শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

আ’লীগের প্রথম ফোনটা অলি-ই পেলেন

SONALISOMOY.COM
জুলাই ২৯, ২০১৮
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব কমানোর ‘সরকারি’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম ফোন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের। গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ফোন দেন অলি আহমদকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জোট সম্প্রসারণ, জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে রাজি করানো এবং ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগের এই তৎপরতা।

এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কার্যালয়ে গিয়ে দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রমকে ফোন দেন ওবায়দুল কাদের। কিন্তু কৌশলগত কারণে ওই ফোনালাপের বিষয়টি উভয়পক্ষ থেকেই গোপন রাখা হয়।

ফোনালাপের ৮ দিন পর সারাবাংলার কাছে বিষয়টি স্বীকার করেন কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম। তবে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কী কী বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি তিনি।

তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার চান্দিনায় আমার ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না কি নির্দেশ দিয়েছেন, ভবিষ্যতে যেন আমার ওপর এ ধরনের হামলা আর না হয়— সে কথাটি বলার জন্যই তিনি (ওবাদুল কাদের) আমাকে ফোন দিয়েছিলেন।’

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, হামলার এক সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সমবেদনা জানানোর জন্যই কেবল অলি আহমদকে ফোন দেননি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কারণ, গত বছর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ দিতে গিয়ে চট্টগ্রামে হামলার শিকার হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তখন তাকে সমবেদনা জানাতে ফোন দেননি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সুতরাং বিএনপি জোটের শীর্ষ নেতা অলি আহমদকে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের ফোনে সমঝোতার ইঙ্গিত আছে।

এ প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, ‘এই ফোনে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার ইঙ্গিত থাকে, সেটাকে আমি স্বাগত জানাব। চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার পক্ষে এলডিপির অবস্থান।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধান দুই জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলের ব্যাপারে আগ্রহ আছে আওয়ামী লীগের। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এলডিপি) নির্বাচনকালীন সরকারে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল তারা।

এবারও নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে অলি আহমদকে এরই মধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেদিক থেকে ওবায়দুল কাদেরের এই ফোন কেবল মাত্র সৌজন্যতা দেখানো বা সমবেদনা জ্ঞাপনে সীমাবদ্ধ থাকছে না বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

এ প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনের বছর যা কিছু ঘটবে, সব কিছুর মধ্যেই কোনো না কোনো বার্তা থাকবে। রাজনীতি থেকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া সৌজন্যবোধের চর্চাটাও হতে পারে সেই বার্তার-ই অংশ।’