বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় চাঁদা না পাওয়ায় কোটি টাকার মাছ নিধনের অভিযোগ

SONALISOMOY.COM
ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোলাকান্দী ইউনিয়নের কনোপাড়া গ্রামের সবসার দিঘী ও পুকুরে মাছ চাষকে কেন্দ্র করে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্রে করে চলতি মাসের ৫ ডিসেম্বর ওই দিঘী ও পুকুরে একই সাথে বিষ প্রয়োগের ঘটনায় প্রায় কোটি টাকার অধিক মূল্যের বিভিন্ন জাতের মাছ নিধন করা হয়।

পরে এই ঘটনায় বাগমারা থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ ও আরো অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনের নামে মামলা দায়ের হলে পুলিশ ৩ জনকে আটক করে ।

গত রোববার ১৫ ডিসেম্বর, রাতে দিঘির নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা করে ১৫ জনকে আহত করে। এরমধ্যে সাতজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার গোয়ালকান্দী ইউনিয়নটি এক সময় সর্বহারা অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে পরিচিত ছিল। ওই সময় সর্বহারাদের হাতে আবুল হোসেন মেম্বার, মোনাক্কা, চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সরকার সহ অনেকে খুন হয়। এ সকল ঘটনায় খুনের ঘটনায় এলকায় চরম অরাজগতার সুষ্টি হয়।

পরে ২০০৪ সালে সর্বহারা দমনের নামে বাংলাবাহিনীর আগমন ওই গোয়ালকান্দীতেই ঘটে। সে সময় ওই এলাকার ত্রাস হিসাবে পরিচিত জেএমবি ক্যাডার আব্দুল মান্নান, ইসামইল হোসেন, ডাবলু সহ অনেক চিহ্নিত সর্বহারারা বাংলা ভাইয়ের দলে যোগ দিয়ে সর্বহারার স্টাইলে এখাকায় চাঁদাবাজি সহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। পরে র‌্যাব মাঠে নামায় বাংলা ভাইয়ের ক্যাডাররা আত্মগোপনে চলে যায় । তাদের অনেকে জেল খাটে ও অনেকের ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়।

এসব ক্যাডারদের মধ্যে আত্মগোপনে থাকা ও জেল থেকে ছাড়া পাওয়া ক্যাডাররা আবার এলাকায় ফিরে এসে সংগঠিত হয়ে আবার চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন নিরীহ ব্যক্তিকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।

জানা গেছে আব্দুল মান্নান, ইসমাইল হোসেন ও ডাবলু সহ তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে জেএমবি’র একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।

সবসার দিঘী ও পুকুরে লীজ গ্রহীতা মকছেদ আলীর বলেন তার নিকট মান্নানের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। সে দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় চলতি মাসের ৫ ডিসেম্বর সেখানে রাতের আঁধারে তারা বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটায়।

এলাকা বাসি জানান, মান্নানের ছেলে সাদ্দাম হোসের মাইক্রো যোগে রাজশাহী শহর থেকে ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী এলাকায় এনে ভয়ভীতি চাঁদাবাজি ও আতংকের সৃষ্টি করেছে। খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশ এলাকায় আসার আগেই তারা ভিন্ন রাস্তা দিয়ে সটকে পড়ে।

এ বিষয়ে গোয়ালকান্দী ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সরকার জানান, চাঁদাবাজির কে কেন্দ্র করে দিঘী ও পুকুরে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। এখানে দলীয় কোন বিষয় নেই। বর্তমানে এলকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোন মূহুর্তে এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংঙ্কা বিরাজ করছে।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, পরিস্থিতির উপর আমরা সর্বদা নজর রেখেছি। সেখানে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধীদের আটকের জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি আমি অবগত আছি এবং পুলিশকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। যাতে এলাকায় কোন অপরাধী অপরাধ সংঘঠিত করতে না পারে। সে ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে চব্বিশ ঘন্টা ওই এলাকায় টহল দেওয়া জন্য বলা হয়েছে।