শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সবাই যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে: সাখাওয়াত

SONALISOMOY.COM
ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
news-image

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের মানুষ বিনা বাধায় কেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দে যেন ভোট দিতে পারে, সেই সুযোগ তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান রেখেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান।

নির্বিঘ্ন ভোট নিয়ে নিজের শঙ্কার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ইসি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটির প্রতি এই আহ্বান রাখেন তিনি।

এজন‌্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি আবারও তুলে ধরেন বিএনপি প্রার্থী। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাব মুক্তি এবং পোলিং এজেন্টকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার স্বার্থে কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।

সাখাওয়াত বলেন, “মানুষ একটা কথা বলছে, আমরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারব তো? পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব? আমারও এক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন জনগণের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আশার মূল্য দেবে।”

আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের দিয়ে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, তিনি কোনো ‘ফেবার’ চান না।

সাখাওয়াত বলেন, “মানুষের মধ্যে একটা শঙ্কা দেখেছি, যেন প্রভাব বিস্তার করা না হয়, ভোটারদের যাতে কেন্দ্রে যেতে বাধার সৃষ্টি করা না হয়। তাদেরকে যাতে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করা না হয়, তারা যাতে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।”

ইসি প্রত‌্যাখ‌্যান করে এলেও স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি ফের তুলে ধরে বিএনপি প্রার্থী বলেন, “গুরুত্ব বিবেচনা করে এই পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের মতো একটি জায়গায় সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এখানে মোতায়েন করবেন, সেটার জোর দাবি জানাচ্ছি।”

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী ‘অনেক শক্তিশালী’ মন্তব‌্য করে আইনজীবী সাখাওয়াত বলেন, “আইন প্রয়োগের সদিচ্ছাটা নির্বাচন কমিশনের। অতীতে তারা এতে ব্যত্যয় ঘটানোর কারণে সমালোচিত হয়েছিল। আশা করি এবার তারা তাদের স্বদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাবে।”

ভোটে সব প্রার্থীর সমান সুযোগ এখনও হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, “আমাদের কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের খোঁজা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমরা কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।”

সরকারি কর্মকর্তা কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস‌্য কিংবা ভোট পর্যবেক্ষণের নামে কেউ যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে দিকে ইসিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান বিএনপি প্রার্থী।

আগে-ভাগে পোলিং এজেন্টের নাম জমা দিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার বিরোধিতা করে সাখাওয়াত বলেন, “অতীতে আমরা দেখেছি, পোলিং এজেন্টের নাম আগে জমা দিলে তারা চিহ্নিত হয়ে যান। তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় এবং গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়। সেজন্য আমরা পোলিং এজেন্টদের নাম নির্বাচনের দিন জমা দেওয়ার কথা বলছি।”

ভোটের দিন কোনো পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিলে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে ইসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

“সবার সামনে যেন ভোট গণনা করা হয়। সব পোলিং এজেন্টের স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রেই যেন ফলাফল ঘোষণা করা হয়।”

জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার হেলাল উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার মইনুল হক, বিজিবির ৩৯ ব্যাটালিয়নের প্রধান শামীম ইফতেখার, র‌্যাব-১১’র অধিনায়ক কামরুল আহসানসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ৭ মেয়র প্রার্থী বক্তব্য দেন।