শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

প্রেম, বিয়ে, লাশ, অত: পর…….

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬

নিউজ ডেস্ক: রাফাত রাজী তৃষা (২৫)। বছর তিনেক আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সরকারি কবি নজরুল কলেজের এমবিএর এই ছাত্রী। স্বামী সাব্বির আহমেদ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বিয়ের পর প্রথমদিকে সুখেই কাটছিল তাদের ছোট্ট সংসার। তবে সে সুখ বেশিদিন টেকেনি, বছর খানেক ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখা দেয় কলহ। সংসারের সেই কলহ চরমে পৌঁছে শেষ পর্যন্ত লাশই হতে হলো তৃষাকে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৃষার লাশ ফেলে পালিয়েছেন সাব্বির। তৃষা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তার। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।191362_1

রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার নারিন্দা এলাকার ১১৭/২ নম্বর বাসায় সাবলেট থাকতেন তৃষা-সাব্বির দম্পতি। সম্প্রতি তাদের কলহ আর মনোমালিন্যের বিষয়টি পরিবারের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছিল। সর্বশেষ গত বুধবার রাতেও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গেণ্ডারিয়ার বাসা থেকে তৃষা ফোন করেন ছোটবোন রাফাকে। ফোন করেছিলেন রংপুরের বদরগঞ্জে থাকা মাকেও।

ফোনে তৃষা বলেছিলেন, রংপুরের গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে চান তিনি। আর কখনও ঢাকায় ফিরবেন না। কলেজপড়ূয়া রাফা জানান, বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে বড়বোনের সঙ্গে তার কথা হয়। শুক্রবার সকালে তার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। গাড়িতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল রাফার। তবে তার আগেই অসহনীয় দুঃসংবাদ পেলেন। তৃষা ঠিকই বাড়ি গেলেন, তবে লাশ হয়ে।

গেণ্ডারিয়া থানার এসআই হুমায়ুন রশিদ সমকালকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে নারিন্দার ১১৭/২ নম্বর বাসা থেকে তৃষার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বামী সাব্বির। পুলিশ খবর পেয়ে হাসপাতাল মর্গে যায়।

সাব্বিরকে খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ততক্ষণে মর্গে লাশ রেখে পালিয়েছেন সাব্বির। এমনকি তার মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি আত্মহত্যা না-কি হত্যাকাণ্ড তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যু মামলা করেছেন তৃষার চাচা ইমতিয়াজ রাজি। শুক্রবার তৃষার চাচাতো ভাই অনিক জানান, তৃষার মরদেহ নিয়ে তারা গ্রামের বাড়ি বদরগঞ্জে রওনা হয়েছেন। সেখানেই তার দাফন হবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হুমায়ুন রশিদ বলেন, চাকরিজীবী হওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃষার স্বামীর অফিসে থাকার কথা ছিল। কেন তিনি দুপুরে বাসায় গেলেন, আবার হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন- এটা কিছুটা সন্দেহজনক। তাকে পাওয়া গেলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে। এ ছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি।
উৎসঃ সমকাল