বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

১১ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি রাবি শিক্ষক তাহের হত্যা মামলা

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৭
news-image

রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহেরের হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পরেও হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। আলোচিত এ হত্যাকান্ডের বিচারে দীর্ঘসূত্রিতায় অসন্তোষ প্রকাশ ও উচ্চ আদালতে দ্রুত এ মামলার নিষ্পত্তির দাবি তুলেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার অধ্যাপক তাহেরের স্মরণে বিভাগে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় এই দাবি তোলা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ সভায় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক খোন্দকার ইমামুল হক বলেন, ‘প্রথমে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তাহের হত্যা মামলার রায় হয়েছিল। পরবর্তীতে আসামিরা আপিল করে সাজা কমিয়ে নিয়েছে। এরপর মামলাটির কোনও অগ্রগতি নেই। ২০১৩ সালে পরিবােেরর পক্ষ থেকে করা হাইকোর্টে আপিল শুনানিও শেষ হয়নি। যা আমাদের হতাশ করছে। দ্রুত এ মামলার বিচার নিষ্পত্তির মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি কামনা করছি।’
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক হামিদুর রহমান, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মৃনাল কান্তি রায় প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অধ্যাপক তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার পশ্চিম ২৩/বি বাসা থেকে নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুবয়ারি সকালে নিজ বাসার পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী জামায়াতপন্থি শিক্ষক মিয়া মো. মহিউদ্দিনকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিক্ষক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক আহসানুল কবির জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মহিউদ্দিন ও তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহীসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরে ২০০৭ সালের ৩ জুলাই রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০০৮ সালের ২২ মে আদালত শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীরের ভাই শিবির কর্মী আব্দুস সালাম ও নাজমুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। অভিযোগপত্রের অন্য দুই আসামি তৎকালীন মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিনকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করেন আসামিরা। ৫ বছর পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। ওই বছরের ২১ এপ্রিল আপিলের রায়ে শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যু দণ্ডাদেশ বহাল এবং জাহাঙ্গীরের ভাই শিবির কর্মী আব্দুস সালাম, নাজমুল ইসলামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের দুই জন খালাস ও অন্য দুই জনের সাজা কমানোয় ড. তাহেরের পরিবারের পক্ষ থেকে আবার উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। কিন্তু ৪ বছর পরেও আপিলের নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে বিচারের রায়ও কার্যকরও সম্ভব হয়নি।