বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কেউ বাড়ি ভাড়া দিত না, এই বাড়ি ওই বাড়ি থেকেছি’

SONALISOMOY.COM
এপ্রিল ১৬, ২০১৭
news-image
বাসস

 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নবনির্মিত বহুতল ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তৃতায় ওঠে আসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর ও ছোট বোন শেখ রেহানার কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার কথা। বলেন, কেউ বাড়ি ভাড়া দিত না বলে এই বাড়ি, ওই বাড়ি দিন কাটিয়েছেন তাঁরা দুই বোন। তারপরও বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে না থেকে তাঁরা সেটিকে জাদুঘর বানিয়েছেন।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নবনির্মিত বহুতল ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্বোধনে এসেছি। আমরা দুই বোন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি পেয়েছিলাম। কিন্তু অন্য কোনো সম্পত্তি না থাকলেও আমরা কোনো দিন ভাবিনি যে বাড়িটি আমরা ব্যবহার করব। কারণ, এই বাড়ি থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফা দিয়েছেন। এই বাড়ি থেকেই অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশনা যেত। এই বাড়ি থেকেই জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসে রাষ্ট্রপতি হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই ছোট বাড়িটাতেই ছিলেন। এই বাড়িতেই তিনি জীবন দিয়ে গেছেন। সেই বাড়ি আমরা ব্যবহার করব—আমাদের সেই ধরনের আকাঙ্ক্ষা বা লোভ কোনোটাই ছিল না।’.

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নবনির্মিত বহুতল ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বাড়িকে ঘিরে সব সময় আমাদের একটা চিন্তা ছিল যে এমন একটা কিছু করব, যা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। বাংলাদেশে আর কোনো নেতার ছেলেমেয়ে তাদের সম্পত্তি দেয়নি। সবাই ভোগদখল করেছে। কেউ সেখানে বহুতল ভবন করেছে বা ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে লাগিয়েছে। একমাত্র আমরা দুই বোন, আমাদের আর কোনো জায়গা ছিল না। থাকার মতো জায়গাও ছিল না, তারপরও বাড়িটি জাদুঘরের জন্য দিয়ে দিয়েছি।’

১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পরের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই বাড়ি ভাড়া করতে যেতাম, কেউ বাড়ি ভাড়া দিত না। এক রাত ছোট ফুপুর বাড়িতে, একদিন মেজ ফুপুর বাড়িতে—এভাবে থাকতে হতো। এরপরও সিদ্ধান্ত ছিল—আমরা এটাকে স্মৃতি জাদুঘর করব এবং আমরা সেটা করেছি। এটাকে যখন স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করি, তখন অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ, গাজিউল হক, বিচারপতি প্রয়াত কে এম সোবহান, রবিউল হোসাইন, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনসহ আরও অনেককে নিয়ে আমরা একটা কমিটি করি এবং জাদুঘর করার সব ব্যবস্থা নিই। তখনই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। কারণ, ৩২ নম্বরের বাড়িটি ছোট, সেখানে কতটুকুই বা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিধারণ করতে পারব। তখন একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার প্রস্তাব আমিই করেছিলাম, যাতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অন্তত মানুষ জানতে পারে।’