পরে রাতেই তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) দেবাশীষ দাশ বলেন, ‘শিশুদের শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বুকের পাঁজর ভাঙা ছিল। আজ বৃহস্পতিবারই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’94879_147

এদিকে, এ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আরো একজনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় আটকের সংখ্যা তিনজনে দাঁড়াল। গতকাল বুধবার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদুল আলী বাগাল (৫৫) ও তাঁর ছেলে জুয়েল মিয়াকে (২৫) আটক করা হয়। আজ ভোরে আরজু মিয়া নামের আরো একজনকে আটক করা হয়েছে বলে ডিবি পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ছাড়া লোমহর্ষক এ ঘটনার তদন্ত করার জন্য গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক আবদুল আলী ও জুয়েল মিয়াকে ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এদিকে নিহত শিশুদের বাড়িতে আজো শোকের মাতম বইছে। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শিরা সকাল থেকেই নিহতদের বাড়িতে এসে ভিড় করছেন।

গতকাল দুপুরে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের নিখোঁজ চার শিশুর লাশ পাঁচ দিন পর বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তারা হলো বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার দুই চাচাতো ভাই আবদুল আজিজের ছেলে একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আবদুল কাদিরের ছেলে সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)।

নিখোঁজ শিশুরা শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ির পাশের মাঠে খেলাধুলা করতে গিয়েছিল। সন্ধ্যার পরও তারা বাড়িতে ফিরে না আসায় অভিভাবকরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। কোথাও তাদের সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতেই মাইকযোগে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন লোক মাটি কাটতে গিয়ে বাতাসে দুর্গন্ধ পান। এরপর তাঁরা নিখোঁজ শিশুদের বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় একটি শিশুর হাত ও আরেক শিশুর পা দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে।