মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

বাগমারায় বিধবা ভাতার টাকা না দেয়ায় মাকে হত্যা

SONALISOMOY.COM
আগস্ট ৫, ২০১৯
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: বিধবা ভাতার টাকা দিয়ে চলে চাম্পা বেওয়া সংসার। কয়েক বছর আগে মারা গেছে স্বামী ছয়ফুল্লাহ। স্বামীর মৃত্যু পর অনেক কষ্টে চলতে থাকে চাম্পার সংসার। ছেলেরা থাকলেও দেখার কেউ নেই। চাম্পা বেওয়ার স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায় জীবন-যাপন করতে থাকেন। ভরণ-পোষণ না পেয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতে থাকে তার।

এই অবস্থা দেখে ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আজাহারুল হক মানবিক কারণে তাকে একটি বিধবা ভাতার কার্ড করে দেন। সেই ভাতার টাকায় চলে তার সংসার।

সেই বিধবা ভাতার টাকায় যেন কাল হয়ে দাঁড়ালো চাম্পার জীবনে। বিধবা ভাতার টাকা জন্যই নিজ ছেলের হাতে মরতে হলো তাকে। এমন হৃদয় বিদারক ঘটানাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ফুলপুর গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত রোববার তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অধীনে হাটগাঙ্গোপাড়া জনতা ব্যাংক শাখা থেকে ওই কার্ডের মাধ্যমে বিধবাভাতার তিন হাজার টাকা উত্তোলন করেন। টাকা নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর থেকেই বিধবার বখাটে ছেলে আবুল কাসেম (৫০) নেশা করার জন্য মায়ের কাছে ওই টাকা দাবি করতে থাকে। কিন্তু নেশা করার জন্য টাকা দিয়ে রাজি না হওয়ায় রাত ১০ টার দিকে নেশাখোর বখাটে ছেলে আবুল কাসেম তার গর্ভধারীনী বিধবা মা চাম্পা বেওয়াকে পিঠে লাথি মারে। লাথির মারার সাথে সাথে চাম্পা বেওয়া ঘরের দেয়ালের সাথে গিয়ে ধাক্কা লাগে এবং সেখানে পড়ে মারা যায়। পরে বখাটে ছেলে ছয়ফুল্লাহ কাপড় দিয়ে মাকে ডেকে রাখে। বিষয়টি স্থানীয়রা জানার পর ছয়ফুল্লাহকে বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। এখন সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পলিশে খবর দিলে সোমবার দুপুরের দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব, বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে পুলিশ বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়।

এদিকে সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আজাহারুল হক বলেন, জীবণ বাঁচার জন্য বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছিলাম অসহায় বিধবা চাম্পা বেওয়াকে। সেই কার্ডের টাকা উত্তোলন করেন তিনি। কিন্তু সেই টাকাই আজ তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ালো নেশাখোর বখাটে ছেলের লাথির আঘাতে।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, এ হত্যা কান্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। নিহত বিধবার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে বখাটে ছেলেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলেছে।