শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বাগমারায় সরকারী খালের অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করলো প্রশাসন

SONALISOMOY.COM
জুন ২১, ২০১৮
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় সরকারী খালে অবৈধ ভাবে পাকা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ চেষ্টার অভিযোগ শিরোনামে গত একাধিকবার স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকা ও অনলাইনে নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজে উপস্থিত থেকে বেশ কিছু শ্রমিক নিয়োগ করে ইট সিমেন্টের তৈরি বাঁধটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন।

জানা গেছে, অবৈধ ওই বাঁধটি নির্মিত হওয়ায় কয়েকটি বিলের ধান সহ অনেক ফসল হুমকির মুখে পড়ার আশংকায় এলাকাবাসীর সামনে ইউপি সদস্য প্রভাবশালী রফিকুল ইসলামকে বাঁধটি ভেঙ্গে ফেলার আদেশ প্রদান করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) । পরে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম সহকারী কমিশনার(ভূমি)র নিকট একটি লিখিত মুছলেকা দিলেও তা ভাঙ্গেনি। বিষয়টি অতিবাহিত হওয়ার পর ইউপি সদস্য রফিকুল নিজ উদ্যোগে নির্মিত বাঁধ উচ্ছেদে নামেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এ ঘটনায় স্থানীয় বিল এলাকার জনগন ও কৃষকরা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র এমন সাহসি উদ্যোগের প্রশংসা করে তাকে সাদুবাদ জানান।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিল এবং কোলার বিলে চারপাশের লোকজন যৌথভাবে শেয়ারের ভিত্তিতে কৃষি জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি মাছ চাষ করে আসছে। বিলটিতে বন্যার সময় বন্যা আসলেও তাতে কৃষকের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। কারণ ওই দুটি বিল সহ পাশের গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের কইচা বিল, দাইমা বিল এবং হড়ংবিলের পানি কোলার বিলের মাঝখান থেকে চন্ডিপুর গ্রামের ব্রীজের নিচ দিয়ে ২০-২৫ ফিট প্রশস্থ একটি হাতিনার দাঁড়া (পানি নামার জায়গা) আছে যা সরকারী খাস। দাঁড়াটি বিলের মাঝ দিয়ে হাট-মাধনগর ব্রীজের কাছে কম্পো নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এতে করে বিল দুটিতে পানির সমন্বয় রক্ষা হয়। সেই সাথে ওই খাঁল দিয়েই কয়েকটি বিলের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ফলে বিনা ঝামেলায় কৃষকরা ধান সহ অন্যান্য ফসলের আবাদ করতে পারছে।

বর্তমানে বিলটিকে ঘিরে নরদাশ ইউনিয়নের প্রভাবশালী ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম তার বাহিনী নিয়ে জোর পূর্বক পরিকল্পিত ভাবে শত শত কৃষকের ক্ষতি করে চন্ডিপুর ব্রীজের কাছে হাতিনার দাঁড়ার উপরে পাকাপোক্ত ভাবে একটি আরসিসি বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
বাঁধটি নির্মাণ করায় দুই ইউনিয়নের ৪-৫ টি বিলের ধান চাষ ব্যাহত হবে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসীর। বাঁধটি নির্মানের কারনে অপুরণীয় ক্ষতির মুখে পড়বে কোলার বিল সহ কয়েকটি বিলের হাজার হাজার কৃষক। বাগমারা উপজেলা কৃষি নির্ভর হওয়ায় কৃষকের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে কারনে দ্রুত নির্মিত বাঁধটি ভেঙ্গে ফেলার দাবী জানিয়ে আসছিলেন ওই এলাকার কৃষকরা ।
কৃষকের এমন দাবীর বিষয়ে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন এই বাঁধ অপসারনের উদ্যোগে নেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারার সহকারি কমিশনার(ভুমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বাঁধটি অপসারন হওয়ায় এলাকার শত শত কৃষক উপকৃত হবে। যেহেতু তারা (দখলকারীরা) সরকারি আদেশ অমান্য করেছেন। তাই বাঁধটি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সেই সাথে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য সহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।