ঐশী মা বাবা ঐশ্বরিক প্রাপ্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঐশী তার মা বাবার ঐশ্বরিক প্রাপ্তি। যার নামের অর্থই ঈশ্বরীয় বা উর্ধ্বোগামী। তার পুরো নাম ঐশী ফাতিমা-তুয-যোহরা । যেমনি রূপ তেমনি গুণ, কথাটার সাথে মানান সই যেন ঐশী। এই অপরূপা তার মায়াবী সুরের যাদুতে নিজেকে একজন দীপ্তমান কন্ঠশিল্পী হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে সঙ্গীত জগতের অসীম আকাশে। শুরুতেই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ‘২০১৬‘র চ্যানেল আই-সিম্ফনি মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের পপুলার চয়েসে’ শ্রেষ্ঠ নবাগত শিল্পীর পরুষ্কার। যা তার একটি বড় অর্জন। এছাড়াও পেয়েছেন নানা পুরষ্কার।
আধুনিক সময়ের রক ব্যান্ড ও উন্নত কালচারের সঙ্গীত দুনিয়ায় বাংলার প্রাণসঙ্গীত ফোক যেন নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল। এসময় যে সকল শিল্পী বাউল ও ফোক সঙ্গীতকে বাঁচতে এগিয়ে এসেছেন তাদের সাথে তাল মিলিয়ে এই সমসাময়িক শিল্পীর অবদান ফেলে দেওয়ার নয়। তার কন্ঠে বাংলার মানুষের প্রাণের ফোকসঙ্গীত যেন যুগপোযোগী হয়ে এসেছে। সুন্দর ভাবে ফোক গানগুলি আধুনিক রক ফিউশনের মাধ্যমে তার কন্ঠ দিয়ে জয় করতে সক্ষম হয়েছে দেশ বিদেশের লাখো শ্রোতাদের হৃদয়।
এতো কিছুর পরও তার পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে তার উদার মানসিকতা। তার ইচ্ছা ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা দান করা। তাই শিল্পীজীবনের পাশাপাশি সে এখন এম এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সের একজন ছাত্রী। যেখানে তাকে করতে হয় কঠোর পরিশ্রম।
নোয়াখালী জেলা সদর লক্ষ্মীনারায়ণপুর কলেজরোডে বসবাসকারী আব্দুল মান্নান ও নাসিমা আকতারের কোল জুড়ে প্রথম সন্তান হিসাবে ঘর আলো করে আসেন ১৯৯৬ সালের ৮ ডিসেম্বর এই সুশ্রী কন্যা। তার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও নোয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে।
মায়ের কাছে প্রথম শেখা বুলির পাশাপাশি শিখেছেন সুরও। দূরদর্শী মা বাবা তার ভেতর লুকিয়ে থাকা প্রতিভা যেন স্পষ্টভাবে দেখতে পান। তাই কোন প্রকার অবহেলা না করে মাত্র ৪ বছর বয়সে প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সাথে শুরু হয় তার সঙ্গীত শিক্ষারও। স্বপ্ন দেখেনে মেয়েকে বড় শিল্পী বানাবেন। ২০০০ সালে তাকে রংপুর শিশু একাডেমিতে সঙ্গীত শিক্ষার জন্য ভর্তি করা হয়। এরপর ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্য্ন্ত তাকে সঙ্গীত শিক্ষা দেন নোয়াখালী মৌমাছি কচি-কাঁচার মেলার শিক্ষক মো: শরীফ। তারপর ২০০৮ থেকে এখন পযন্ত তাকে সঙ্গীত শিক্ষা দিয়ে আসছেন ঐশীর শিক্ষা গুরু হাফিজউদ্দিন বাহার।
সঙ্গীত জগতে ঐশীর জোয়ার শুরু হয় হৃদয় মিক্স-৩ অ্যালবামের মাধ্যমে। ২০১৪ সালে করেন আরও কয়েকটি মিক্সড অ্যালবামের কাজ। এরপর ২০১৫ সালে লেজার ভিশনের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এই মিষ্টি শিল্পীর প্রথম একক অ্যালবাম ‘ঐশী এক্সপ্রেস’। অ্যালবামের সবগুলো গানের গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন এবং সুর ও সঙ্গীত করেন জনপ্রয়ি কন্ঠশিল্পী ইমরান। অ্যালবামটি বিশেষত্ব হল, এটি রবিউল ইসলাম জীবনের প্রথম একক কথা ইমরানের প্রথম একক সুর ও ঐশীর প্রথম একক অ্যালবাম। এরপর ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাকে লেজার ভিশন এক্সক্লুসিভ প্রকাশনা হিসাবে জনপ্রিয় শিল্পী বেলাল খানের সুরে ও জেকের সঙ্গীত আয়োজনে প্রকাশিত হয় ঐশীর ২য় একক অ্যালবাম ‘মায়া’। একই বছর ঊদ-উল আযহা প্রদীপ সাহার কথায় নাজির মাহমুদ ও অভি আকাশের সুরে প্রকাশিত হয় তার ৩য় অ্যালবাম ‘হাওয়া’। পাশাপাশি পালাক্রমে চলছে তার একের পর এক কাজ। গেয়েছেন অডিও, জিঙ্গেল, নাটক, সিনেমা। এ পর্য্ন্ত তার গায়কি ছুঁয়ে গেছে ১৭/১৮ টি ছবিতে। সঙ্গীত জগৎ যেন সর্বাঙ্গে তাকে বরণ করতে অপেক্ষারত। সব মিলিয়ে বর্তমানে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন ঐশী। সম্প্রতি গানবাংলা টেলিভিশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিঙ্গ যর্ন্ত্রসংগীত শিল্পীদের সমন্বয়ে ‘উন্ডজ অব চেইঞ্জ প্রিসিজন’ -১ ও ২ সম্পন্ন করেছেন, যেখানে কন্ষ্ঠি শিল্পী হিসাবে জায়গা পেয়েছেন ঐশী। যোগ্যতাসুত্রে গাওয়ার সুয়োগ পেয়েছেন তাপস এন্ড ফ্রেন্ডস এর সহশিল্পী হিসাবে ২০১৬ ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্টে।
তার কন্ঠে শোভা পাওয়া গান যেমন দক্ষিনা হা্ওয়া, তুমি চোখ মেলে তাকালে, তোমার দিলকি দয়া হয়না, পরিক্ষাতে যাবো কেমন করে, আমিনা থাকলে সংসারে(মায়া) ইত্যাদি। কত স্বপ্ন কত আশা ও তুখোড় সিনেমার দুটি এখন পাওযা যাচ্ছে ইউটিউবে। আর ছবি দুটো আগামী ২০১৭ সালে মুক্তির অপেকষায় প্রতিক্ষামান।
তার গায়কি শ্রোতাদের হৃদয়ে কতটুকু জয় করতে সক্ষম হয়েছে তার সাক্ষ্য বহন করছে ইউটিউ। তার গাওয়া ‘দিলকি দয়া হয়না’ গানটি ভীষণ ভাবে সাড়া ফেলেছে ইউটিউবে। ইতিমধ্যো এই গানটির শ্রোতা সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ ২০ হাজারের মতো।
এরি মাঝে তার পরবর্তী একক অ্যালবামের কাজ শেষের পথে। যা আসতে চলেছে নুতন বছরের শুরুতে। আসছে বেশ কিছু সিঙ্গেল ট্রাকও।
তার সমস্ত অর্জনের পেছনে তাকে ভীষণ ভাবে সাহায্য করছেন তার মা বাবা ও দুই ভাই।
ছবি আঁকা ও আবৃতি করতে তার ভালো লাগে। আমরা প্রত্যাশা করি তার জীবন হোক কোমল তুলির পরম আদরে আঁকা ছবির মতো সুন্দর, আবৃতি হোক লাখো হৃদয়ে তার নাম।