শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

নিখুঁত সম্পর্ক গড়ে তুলতে যা প্রয়োজন

SONALISOMOY.COM
অক্টোবর ২৪, ২০১৮
news-image

লাইফ-স্টাইল ডেস্ক : প্রত্যেকেই দীর্ঘস্থায়ী, সুখী ও সফল দাম্পত্য জীবন প্রত্যাশা করেন। এই দীর্ঘস্থায়ী, সুখী ও সফল সম্পর্কে জন্য খানিকটা পরিশ্রম এবং অনেক ধর্যের প্রয়োজন হয়। সম্পর্কের শুরুতে আমাদের ভালবাসা রোমান্টিক এবং প্রত্যাশায় পূর্ণ থাকে। তখন মনে হয় আমাদের সুখ এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া শেষ পর্যন্ত একই রকম থাকবে। কিন্তু কিছু সময় পর অর্থাৎ সম্পর্কের পরবর্তী ধাপে যখন বুঝতে পারবেন, যে মানুষকে আপনি প্রত্যাশা বা খুঁজে ছিলেন মনে মনে এই মানুষ সেই সব সকল গুনাবলি সমৃদ্ধ নয় এবং তার প্রতি আপনার অনুভূতি দিনে দিনে বিবর্ণ হচ্ছে। ভুল বুঝা, অবিশ্বাস, ঈর্ষা এবং পরিশেষে ঝগড়ার মত অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। উভয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং ধর্যশীল না হলে এবং ভালোবাসার উপলব্ধি বিকৃত হলে এই সব ব্যাপার ঘটতে পারে। তাই কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে। যা আপনাদের সাহায্য করবে একটি নিখুঁত এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে।

স্পষ্টভাবে মতবিনিময় করতে হবে
প্রত্যেক সময় আপনার মনের কথা স্পষ্টভাবে বলতে ভুলবেন না । আপনারা একে অপরকে ভালবাসেন এবং আপনাদের দুজনের মধ্যে কোনো বিষয় গোপন করা উচিত নয়। সবার সব কিছুতেই কিছু কিছু মৌলিক নিয়ম বা বিষয় থাকে যে গুলি একে অপরের মধ্যে গোপন করা উচিত না। কখনও কখনও আমরা আমাদের আশা, চিন্তা ও ইচ্ছা প্রকাশ যা আমরা আমাদের সঙ্গিকে বলতে চাই কিন্তু তা সে দুর্ভাগ্যবশত অনুমান করতে পারেননা। সবায় সব সময় মন কথা বুঝতে বা পড়তে সক্ষম হয় না। তাই কোনো ইঙ্গিত ছাড়ায় স্বতন্ত্র্র ভাবে একে অপরের সবকিছু স্পষ্টভাবে বলা প্রয়োজন। এই ভাবে আপনি ও আপনার সঙ্গীকে সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন অবাঞ্ছিত যন্ত্রণাগুলি এড়িয়ে যেতে হবে।

একে অপরকে ক্ষমা করা শিখতে হবে : প্রিয় মানুষের সাথে ভবিষ্যৎ কাটানোর এবং সম্পর্ক টিকে রাখার পরিকল্পনা থাকলে আপনাদের অবশ্যই পরস্পরকে ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথা আপনাদের সুখটি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হবে না। কোন নিখুঁত মানুষ এই বিশ্বে হয় না এবং সবাই মাঝে মাঝে কিছু ভুল করে। নিশ্চয় আপনার সহজেই আপনার সঙ্গীর খারাপ কাজ ভুলে যাওয়া উচিত কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার খারাপ বিষয় সহজে ভূলে যাবেন। তবে হ্যা, যে কোন রাগ বা বিদ্বেষ তিন দিন বা এক সপ্তাহের বেশি রাখা ঠিক হবে না। পরর্বতিতে আপনার সঙ্গিকে তার ভুল আচরণগুলি গ্রহণ করুন এবং তাকে ক্ষমা করার চেষ্টা করুন । যেগুলি আপনি গ্রহন করতে পারছেন না সে গুলি তাকে সংষোধন করার সময় দিন এবং তাকে কাছে রাখার চেষ্টা করুন। এতে আপনাদের সম্পর্ক দিন দিন অনেক ভালো হবে এবং ভালোবাসার সম্পূর্ণ অনুভূতিগুলি আপনারা ঘনিষ্ঠভাবে উপভোগ করবেন।

সবারই খারাপলাগা কিছু মুহুর্ত বা সময় আছে : এটা গোপন নয় সবায় জানে যে, সব মানুষেরই কোন কোন মুহুর্তে কোন কিছুই ভালোলাগে না। আবার সপ্তাহের একটি দিন বা সময় কঠিন ভাবে আসতে পারে যখন তারা অল্পতেই বিষণ্ণ বা এমনকি রাগান্বিতও হয়। সুতরাং আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে কিছু বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে সেই সময়কে প্রতিরোধ করার জন্য। আপনি স্নায়বিকভাবে দেখুন এবং তার এমনটির কারন খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। এতে দ্রুত বিক্ষুব্ধ ভাবে তাকে পরবর্তিতে আর পাবেন না। সম্ভবত আপনার সঙ্গীর এমন মানসিক অবস্থা তার পেশা বা বন্ধুদের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন সমস্যার কারনে সৃষ্টি হতে পারে যার প্রভাব আপনাদের সম্পর্কের উপরে পড়ছে। আবার কখনও কখনও আমরা একটি খারাপ মেজাজে ঘুম থেকে উঠি সেই মুহূর্তে সবায়কে এবং সবকিছু আমাদের বিরক্ত লাগে। আপনি যখন লক্ষ্য করবেন যে আপনার প্রিয়মানুষ বিরক্তবোধ করছে, তাহলে আপনি তাকে কিছু সময়ের জন্য একান্ত ভাবে তার মত করে থাকতে দিন, তার মানে এই নয় যে আপনি তাকে দুরে ঠেলে দিবেন। এটা ভাল হবে ব্যক্তিগতভাবে আপনি সেই মুহুর্তে তার সাথে কোন বিষয়ে তর্কে যাবেন না । কিছু ক্ষণ পরে দেখবেন সব কিছু আগের মতই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

আপনার সঙ্গীর প্রতি সদয় হতে হবে : সব মানুষ উদারতা পছন্দ করেন এবং উদার ব্যাক্তির অত্যন্ত প্রশংসা করেন। নিঃসন্দেহে এ ধরনের উদার দয়ালু ব্যক্তিরা অন্যদের জন্য বেশি আকর্ষণীয় এবং সুন্দর ও আনন্দদায়ক। দয়া ও মহানুভবতা অর্জন করা প্রয়োজন বা অবশ্যক পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকার জন্য। আজকাল আমাদের জীবন খুবই ব্যস্ত এবং আমরা প্রায়ই উদারতার শক্তি ভুলে যাই। বাস্তবিক এই যে উদারতার মনোভাব প্রদর্শন করার ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় প্রদর্শন করতে পারিনা। আমার মতে, উদারতা কোন একটি সম্পর্কের উন্নতি এবং সঙ্গীর সঙ্গে একটি বিষয়ে আপোসে পৌঁছানোর সহজতম উপায়। সংকীর্ণতা পরিহার করে উদার ও মহানুভব হতে শুরু করুন দেরি করবেন না।

প্রতিশ্রুতির মূল্য দিতে হবে : সত্যিকারের ভালবাসা অঙ্গীকার ছাড়া হয়না । আপনি আপনার ভালবাসার বর্ণনা শত শত শব্দের ব্যবহারে করতে পারেন। আপনি যখন আপনার মানুষের সাথে কোন বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তিনি দেখেন আপনি কতটা তার সাথে আন্তরিক এবং তিনি কতটা মূল্যবান আপনার কাছে। সুতরাং, প্রতিটি দম্পতিকে তাদের সম্পর্কে প্রতিশ্রুতির গুরুত্ব বুঝতে হবে। যাই হোক না কেন আপনার সঙ্গীর উপর বিস্বাস রাখতে হবে নির্ভর করতে হবে যা একটি দীর্ঘ দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের চাবিকাঠি।

একসাথে হাস্যময়তা সুসম্পর্কের জন্য সহায়ক : হাসি আমাদের স্বাস্থ্য এবং আমাদের মেজাজ জন্য অতিশয় উপকারী। দুজন মানুষ যারা একে অপরকে ভালোবাসে তাদের একসাথে হাস্যময়তা থেকে বেশী বিস্ময়কর কিছু আছে কি? আমি বিশ্বাস করি যে সব দম্পতিরা কখনো-সখনো রুক্ষতার মধ্য থাকে। আপনি আপনার প্রণয়ীর সঙ্গে তর্ক করলনে আবার যখনই একসঙ্গে হাস্যময়তায় মগ্ন হলেন এটা আপনাদের সুসম্পর্কের জন্য একটি চমত্কার সমাধান । এতে রাগ অভিমানের উপশম হবে এবং আপনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন।

আপনার প্রণয়ীর সঙ্গে সুখী জীবন যাপন অনেক কঠিন এবং ধৈর্যে ফলাফল। অধিকাংশের মতে এই মৌলিক নিয়ম অনুসরণ করে দাম্পত্য জীবনে একসঙ্গে উভয়েই সুখী হতে পারেন। আপনি সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে সফল না হলে, শক্তিশালী সুখি সম্পর্কের জন্য এই নিয়মগুলি আপনারা মেনে চলুন। আমার বিশ্বাস আপনি এবং আপনার সঙ্গী অবশ্যই একটি নিখুঁত এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।