শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ্ব অর্থনীতিতে গতি ফিরবে ২০১৭ সালে: আইএমএফ

SONALISOMOY.COM
জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
news-image

অনলাইন ডেস্ক:

নতুন বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে চাঙাভাব ফিরে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি মনে করছে, ২০১৭ সালে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক গতি বাড়বে। এতে ২০১৬ সাল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য নিষ্প্রভ হলেও ২০১৭ ও ২০১৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

গতকাল সোমবার বিশ্ব অর্থনীতির পূর্বাভাসের হালনাগাদ প্রতিবেদন ‘আপডেট টু দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এর আগে গত অক্টোবরের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। হালনাগাদ প্রতিবেদনেও তা একই রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

আইএমএফ মনে করছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধিতে গেল ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো উত্তোলন কমাতে সম্মত হয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলো। এ কারণে রাশিয়ার অর্থনৈতিক গতি বাড়বে। দেশটিতে ঋণাত্মক অবস্থান থেকে এবার ১ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। গত নভেম্বরে নেওয়া নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের কারণে অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় কমেছে দেশটিতে। এর প্রভাবে প্রবৃদ্ধি কমবে। ২০১৭ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ হবে বলা হচ্ছে। অক্টোবরের প্রতিবেদনে তা ৭ দশমিক ৯ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। তবে ২০১৮ সালে আবার ঘুরে দাঁড়াবে ভারতের অর্থনীতি। সংস্থাটি মনে করছে ২০১৮ সালে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ; যা আগে ৭ দশমিক ৬ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায়, পর্যটন খাত ও অভ্যন্তরীণ ভোগ হ্রাস পাওয়ায় প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। জাপানে এ বছর শূন্য দশমিক ৮ ও আগামী বছর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

এ ছাড়া মার্কিন নির্বাচনে নতুন প্রেসিডেন্ট আসার পর যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর ২ দশমিক ৩ ও আগামী বছর আড়াই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করছে আইএমএফ।

প্রতি তিন মাস পর হালনাগাদ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এবারে বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু উন্নত দেশ অর্থনীতিকে চাঙা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে অর্থনৈতিক গতি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নীতি নির্ধারণ পরিবর্তন করা হলে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ঝুঁকি থাকবে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা, আফ্রিকার দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল অর্থনীতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের কারণে উদ্বাস্তু ও অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।

অক্টোবরে প্রকাশিত আইএমএফের হালনাগাদ প্রতিবেদনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এই হার বাংলাদেশের করা প্রাক্কলনের তুলনায় কম। সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই সময়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।