শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ ১০৩/৩

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
news-image

ক্রীড়া ডেস্ক :
পঞ্চম দিনে গড়াল বাংলাদেশ-ভারত হায়দরাবাদ টেস্ট। ৪৫৯ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ১০৩ রানে।

জিততে হলে শেষ দিনে ৭ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশকে করতে হবে আরো ৩৫৬ রান। ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হবে দিনের কমপক্ষে ৯০ ওভার।

স্কোর: বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ১০৩/৩ (লক্ষ্য ৪৫৯)

ব্যাটিং: মাহমুদউল্লাহ (৯), সাকিব আল হাসান (২১)

আউট: মুমিনুল হক (২৭), সৌম্য সরকার (৪২), তামিম ইকবাল (৩)।

সাকিব-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে দিন শেষ: দ্রুত সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হকের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। দুজন চতুর্থ উইকেটে ২৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেন।

সৌম্যর পথ ধরলেন মুমিনুলও: সৌম্যর বিদায়ের দুই ওভার পর মুমিনুল হকও সাজঘরের পথ ধরেন। সৌম্যর মতো তিনিও স্লিপে রাহানেকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন(২৭)। সৌম্যর বেলার বোলার ছিলেন জাদেজা, এবার অশ্বিন। ১ উইকেটে ৭১ থেকে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৭৫!

রাহানের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন সৌম্য: শুরুতে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হক। কিন্তু রাহানের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ৬০ রানের এ জুটি। জাদেজার বলে স্লিপে এক হাতে সৌম্যর ক্যাচ নেন রাহানে। ৬৬ বলে ৭ চারে সৌম্যর ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। বাংলাদেশের স্কোর তখন ২ উইকেটে ৭১।

সৌম্য-মুমিনুল জুটির ফিফটি: ১১ রানে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হক। ২০তম ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার বলে সৌম্য সরকার চার মেরে জুটির ফিফটি পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের স্কোর তখন ১ উইকেটে ৬১।

বিরাটের হাতে ক্যাচ দিলেন তামিম: অশ্বিনের বল শরীর নামিয়ে ডিফেন্স করেছিলেন তামিম ইকবাল। ব্যাটের কানায় লেগে প্যাডের ছোঁয়া পেয়ে বল চলে গেল স্লিপে। বাঁহাতে বল তালুবন্দি করে বিরাটের উইকেটের আবেদন। আম্পায়ার জোয়েল উইলসন আবেদনে সাড়া দিলেন না। বিরাট রিভিউয়ের আবেদন করলেন। দ্বিতীয়বারের মত রিভিউ নিয়ে সফল ভারতের অধিনায়ক। ৩ রানে ফিরলেন তামিম ইকবাল।

রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে: চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ৪১৩। শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫২১ রানের জবাবে ২০০৮ সালে এ রান করেছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের দল। সেবার ব্যাট হাতে ১০১ রান করেছিলেন অধিনায়ক আশরাফুল।

ভারতের ইনিংস ঘোষণা: ১৫৯ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করল ভারত। ফলে বাংলাদেশের লক্ষ্য ৪৫৯। প্রথম ইনিংসে ২৯৯ রানের লিড পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। চেতেশ্বর পূজারা ৫৪ ও রবীন্দ্র জাদেজা ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান।

সাকিবের জোড়া আঘাত: সাকিবের ঘূর্ণিতে বোল্ড আজিঙ্কা রাহানে। ২৮ রান করা রাহানে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে সাকিবের বল মিস করেন। বল সরাসরি মিডল স্ট্যাম্পে আঘাত করে। ইনজুরি থেকে ফিরে আসা রাহানে প্রথম ইনিংসে ৮২ রান করেছিলেন।

সাকিবের ‘প্রথম’ উইকেট: প্রথম ইনিংসে ২৪ ওভার বোলিং করেও সাকিব আল হাসান ছিলেন উইকেটশূণ্য। দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় ওভারেই পেলেন প্রথম সাফল্য। ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। সাকিবের হাওয়ায় ভাসানো বল এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন বিরাট। লাফিয়ে বল তালুবন্দি করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

কোহলি-পূজারার প্রতিরোধ: ২৩ রান তুলতেই মুরালি বিজয় ও লোকেশ রাহুল সাজঘরে। বিপদে ভারত। তৃতীয় উইকেটে জুটি বাঁধলেন বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা। তাদের ব্যাটে ভর করে প্রতিরোধ পায় ভারত। ৬৭ রান যোগ করেন দুই ব্যাটসম্যান।

তাসকিনের জোড়া আঘাত: তাসকিনের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল পয়েন্ট দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন মুরালি বিজয়। কিন্তু টাইমিং করতে ব্যর্থ বিজয়। ডানহাতি এ ওপেনার উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৭ রানে। এক ওভার পর একই বল ও একই শটে আউট ১০ রান করা লোকেশ রাহুল। জোড়া আঘাতে তাসকিন শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দিল।

মুশফিকের একার লড়াই: ব্যাটসম্যানরা একটু দায়িত্বশীল হলে নিশ্চিত ফলোঅন এড়াত বাংলাদেশ। ফলোঅন না করিয়ে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়েছে বিরাট কোহলি। ভারতের করা ৬৮৭ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ করল ৩৮৮ রান। ২৯৯ রানে এগিয়ে থেকে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে। বাংলাদেশের হয়ে একাই লড়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। টাইগার দলপতি ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে ১২৭ রানে থামেন। এছাড়া সাকিব আল হাসান ৮২ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন উমেশ যাদব।

অশ্বিনের রেকর্ড: অশ্বিনের ক্যারাম বলে সুইপ করতে গিয়ে ঝদ্ধিমানের হাতে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিম। এ উইকেট দিয়ে ২৫০ উইকেটের স্বাদ নেন অশ্বিন। সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ২৫০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন ডানহাতি এ স্পিনার।

তাসকিন সাজঘরে: তাইজুলের মত তাসকিন আহমেদও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গ দিলেন। ৩৫ বল খেলে আউট হয়েছেন তাসকিন। রবীন্দ্র জাদেজার বলে স্লিপে আজিঙ্কা রাহানের হাতে ক্যাচ দেন তাসকিন।

মুশফিকের পঞ্চম সেঞ্চুরি: উমেশ যাদবের লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বল। ফ্লিক করলেন মুশফিকুর রহিম। বল চলে গেল ফাইন লেগে। ইশান্ত শর্মা ড্রাইভ দিয়ে বল আটকাতে গেলেন। কিন্তু পারলেন না। দুই-তিন বাউন্সে বল গেল বাউন্ডারিতে। ৯৬ থেকে মুশফিক পৌঁছে গেলেন শতরানে। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি টাইগার দলপতির। জমাট ব্যাটিং ও অসাধারণ ধৈর্যর পরীক্ষা দিয়ে ল্যান্ডমার্কে পৌঁছান মুশফিক। ১৩৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়া মুশফিক সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ২৩৫ বলে।

ফলোঅন: ফলোঅন এড়াতে বাংলাদেশকে ৪৮৮ রান করতে হবে।

তাইজুলও সাজঘরে: ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবের একের পর এক বাউন্সার ডাক করছিলেন তাইজুল ইসলাম। কোনোভাবেই উইকেট দিবেন না সেই পণও করে রেখেছিলেন! ৩৭ বল পর্যন্ত টিকে ছিলেন লোয়ার অর্ডার এ ব্যাটসম্যান। এরপর যাদবের এক বাউন্সারেই শেষ তার প্রতিরোধ। শরীর নামিয়ে বল ছেড়ে দিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ব্যাট নামাতে পারেননি। গ্লাভসের স্পর্শ পেয়ে বল গেল ঝদ্ধিমান সাহার হাতে।

ভুবনেশ্বরের বলে উইকেট হারালেন মিরাজ: চতু্র্থ দিনের প্রথম বল থেকেই ঝড় তুলেছিলেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। প্রথম বলটি কোনোরকমে বলের লাইনে ব্যাট নিতে পেরেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু চতুর্থ বলে পারলেন না। দারুণ এক রিভার্স সুইং, ব্যাট ও প্যাডের মাঝ দিয়ে বল আঘাত করল লেগ স্ট্যাম্পে। গতকাল ৫১ রানে অপরাজিত থাকা মিরাজ কোনো রান যোগ না করেই ফিরলেন সাজঘরে।

লড়াইয়ে বাংলাদেশ: হায়দরাবাদে তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লড়াই করে বাংলাদেশ।  মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ে ভালো অবস্থানে থেকে তৃতীয় দিন খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ।  সুত্র, রাইজিংবিডি