শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

জামায়াত থেকে জঙ্গি সাজ্জাদ

SONALISOMOY.COM
মে ১১, ২০১৭
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেরিওয়ালা বেশে প্রচারণা চালাতো জঙ্গি সাজ্জাদ। জামায়াতের সক্রিয় কর্মী থেকে জামাইয়ের অনুপ্রেরণায় যোগ দেয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবিতে। গোদাগাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে একেবারে নিভৃত এলাকায় টিনের এক জীর্নশীর্ন বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলে এখান থেকেই চালানো হতো জঙ্গি কার্যক্রম।
বুধবার রাত ৩ টা দিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি টিম রাজশাহী জেলা পুলিশের সহায়তায় ওই জঙ্গি আস্তানার সন্ধান করে। পরে পুলিশ দেখে জঙ্গিরা হামলার চেষ্টা করে। পুলিশও হামলা চালায়। এতে সাজ্জাদসহ ৫ জঙ্গি নিহত হয়। গুরুতর আহন হন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীসহ আরো দুই পুলিশ সদস্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে বর্তমানে ওই জঙ্গি আস্তানা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। জঙ্গি আস্তানায় আরো কেউ আছে কি না সেটি যাচাইয়ের জন্য সেখানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। তবে এখনো জঙ্গি আস্তানার ভেতরে পুলিশ প্রবেশ করেনি।
পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, বিকেলের মধ্যে তারা আস্তানায় প্রবেশ করবেন। আস্তানায় বোমা, বিস্ফোরক দ্রব্য অপসারণের কাজ শুরু করবে।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, জঙ্গি আস্তানায় নিহত সাজ্জাদ জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিল। তার জামাই জহুরুলের হাত ধরে সে জেএমবিতে প্রবেশ করে। সাইকেলে করে ফেরিওয়ালা সেজে গোদাগাড়িসহ আশপাশের এলাকায় জঙ্গি প্রচারণা চালাতো সে। গোদাগাড়ি সদর থেকে প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার দূরে নিভৃত এলাকায় সাজ্জাদের বাড়ি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহজেই নজরে আসবেনা এটা ভেবেই গড়ে তোলা হয় জঙ্গি আস্তানা। নিজের পরিবারসহ বিভিন্ন এলাকার জেএমবি সদস্যরা তার বাড়িতেই আশ্রয় নিতো। বর্তমান সময়ে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়া জেএমবি সদস্যরা মাঝেমধ্যে এখানেই এসে আশ্রয় নিতো বলেও জানা যায়।
ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বারি বলেন, সাজ্জাদ জামায়াতের কর্মী ছিল। কিন্তু বছর দু’য়েক আগ থেকে তার চলাফেরা সন্দেহজনক হয়ে উঠে। তার বাড়িতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসতো। কারা তারা এমন প্রশ্নে কখনো জামাইয়ের আত্নীয় আবার কখনো ঢাকা থেকে তার আত্নীয় বলে পরিচয় দিতো।
আব্দুল বারি জানান, সে সাইকেলে করে ফেরি করে জিনিষ বিক্রি করতো। কিন্ত এটার ছদ্মাবরণে সে জঙ্গি কার্যক্রম চালাতো। তার জামাই জহুরুল জেএমবির অনেক বড় নেতা। মূলত তার হাত ধরেই সে জেএমবিতে জড়ায় বলেও জানায় সে। বর্তমানে জহুরুল জেল হাজতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
গোদাগাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিফজুল আলম মুন্সি জানান, সাজ্জাদ সম্পর্কে তথ্য পেয়ে পুলিশ সদও দপ্তরের এলআইসি টিম রাজশাহীতে এসে এ জঙ্গি আস্তানা সনাক্ত করে। তারপর আমরা অভিযান পরিচালনা করি।
তিনি বলেন, সাজ্জাদের বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেছি। এলাকায় জামায়াত করতো বলে লোকজন বলছে। তার জামাই জহুরুল জেএমবির সদস্য। এর বাইরেও কিছু তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা আস্তানাটি ঘিরে রেখেছি। বোমা ডিসপোজাল টিম আসবে। এরপর আমরা ভেতরে প্রবেশ করবো।