শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীকে পাশবিক নির্যাতন

SONALISOMOY.COM
নভেম্বর ৭, ২০১৮
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রীকে ঘরে আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাগনদী ফাঁড়ি পুলিশের সহায়তায় নির্যাতিতা কারিমা খাতুনকে (২৫) উদ্ধার করে তার মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বাগমারা উপজেলার ভাগনদী সরদারপাড়া গ্রামে।

কারিমার ভাই, আশরাফুল ইসলাম জানায়, গত ২৯ অক্টোবর আমার বোন একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন । মূলত কন্যা সন্তান প্রসব করার পর থেকেই চলতে থাকে শারিরীক নির্যাতন। ঘটনার দিন ২ নভেম্বর কারিমাকে বাঁশের লাঠি দ্বারা বেধড়ক পেটানো হয়। খবর পেয়ে ঐ গৃহবধুর মা ফাহিমা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মেয়েকে উদ্ধার করতে ব্যার্থ হন। উপায় না পেয়ে ফাহিমা বেগম ভাগনদী ফাঁড়ি পুলিশের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন । অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভাগনদী ফাঁড়ি পুলিশ কারিমাকে উদ্ধার করে । আহত গৃহবধূকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ফাহিমা বেগম বলেন, দেড় বছর আগে ভাগনদীর সরদারপাড়া গ্রামের রিপন প্রাং এর সাথে আমার মেয়ে কারিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানতে পারি পূর্বে সে আরও ৪টি বিয়ে করেছিল এবং তাদের তালাক ও দিয়েছে। সে এ খবর গোপন করে আমার মেয়েকে বিয়ে করে, বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে বিভিন্ন অযুহাতে শারিরীক নির্যাতন করতো। কন্যা সন্তান প্রসবের পর মেয়েকে আনতে গেলে রিপন ফাহিমা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে,মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

কারিমা জানায়, রিপন আগে ৪টি বিয়ে করেছিল এ তথ্য গোপন করে আমাকে বিয়ে করে । বিয়ের পরও তার তালাক দেওয়া স্ত্রীদের সাথে সে যোগাযোগ রেখেছে। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলেই মারপিট করতো। আমার বাবা নেই । মা গরিব অসহায় ।সবকিছু ভেবে নিরবে নির্যাতন সহ্য করে আসছিলাম । কিন্তু আমার কন্যা সন্তান হওয়ায় সে আমাকে শারিরীক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করে।

ঐ গৃহবধূ আরও জানায়,ঘটনার দিন বাঁশের লাঠি দিয়ে ঘাড়ে,পিঠে ও শরীরে বিভিন্ন স্থান ছাড়াও গোপনাঙ্গে আঘাত করে। পরের দিন শনিবার তার মা তাকে উদ্ধার করে হসপিটালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে কারিমার স্বামী রিপনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

ভাগনদী পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মিজানুর রহমান বলেন,কারিমাকে আটকে রাখা হয়েছিল । তার মায়ের অভিযোগের পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করি। স্বমী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে বলে তিনি জানান। কারিমার ভাই আশরাফুল জানায়, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্ততি চলছে।