মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ: ফের গৃহবন্দী হবেন সু চি!

SONALISOMOY.COM
মার্চ ২১, ২০১৮
news-image

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট থিন কিউ এর হঠাৎ পদত্যাগের পর মিয়ানমারের পার্লামেন্টে বড় অংশ সেনা প্রশাসকের দখলে চলে গেছে। আর তাতে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে নোবেলজয়ী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র ফের গৃহবন্দীত্ব নিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগে আবারও গৃহবন্দী হতে পারেন সু চি।

সেনা শাসনের দিকে এগোতে থাকা মিয়ানমারের সদ্য পদত্যাগ করা প্রেসিডেন্ট থিন কিউ ছিলেন সু চি’র ডানহাত।

সংবাদ সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সু চি-র ডানহাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া প্রেসিডেন্ট থিন কিউ। আগামী সাত দিনের মধ্যে তার স্থানে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্বে আসবেন।

এমনিতেই রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নিপীড়ন-নিধনে সু চি’র ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, তার উপর প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রীকে নিঃসন্দেহে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ এরই মধ্যে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলেছে। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে টানা সেনা শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে সু চি’র দল। তবে সেখানকার পার্লামেন্টে বড় অংশ সেনা প্রশাসকের দখলে।

এর আগে বুধবার প্রেসিডেন্ট থিন কিউ তাঁর নিজ দফতর থেকে এ মর্মে ঘোষণা দেন যে, তিনি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে ঘোষণায় পদত্যাগের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি স্বাস্থ্যগত সংকটের কারণে রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে ৭১ বছর বয়সী এই নেতার সমস্যা হচ্ছিল। আর তাই হয়তো তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন।

২০১৬ সালে কয়েক দশকের সামরিক শাসনের অবসানের পর নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি হন থিন কিউ। তবে প্রকৃতপক্ষে অনেকটা প্রতীকী রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। মূল ক্ষমতা ছিল অং সান সু চি’র হাতে। থিন কিউ সু চি’র ছেলেবেলার বন্ধু। দীর্ঘদিন সু চি’র গাড়িচালক ও রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে ১৯৮৮-র গণআন্দোলনের সময় সু চি সবার নজর কাড়েন এবং ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সাধারণ সম্পাদক হন; সেসময় সদ্যগঠিত দলটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সামরিক জান্তার বিরোধী অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে এনএলডি সংসদের ৮১% আসন পেলেও সেনাবাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে হৈ চৈ ফেলে দেয়। এদিকে নির্বাচনের আগে থেকেই সু চিকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ২১ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই তাকে গৃহবন্দী অবস্থায় কাটাতে হয়; ততদিনে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রখ্যাত রাজবন্দীদের একজন হয়ে উঠেছেন।