বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় গৌরবময় ইতিহাস সম্বলিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কমপ্লেক্স

SONALISOMOY.COM
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গৌরবময় ইতিহাসসহ বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজশাহীর বাগমারায় নির্মাণ করা হয়েছে দেশের প্রথম ডিজিটাল কার্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কমপ্লেক্স।’ মূলত নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য এ উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।

এছাড়াও বাগমারা উপজেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সার্বিক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন এলাকার তথ্য অল্প সময়ের মধ্যে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে এই কমপ্লেক্সটির কার্যক্রমের মাধ্যমে। আর এ জন্যই ছয় তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কমপ্লেক্সটি তৈরি করা হয়েছে। দেশে এটিই প্রথম আওয়ামীলীগের ডিজিটাল কার্যালয়। এর আগে এ ধরণের কোন কার্যালয় দেশে স্থাপিত হয়নি।

উপজেলার চানপাড়ায় এ কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর থেকেই এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দর্শনার্থীদের আগমন ঘটছে । তরুণ ও নতুন প্রজন্মরা জানতে পারছে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সংসদ সদস্যের উদ্যোগে এ ভবনটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভবানীগঞ্জ তাহেরপুর সড়কের পাশে চানপাড়ায় ১৩ শতক জমি কিনে ছয় তলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এই ভবন নির্মাণের আগে ওই জমি জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে রেজিষ্ট্রি করে দেন। তার পরেই শুরু হয় নির্মাণ কাজ। সাংসদের সম্পূর্ন নিজস্ব খরচে নির্মাণ করা হয়েছে ব্যয়বহুল ও অত্যাধুনিক এই কমপ্লেক্স।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি সম্মান রেখে আওয়ামীলীগের ডিজিটাল এই কার্যালয়টির নাম রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কমপ্লেক্স। এজন্য বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট্র থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। এখানে রয়েছে বহুবিধ কার্যক্রমের ব্যবস্থা। ছয় তলা এই ভবনটির প ম তলায় রয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কার্যালয়। একই সাথে রয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পৃথক পৃথক দপ্তর। শুধু তাই-ই নয়, কমপ্লেক্সটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে সালেহা-ইমারত মিলানায়তন। দক্ষ জনশক্তি তৈরী করতে ভবনটির একটি তলায় স্থাপন করা হবে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট। এছাড়া তিন তলায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গৌরবময় ইতিহাসসহ বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর । সেখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিময় ভাস্কার্য এবং দূর্লভ সব ছবি। আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে এবং উভয়ের মধ্যে সেতু বন্ধন সৃষ্টি করতে কমপ্লেক্সটি বাগমারার ভবানীগঞ্জে নির্মিত হয়েছে।

এলাকার জনগণ তাদের সমস্যা যাতে সংসদ সদস্যকে কিংবা দলীয় প্রধানদের জানাতে পারেন সে জন্য এখানে একটি হেল্প ডেস্কেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভবনটির বিভিন্ন তলায় দ্রুত ওঠা-নামার জন্য রয়েছে লিফটের ব্যবস্থা। এখানে দিনে-রাতে পর্যায়ক্রমে ৩/৪ জন দায়িত্বে রয়েছেন। তারাই এর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। এর ব্যয়ভারও বহন করেন সাংসদ নিজেই। তবে ভবনটি উদ্বোধনের পর থেকে এলাকার জনগণ যে কোন সমস্যার কথা তাদের জানালে তাৎক্ষণিক তা সমাধানের জন্যে সংশ্লিষ্ট শাখায় তা প্রেরণ করা হয়ে থাকে।

২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সটির উদ্বোধন করেন। ইতিমধ্যেই বাগমারায় এসে কমপ্লেক্সটির কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এ্যাড.সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিম, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সাইফুজ্জামাসন শেখর, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, বর্তমান রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চেীধরী, এমপি মেরাজউদ্দিন মোল্লাহ, ইস্রাফিল আলম, শাহরিয়া আলম, আব্দুল ওয়াদুদ দারা, অনেক মন্ত্রী ও এমপি এবং বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা।

ভবনটি উদ্বোধনের পর এখানে থেকে প্রতি সপ্তাহের একটি তালিকা তৈরী করে তা স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে প্রেরণ করা হয়। এখানে সরকারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কর্মকান্ড এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য বোর্ডে লিপিবদ্ধ থাকে। এমনকি এলাকার কি কি কাজ করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে কি কি কাজ করা হবে তারও একটি তালিকা সাঁটানো থাকে। এতে করে উপজেলাবাসীর কাছে স্পষ্ট হয় কোন উন্নয়নমূলক কাজটি এবার বাস্তবায়ন হচ্ছে, কোনটি আগামী বছর কিংবা তার পরে হবে সেটাও জানতে পারবেন এলাকার লোকজন। তাছাড়াও ভবনটির অন্যান্য তলায় হোটেল-রেষ্টুরেন্ট সহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বর্তমানে এই কমপ্লেক্সের বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করে চলেছেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষক শিক্ষার্থী।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি এনামুল হক বলেন, আমি আজীবন জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। প্রত্যন্ত এলাকার আপামর জনসাধারণ স্বাধীনতার পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী প্রজন্ম যেন বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে সে লক্ষ্যেই এটি তৈরি করা হয়।