বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সঙ্গিনী বয়সে বড়, ভয় কি তাতে?

SONALISOMOY.COM
নভেম্বর ৯, ২০১৯
news-image

ডেস্ক রিপোর্ট : ভালোবাসা, প্রেম নাকি জাত, ধর্ম আর বয়স বোঝে না। ভালোবাসা আপন ইচ্ছায় আসে, সবকিছুকে জয় করলেও মনকে দুর্বল করে দেয়। মানে ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য মনের ভেতরে আকাঙ্ক্ষা থাকে প্রচুর। সেটা যেভাবেই হোক। তবে আমাদের সমাজটা আবার একরোখা। আমাদের সমাজে মেয়েরা তার চেয়ে বয়সে বড় ছেলেকে বিয়ে করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও তো হয়।

একজন ছেলে তার চেয়ে বয়সে বড় মেয়ের প্রেমে পড়তেই পারে, তাকে ভালোবাসতে পারে, বিয়েও করতে পারে। কিন্তু এমন অসম বয়সের সম্পর্ক আমাদের সমাজ ও পরিবার সহজে মেনে নিতে চায় না। ফলে তাদের যেতে হয় অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে। শুনতে হয় অসংখ্য কটু কথা, সইতে হয় হাজারো লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। বয়সের পার্থক্যের কারণে মাঝে মাঝে সমস্যা দেখা দেয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও। কী করে কাটিয়ে উঠবেন এসব? সেগুলোর পরামর্শই থাকছে আপনার জন্য-

১. সঙ্গীনিকে অবশ্যই নাম ধরে ডাকবেন। ঠিক যেমন করে সমবয়সী বন্ধু বা জুনিয়রদের নাম ধরে ডাকেন। এতে সম্পর্কে নিজের জায়গাটা যেমন শক্ত হবে, তেমনই প্রেমিকাও আরও বেশি করে সহজ হতে পারবেন। প্রেমিকার বয়স ভুলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সমবয়সীর মতো মিশতে হবে, তবেই সম্পর্কটা প্রাঞ্জল থাকবে এবং প্রেমিকার মনে কোনো কমপ্লেক্স তৈরি হবে না।

২. নিছক শারীরিক আকর্ষণে বা কোনো মোহের বশে বয়সে বড় মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে যাবেন না। এতে ক্ষতিটা দু’পক্ষের। কারণ এই মেলামেশাটা কোনও স্থিতিশীল জায়গায় সম্পর্ককে নিয়ে যাবে না। মাঝখান থেকে দু’জনেরই বেশ খানিকটা সময় নষ্ট হবে। মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

৩. বয়সে ছোট বলে নিজের সমস্যা বা জটিলতার কারণে পৌরুষত্ব দেখাতে যাবেন না। প্রেমিকা বয়সে বড় হলে বেশিরভাগ ছেলেদের মধ্যেই সম্পর্কের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার একটা ভয় কাজ করে। এর থেকেই অনেকে রাগারাগি-চেঁচামেচি করে আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করেন। এতে মারাত্মক ক্ষতি হয় সম্পর্কের।

৪. মেয়েরা যখন বয়সে ছোট ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তখন তাঁরাও অত্যন্ত ইনসিকিওরিটিতে ভোগেন। তাই বেশিরভাগ সময়েই খুব পজেসিভ হয়ে পড়েন। এটাকে স্বাভাবিক প্রবণতা হিসেবে দেখার চেষ্টা করবেন।

৫. যদি সত্যি এমন কাউকে ভালবেসে থাকেন এবং সারাজীবন তাঁর সঙ্গে কাটাবার কথা ভাবেন তবে মনে মনে প্রস্তুত থাকবেন যে ভবিষ্যতে পরিবারের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হতে পারে এই সম্পর্ক নিয়ে। সেই ঝড় সামলানোর মতো যদি শিরদাঁড়ার জোর না থাকে, তবে এমন সম্পর্কে কখনও যাবেনই না।

৬. নিজের সঙ্গে প্রেমিকার বয়সের ব্যবধান ৭-৮ বছর বা তার বেশি হলে জানবেন, আপনার বয়সী অন্যান্য ছেলেদের সঙ্গে তিনি স্বচ্ছন্দ নাও হতে পারেন। আপনার সঙ্গে তাঁর নারী-পুরুষ সম্পর্ক কিন্তু আপনার বন্ধুদের তাঁর অপরিণত মনে হতেই পারে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে হ্যাংআউটে গেলে প্রেমিকাকে নিয়ে যাবেন কি না তা ভালো করে ভেবে দেখবেন।

৭. কখনও এমনটা তাঁকে বলবেন না যে তোমাকে অমুক পোশাকটা পরলে বেশি বয়স্ক দেখতে লাগে বা তমুক হেয়ারস্টাইলে তাঁকে আরও অল্পবয়সী মনে হয়। এতে তাঁর নিজের বয়স ও চেহারা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাবে এবং সম্পর্কে অকারণ দূরত্ব তৈরি হবে। আর স্ত্রী বা প্রেমিকার সামনে অল্পবয়সী মেয়েদের প্রশংসা করার সময়ে একটু সচেতন থাকতে হবে। এমন কিছু মন্তব্য না করে ফেলেন যাতে তাঁর মনে আঘাত লাগে।

৮. বয়সে বড় একজন মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতাও বেশি হয়। এটা মেনে নেবেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত বা পরামর্শকে উড়িয়ে দেবেন না।

৯. প্রেমিকার বয়স তিরিশের কোঠায় হলে পরবর্তীকালে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা হতে পারে সেই নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন। দু’জনে এখন থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

১০. প্রেমিকাকে সম্মান করুন, তাঁর অভিজ্ঞতার মূল্য দিন কিন্তু তিনি যে বয়সে বড় সেটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। প্রেমিকা বয়সে অনেকটা বড় হলে এটা সম্ভব যে হয়তো তিনি পেশাগত ভাবে অনেকটা বেশি প্রতিষ্ঠিত আপনার চেয়ে। সেটা যেন হীনমন্যতার জন্ম না দেয়, বয়স ভুলে প্রেমটা যতটা সহজে গ্রহণ করেছেন, এই বিষয়টাও ততটাই সহজে গ্রহণ করুন।

১১. স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্যের কারণে পারিবারিক ও সামাজিক নানা সমস্যার ফলে উভয়ের মধ্যেই মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নারীর মনে তা গভীর প্রভাব ফেলে। ফলে সে নিজেকে দোষী ভাবা শুরু করে। এই মানসিক চাপ যেমন দুজনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে, তেমনি এর কারণে সম্পর্ক ভেঙেও যেতে পারে। পরস্পরের সাথে অধিক সময় কাটান। একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করুন। দূরত্ব সৃষ্টি হলেও তা উত্তরণের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ম্যারেজ কাউন্সিলারের সহায়তা নিন।