বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে গৃহবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন

SONALISOMOY.COM
সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৮
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: যৌতুকের টাকা না পেয়ে শিশু সন্তানের সামনে এক গৃহবধূকে রাতভর ঘরে আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গৃহবধূ মাহমুদা পারভীনকে (২৬) তাঁর ভাই উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা গ্রামে।

উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কসবা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন,সাত বছর আগে তাঁর ছোটবোন মাহমুদা পারভীনের সঙ্গে একই উপজেলার রামরামা গ্রামের আইনাল হকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুক হিসাবে দেড় লাখ টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল ও নগদ টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাঁদের সংসারে দুটি সন্তান হয়। সংসারে কোনো বিরোধ না থাকলে ঈদুল আযহার আগ থেকে আইনুল হক ব্যবসার জন্য তাঁর বোনের কাছ থেকে আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তবে তাঁরা যৌতুকের দুই লাখ টাকা দিতে অপারগতা জানান। এতে আইনুল হক ক্ষুব্ধ হয়ে ঈদের বাড়ি স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেন। ঈদের পর উভয়ের মধ্যে সমঝোতার পর বোনের সুখের জন্য কিছু টাকা দিতে সম্মতি জানান এবং সপ্তাহ খানেক আগে মাহমুদা পারভীনকে স্বামীর বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

মাহমুদা পারভীন বলেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে স্বামী আইনুল হক আবারও যৌতুকের জন্য তাঁকে চাপ দেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করে জানাবেন বলে জানালে তিনি ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায়ে শিশু সন্তানের সামনে তাঁকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে চেতনা হারিয়ে ফেলেন।
গতকাল শনিবার সকালে চেতনা ফিরে পেলে আবারো পেটানো হয়। শরীরে বিভিন্ন স্থান ছাড়াও গোপনাঙ্গে আঘাত করা হয়। আজকের মধ্যে তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। পরে তাঁকে ঘরে তালাবদ্ধ করে স্বামী বাইরে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিবেশিরা মাহমুদা পারভীনের বাবার বাড়িতে মুঠোফোনের মাধ্যমে খবর দেন। খবর পেয়ে দুপুরে বড়ভাই মোহাম্মদ আলী তালাবদ্ধ ঘর থেকে আহত বোনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে নির্যাতনের চিহ্ন দেখানো ও বর্ণনা দেন গৃহবধূ। বিকেল তিনটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

গৃহবধূ বলেন, নির্যাতনের কারণে কয়েক দফা চেতনা হারিয়ে ফেলেছেন। নির্যাতনের সময় তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে মাহিম কান্নাকান্নি করলেও রেহাই দেওয়া হয়নি। তার সামনেই পেটানো হয়েছে। গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাত-পা ফুলে গেছে। যন্ত্রনায় কারতাতে দেখা যায়, ১৫ মাসের শিশুকেও কাঁদে দেখা যায়।

স্ত্রীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করলেও যৌতুক দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্ত্রীকে মারপিট করা হয়েছে।

বাগমারা থানার পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। থানায় এখনো মামলা করতে কেউ আসেননি, আসলে মামলা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।