শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

মধ্যরাতে বিস্ফোরণ-আগুন, দম্পতির মৃত্যু

SONALISOMOY.COM
জানুয়ারি ৭, ২০১৭
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাভারের একটি বাড়িতে গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ওই বাড়ির পাঁচজন। দিবাগত রাত তিনটার দিকে পৌর এলাকার ভাগলপুর জনৈক তাজুল ইসলামের একতলা বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত স্বামী-স্ত্রী হলেন রওশন আলী ও খায়রুন নেসা। তাঁরা বাড়ির মালিক তাজুল ইসলামের শ্যালিকা ও ভায়রা ভাই। আহত ব্যক্তিরা হলেন বাড়ির মালিক তাজুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নেসা, নিহত দম্পতির মেয়ে ফাতেমা আক্তার ও তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম এবং নিহত দম্পতির ছেলে হজরত আলী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তাজুল ইসলামের একতলা পাকা ভবনটিতে তিনটি কক্ষ, একটু ফাঁকা স্থান ও একপাশে রান্নাঘর। তিনটি কক্ষের একটিতে ছিলেন বাড়ির মালিক ও তাঁর স্ত্রী। আরেকটিতে ছিলেন নিহত দম্পতি রওশন আলী ও খায়রুন নেসা। তৃতীয় কক্ষটিতে ছিলেন নিহত দম্পতির মেয়ে ফাতেমা আক্তার, তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম ও ছয় বছর বয়সী মেয়ে রিফা মনি। আর ফাঁকা স্থানটিতে ঘুমিয়ে ছিলেন নিহত দম্পতির ছেলে হজরত আলী।

বাড়ির মালিক ও প্রতিবেশীদের ভাষ্য, গতকাল রাত তিনটার দিকে রান্নাঘরে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এর পরপরই পুরো ঘরে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই প্রতিবেশীরা ওই বাড়ির ছাদের সিঁড়িঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। তাঁরা রওশন ও খায়রুন নেসা ছাড়া বাকি ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বাইরে বের করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ভেতরে ঢুকে রওশন ও খায়রুনকে বের করেন।

উদ্ধার করা সবাইকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রওশন আলী ও খায়রুন নেসাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি ব্যক্তিদের মধ্যে ফাতেমা আক্তারের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি আছেন। ফাতেমার মেয়ে রিফা মনি তেমন আহত হয়নি। রিফা বাদে বাকি পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের শরীরের ১০ থেকে ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে।

হাসপাতালের আইসিইউর চিকিৎসক সহযোগী অধ্যাপক ইয়াসমিন খানম বলেন, ফাতেমার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি ব্যক্তিরা শঙ্কামুক্ত।

ঘটনা বিষয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিসের সাভার জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে, গ্যাসের চুলা লিকেজের কারণে পুরো বাড়ি গ্যাসে ভরে গিয়েছিল। এরপর কোনো কারণে স্পার্কিং হওয়ায় বিস্ফোরণ হয়। পরে পুরো বাড়িতে আগুন ধরে যায়।’

ওই বাড়িতে তিতাস গ্যাসের লাইন ছিল। জানতে চাইলে সাভারে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তদন্ত ছাড়া বলা মুশকিল কীভাবে বিস্ফোরণ হলো।

তাজুল ইসলামের বাড়ির রান্নাঘরের তিন-চার ফুট দূরে জনৈক তোতা মিয়ার বাড়িও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর টিনশেড ঘরের বেড়া ও চাল উড়ে গিয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।