বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ট্রাম্পের জন্য কোনো অঘটন অপেক্ষা করছে কি?

SONALISOMOY.COM
ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
news-image

অনলাইন ডেস্ক:
ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ কি কোনো অঘটনের মুখে পড়বেন? তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ কি রুদ্ধ হয়ে যাবে? হিলারি ক্লিনটনের জন্য কোনো সুযোগ অপেক্ষা করছে কি?

এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আজ ১৯ ডিসেম্বর। আজ ইলেক্টরাল কলেজ ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইলেক্টররা যদি চান, তারা নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে পারেন। কিন্তু তা হবে কি?

৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ইলেক্টরাল কলেজ ভোটের হিসাবে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু প্রায় ২৫ লাখ জনপ্রিয় ভোট বেশি পেয়েছেন হিলারি। জনপ্রিয় ভোট এত বেশি পেয়েও নির্বাচনে হারার রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রে নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ব্যবস্থায় শেষ পর্যন্ত জনপ্রিয় ভোটের কোনো মূল্য নেই। ইলেক্টরাল কলেজ ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫৩৮টি ইলেক্টরাল ভোট রয়েছে। এর মধ্যে যে প্রার্থী ২৭০টি ভোট নিশ্চিত করতে পারবেন, তিনিই হবেন প্রেসিডেন্ট। এবারের নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ৩০৬টি ইলেক্টরাল ভোট পেয়েছেন। তাহলে সমস্যা কোথায়?

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থায় জনপ্রিয় ভোটে যে প্রার্থী যে রাজ্যে জয়ী হন, সেই রাজ্যের সব ইলেক্টরাল ভোট তিনিই পাবেন। এ হিসাবে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। কিন্তু জনপ্রিয় ভোটের হিসাবে নির্ধারিত ইলেক্টরাল ভোট ইলেক্টরদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়। আর সমস্যা এখানেই। নির্ধারিত ইলেক্টররা বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন। তারা শর্তানুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। যদি হয়, তাহলে অঘটন ঘটতেই পারে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেক্টররা আজ নিজ নিজ রাজ্যের রাজধানীতে জড়ো হবেন। তারা ছয়টি ব্যালটে ভোট দিয়ে বিজয়ী প্রার্থীর বিজয় চূড়ান্ত করবেন। কিন্তু কয়েকজন ইলেক্টর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

জনগণের ভোট অনুযায়ী রাজ্যে বিজয়ী প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য নন ইলেক্টররা। ১৭৮৭ সালের সাংবিধানিক এই আইন অনুযায়ী, ইলেক্টররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। এবার যদি একটি নির্দিষ্টসংখ্যক ইলেক্টর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে রুদ্ধ হয়ে যাবে তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ।

আজ কি হতে পারে : ঘটনাক্রম-1
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ভোট পড়েছে। কয়েকটি সুইং স্টেটে সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেক্টরাল ভোট নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, জনপ্রিয় ভোটে বিজয়ী প্রার্থী সব ইলেক্টরাল ভোট পাবেন। মেইন ও নেব্রাস্কা- এই দুই রাজ্যে ইলেক্টরাল ভোট জনপ্রিয় ভোটের আনুপাতিক হারে প্রার্থীদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, ৩০৬টি ইলেক্টরাল ভোট পাবেন ট্রাম্প। আজ ১৯ ডিসেম্বর তা যদি তিনি পেয়ে যান, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে ইলেক্টরাল ভোট গণনা হবে এবং চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন ট্রাম্প।

আজ কি হতে পারে : ঘটনাক্রম-2
এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয় হয়েছে আকস্মিকভাবে। নির্বাচনের আগে সব জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি। কিন্তু ইলেক্টরাল কলেজ ভোটের হিসাবে হেরে গেছেন তিনি। এখন ইলেক্টররা যদি চান, তাহলে তারা হিলারিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী করতে পারেন।

ট্রাম্পের ভাগে ইলেক্টরাল ভোট রয়েছে ৩০৬টি আর হিলারির ভাগে ২৩২টি। প্রেসিডেন্ট হতে লাগে ২৭০টি। আজ যদি ট্রাম্পের ভাগের ৩৮ জন ইলেক্টর হিলারির পক্ষে ভোট দেন, তাহলে প্রেসিডেন্ট হবেন হিলারি। মন্ত্রিসভা গঠনের তোড়জোড়সহ জয়ের পর ট্রাম্প যা যা করেছেন, সব বিফলে যাবে।

কিন্তু ৩৮ জন ইলেক্টর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন কি? বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইলেক্টররা ভোট দেওয়ায় তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে- এমন ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের ইতিহাসে নেই। তবে এবারের নির্বাচন নাটকীয়তায় ভরা। ফলে যেকোনো অঘটন ঘটতেই পারে আবার নাও পারে। তবে ৩৩ জন ইলেক্টরের কথা শোনা গেছে, যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। তারা শেষ পর্যন্ত কি করেন, আজই তা জানা যাবে।

আজ কি হতে পারে : ঘটনাক্রম-3
যদি এমন হয়- নির্ধারিত ৩৮টি ইলেক্টরাল ভোট ট্রাম্প পেলেন না এবং এসব ইলেক্টররা হিলারিকেও তাদের ভোট দিলেন না, তাহলে কি হবে? এ ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীরই ২৭০টি ইলেক্টরাল ভোট থাকবে না। তখন ভোট হবে কংগ্রেসে। সেখানেই নিষ্পত্তি হবে কে প্রেসিডেন্ট হবেন। তবে দেশজুড়ে নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে না।