মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

মার্চেই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলাদেশ

SONALISOMOY.COM
মার্চ ১৫, ২০১৮
news-image

সোনালী সময় ডেস্ক: জাতিসংঘের নির্ধারিত তিনটি শর্ত পূরণ করে নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চলতি মার্চ মাসেই স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে এই সম্মানের স্থানে নিয়ে যাওয়ার কারিগর হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ২২ মার্চ সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে আগামী ২০ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশব্যাপী এক সপ্তাহের উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর প্রস্তুতিও এগিয়ে চলেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের স্বাক্ষরিত এক আদেশের মাধ্যমে সরকারের সব বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের তালিকায় প্রবেশের প্রক্রিয়া শুরু উপলক্ষে ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ওইদিন থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী আনন্দ র‌্যালি পালন করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে ওইদিন আনন্দ র‌্যালি বের হবে। এছাড়া সপ্তাহব্যাপী সারা দেশে আনন্দ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রকম প্রদর্শনী করবে।

উল্লেখ্য, নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে উত্তরণে তিনটি নির্ণায়কের যেকোন দু’টির উত্তরণ মান অর্জন করলে অথবা মাথাপিছু জিএনআই উত্তরণ মানের দ্বিগুণ হলেই এই স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। তবে এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নির্ধারিত তিনটি শর্তই বাংলাদেশ অর্জন করেছে। জাতিসংঘের নির্ধারিত মান ২০১৮ সালে মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার থাকার কথা বলা হলেও ‘জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)-র দেওয়া হিসাব অনুসারে এই সূচকে বাংলাদেশের অর্জন এক হাজার ২৭২ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-’র হিসেবে যা এক হাজার ২৭১ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় শর্তে মানবসম্পদ বিষয়ক সূচকে জাতিসংঘের নির্ধারিত মান ৬৬ বা তার বেশি হওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশর অর্জন সিডিপির হিসেবে ৭২ দশমিক আট ভাগ এবং বিবিএস- এর হিসেবে ৭২ দশমিক নয় ভাগ। জাতিসংঘের নির্ধারিত তৃতীয় শর্তে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের মান ৩২ বা তার কম নির্ধারিত থাকলেও সিডিপির হিসেবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন ২৫ এবং বিবিএস- এর হিসেবে ২৪ দশমিক আট ভাগ।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘে নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়। সেসময় একই শ্রেণির সদস্য দেশ ২৫টি থাকলেও বর্তমানে বিশ্বে নিম্ন আয়ের দেশ রয়েছে ৪৭টি। এর মধ্যে বাতসোয়ানা ১৯৯৪ সালে, কেপভার্দ ২০০৭ সালে, মালদ্বীপ ২০১১ সালে, সামোয়া ২০১৪ সালে ও ইকুয়েটোরিয়াল গিনি ২০১৭ সালে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশ থেকে উত্তরণের সক্ষমতা অর্জন করে। ২০১৮ সালে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের সুপারিশ পাওয়া তিনটি দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই জাতিসংঘের নির্ধারিত লক্ষমাত্রা (নির্ণায়ক) তিনটিতেই সাফল্য অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্ররিশ্রম, মেধা-মনন ও দেশ গড়ায় দৃঢ় প্রত্যয়ের ফলশ্রুতিতে আজ বাংলাদেশ সাফল্যের নতুন মাত্রায় উন্নীত হতে যাচ্ছে। যা গোটা জাতির জন্য গর্বের।