বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

রং-তুলির আঁচড়ে প্রস্তুতি চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার

SONALISOMOY.COM
এপ্রিল ৬, ২০১৭
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক : নববর্ষের এখনও বাকি সাত দিন, তবে মাসখানেক আগেই যেন পয়লা বৈশাখ এসে হাজির হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আঙিনায়। বাঙালীর প্রাণের উৎসবকে বরণ করতে সচল হয়েছে শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়।

চারুকলা অনুষদে শিল্পাচার্য জয়নুলের স্মৃতিধন্য সবুজ-শ্যামল আঙিনায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। দেয়ালে সারি সারি সাজানো রঙিন মাটির সরা। এর কোনোটা নারী, বাঘ, ফুল, পাখি, নদী প্রকৃতি কোনোটা বা আলপনা। লম্বা রশ্মিতে ঝুলানো বিভিন্ন পুতুল, কাগজি ফুল, পাখি ও মাছ। তার কোনোটা আঁকারে ছোট আবার কোনোটা বড়।

১৪২৩ বঙ্গাব্দ বিদায় আর ১৪২৪ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে চারুকলা আঙ্গিনায় চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার এ প্রস্তুতি। চারুকলা অনুষদের ১৮ ও ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তত্ববধায়নে গত ১৯ মার্চ শোভাযাত্রার প্রস্তুতি পর্ব উদ্ধোধন করেন প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুন নবী। আর আগামী ১৩ এপ্রিল, চৈত্রসংক্রান্তির দিন পর্যন্ত চলবে এ প্রস্তুতি পর্ব, এমনটাই জানালেন ১৯ তম ব্যাচরে শিক্ষার্থী নামিরা ফারজানা।

মঙ্গল শোভাযাত্রার সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে চারুকলার এ শিক্ষার্থী বলেন, কাজ প্রায় শেষের পথে। তবে চৈত্রসংক্রান্তির দিন পর্যন্ত চলবে আমাদের কার্যক্রম। এখানে আমাকে মুখোশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে চার ধরনের মুখোশ বানাচ্ছি। বড় বাঘ, ছোট বাঘ, বড় প্যাঁচা ও ছোট প্যাঁচা । এবারে প্রায় দুই হাজার মুখোশ বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত বানানো হয়েছে পাঁচ শতাদিকেরও বেশি আর বিক্রি হয়েছে ২০০ মত। যার আয় দিয়ে আয়োজন করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

১৪২৪ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে ইতোমধ্যে ঠিক করা হয়েছে স্লোগানও। এবারের বাংলা নববর্ষের স্লোগান ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’।

চারুকলা অনুষদের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে জানান, অমঙ্গল তাড়ানো মঙ্গল শোভাযাত্রার লক্ষ্য। বর্তমানে জঙ্গিদের ততপরতা যে কাল থাবাড় দেশের উপর পড়েছে তা থেকে জাতী মুক্তি পাবে এমনটা আমরা আশা করি। এছাড়া আমাদের সমুদ্র বিজয়ের বিষয়টিও তুলি নিয়ে আসছি। সে জন্য আমরা একটা ময়ূরপঙ্খী নাও তৈরি করছি। এছাড়াও এবারে জয়নুল আবেদিন স্যারের আঁকা ঘোড়া, তারপর প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা যে হাতিটি ব্যবহার করেছে সেটাও এবারে থাকছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ব ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রাটি প্রথম যাত্রা করে ১৯৮৯ সালে। প্রথম বছরেই নববর্ষ উৎসব উদ্যাপনকারীদের নজর কেড়ে নেয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা। এর পর থেকে এটা বাংলা বর্ষবরণের অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। সবশেষ গতবছরের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো এই শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।