বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

২৫ বছর আগের উৎসবে পরিণত
দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থলে মানুষের ঢল

SONALISOMOY.COM
অক্টোবর ১৯, ২০১৮
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: বারো মাসে তের পর্বণ কথাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য প্রচলিত থাকলেও শারদীয়া বা দূর্গা পূজাই বেশি আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে পালন করা হয়। সে সময় দূর্গা পূজা আসলে তাহেরপুরে ভরে যেতো সার্কাস,যাত্রা,পালাগান, পুতুলনাচসহ বিভিন্ন রকমের মনোরজন।

সেই সাথে পূজামণ্ডপে ঢাকের বোল, মন্ত্র ও চণ্ডীপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে কেঁপে ওঠতো। এবং দূর্গাপূজায় বস্ত্র, নৈবেদ্য,পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা অর্চনা ও পুষ্পাঞ্জলি দেন হিন্দু ধর্মালম্বীরা।

প্রায় ২৫বছর ধরে তাহেরপুরের দূর্গা পূজায় তেমন একটা সার্কাস, যাত্রা, পালাগান, পুতুলনাচসহ লোকজনের সমাগম ঘটতোই না।

কিন্তু এবার বাগমারা আসনের এমপি এনামুল হকের প্রচেষ্টায় উন্মোচন করা হয় তাহেরপুর রাজবাড়ীতে অবস্থিত রাজা কংস নারায়ন রায় বাহাদুরের নির্মিত শ্রী শ্রী দূর্গা মাতা মন্দিরে অষ্টধাতুর তৈরি প্রতীমা। আর এই প্রতীমা এক নজর দেখার দেখার জন্য রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ভক্তরা তাহেরপুরে। এর সাথে যোগ দিয়েছেন জেলার বিভিন্ন সরকারী কর্মকতা-কর্মচারিরাও।

এলাকাবাসি সুত্রে জানাগেছে, এবার তাহেরপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থলে অষ্টমী ও নবমীতে মানুষের ঢল নামছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রথম শুরু হয় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর রাজবাড়ির দূর্গা মাতা মন্দিরে।

গত ৫৩৭ বছর আগে সম্রাট আকবরের শাসনামলে রাজা কংস নারায়ণ সে সময় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু করেন দুর্গাপূজা। সেই প্রতিমা ছিল সোনার তৈরি। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে তাই গর্ববোধ করেন তাহেরপুরের অধিবাসীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা স্বীকৃত পায়। তাই দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে ইতিহাসখ্যাত তাহেরপুর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যভূমির স্বীকৃতি আজও পায়নি।

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক নেতারা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাহেরপুরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীদের মিলনামেলায় পরিণত হতো স্থানটিতে।

এদিকে,এবার শারদীয় দুর্গাপুজা জাঁকজমক ভাবে পালন করা হচ্ছে। তাছাড়া পূজা মন্ডপে ব্যাপক আলোক সজ্জা ও বিভিন্ন ডিজাইনে সাজানো হয়েছে। এছাড়া মন্ডপে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে তাহেরপুরে ২৫ বছর আগের শারদীয় দুর্গাপুজায় পরিণত হয়েছে।