ইস্তাম্বুলে হামলাকারীকে ধরতে চিরুনি অভিযান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইস্তাম্বুলের একটি নাইটক্লাবে গুলি চালিয়ে ৩৯ জনকে হত্যার ঘটনায় হামলাকারীর খোঁজে অভিযান আরও জোরদার করেছে তুরস্কের পুলিশ।
ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে তারা এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী নুমান কুর্তুলমাস জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের কাছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও প্রাথমিক বর্ণনা রয়েছে।
সন্দেহভাজনকে ‘দ্রুততার’ সঙ্গে শনাক্ত করে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
গত রোববার খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম প্রহরে ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় রেইনা নাইটক্লাবে হামলাটি চালানো হয়। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ক্লাবটিতে জড়ো হওয়া প্রায় ৬০০ লোকের ওপর বন্দুক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওই বন্দুকধারী।
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কুর্তুলমাস বলেছেন, “ওই সন্ত্রাসীর হাতের ছাপ ও দেখতে কেমন এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
“পরবর্তী পদক্ষেপ হবে, যত দ্রুত সম্ভব তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করা। আমাদের আশা, ওই সন্ত্রাসীকে খুঁজে পাওয়ার পাশাপাশি তার সঙ্গে যাদের যোগাযোগ আছে এবং ক্লাবের ভিতরে ও বাইরে থেকে যারা তাকে সহযোগিতা করেছে তাদের সবাইকে খুঁজে পাওয়া যাবে।”
তখনও পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
ঘটনাস্থল রেইনা নাইটক্লাবের সামনে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ; ১ জানুয়ারি, ২০১৭। রয়টার্স
ঘটনাস্থল রেইনা নাইটক্লাবের সামনে পাহারা দিচ্ছে পুলিশ; ১ জানুয়ারি, ২০১৭। রয়টার্স
ওই দিন সন্ধ্যার পর ইস্তাম্বুলের জেইতিনবুরনু এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের বিশেষ বাহিনী। অভিযানে হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়, কিন্তু হামলাকারীকে পাওয়া যায়নি।
ইস্তাম্বুলের অন্যান্য এলাকায় চালানো অভিযানে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তুর্কি পুলিশ এরমধ্যে একটি ছবি প্রকাশ করে তা সন্দেহভাজন হামলাকারীর হতে পারে বলে জানিয়েছে। তবে ছবিটি কবের ও কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে তা জানায়নি।
একটি ট্যাক্সিযোগে রেইনা নাইটক্লাবে এসেছিল হামলাকারী। ট্যাক্সির বুট থেকে লম্বা ব্যারেলের একটি বন্দুক নিয়ে প্রবেশ পথ থেকেই গুলি শুরু করে। তার গুলিতে প্রবেশ পথে ক্লাবের এক নিরাপত্তা রক্ষী ও এক ট্র্যাভেল এজেন্ট নিহত হন।
এরপর সাত মিনিট ধরে নির্বিচার গুলিবর্ষণে সে আরও ৩৭ জনকে হত্যা করে। প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটিরত মানুষের হুল্লোড়ের সুযোগে বন্দুকধারী তার পোশাক পরিবর্তন করে পালিয়ে যায়।
যে ৩৯ জন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১১ জন তুর্কি নাগরিক, বাকী ২৮ জন বিদেশি। এদের মধ্যে সৌদি আরবের সাতজন, ইরাকের চারজন, লেবাননের তিনজন এবং জর্দান, ভারত ও মরক্কোর ২ জন করে নাগরিক রয়েছেন।
এছাড়া সিরিয়া, ইসরায়েল, ফ্রান্স, তিউনিসিয়া, বেলজিয়াম, কুয়েত, কানাডা ও রাশিয়ার একজন করে নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এ হামলায় আহত অন্তত ৬৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।