শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হামলা ভাংচুর, লুটপাট গ্রেফতার ৫

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের কনোপাড়া গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

এলাকা বাসি সুত্রে ও সরজমীনে গিয়ে জানা যায় গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কনোপাড়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মকছেদ আলী প্রাং এ বড় ভাই ভুট্টু প্রাং (৪০) কে তাহেরপুর হাট থেকে ফেরার পথে কনোপাড়া দীঘীর পাড় এলাকায় জেএমবি ক্যাডার নজবুল টুপি, মজহার, বিএনপি ক্যাডার সাইদুর, চান মেম্বার, মান্নান ও তার ছেলে জিল্লুর সহ ১৫/২০ জনের একটি সংঘোবদ্ধ দল লোহার রড, হাতুরী, লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমন করে ভুট্টু প্রাং কে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে তার সাথে থাকা চার্জার ভ্যান ও ভ্যানে থাকা মালামাল, তাহেরপুর হাটে পেঁয়াজ বিক্রীর ২০হাজার টাকা সহ প্রায় ৯০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। এসময় এলাকাবাসি গুরুত্বর আহত অবস্থায় ভুট্টুকে উদ্ধার করে বাগমারা থানা স্বাস্থ্য কম্পলেক্সে ভর্তি করে।

এর পরবর্তীতে মাগরীবের নামজের পর পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে জেএমবি ক্যাডার নজবুল টুপি, মজহার, বিএনপি ক্যাডার সাইদুর, চান মেম্বার, মান্নান ও তার ছেলে জিল্লুর সহ ১৫/২০ জনের একটি দল সংগঠিত হয়ে কনোপাড়া দীঘীর পাড়ে অবস্থিত ৯টি দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করতে থাকে। এর মধ্যে এলাকাবাসি বাগমারা থানায় খবর দিলে বাগমারা থানা পুলিশ ও তাহেরপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভুক্তভুগি দোকানদার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সাংবাদিকদের জানান জেএমবি ক্যাডার নজবুল টুপি, মজহার, বিএনপি ক্যাডার সাইদুর, চান মেম্বার, মান্নান ও তার ছেলে জিল্লুর সহ ১৫/২০ জনের একটি সংঘোবদ্ধ দল লোহার রড, হাতুরী, লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমন করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করলেও পুলিশের সামনে তারা হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করতে থাকে।

এ সময় হামলাকারীরা বাবু, কুদ্দুস, মতলেব, রফিকুল, মোজাহার, মামুন, আশরাফ ও আন্টু সহ ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মকছেদ আলী প্রাং এর গুদাম ঘরে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। ক্ষতিগ্রস্থ দোকানদার বাবু জানান তার দোকানে থাকা ফ্রিজ,টিভি, ঔষধ ও নগদ টাকা সহ প্রায় ৩লক্ষ টাকা লুটপাট করে । কারখানার মালিক রফিকুল তার কারখানায় হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে প্রায় ৫০হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করে বলে জানান। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ দোকানীরা জানান ৯টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ৯লক্ষ টাকার ক্ষতি করে । এই হামলার সময় হামলাকারীদের হাতে একজন মহিলা আহত হন এবং হামলার সময় প্রাণ ভয়ে দোকানদারেরা দিকবিদিক পালিয়ে চলে জান । এ ব্যাপারে বাগমারা থানায় গত রাতে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিযোগ করেন, নজবুল টুপি নিজের বাড়ি তার সহযোগিদের দিয়ে ভাংচুর করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকেরা নজবুল টুপির খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় পুলিশ গতরাতে ৫জন কে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন কনোপাড়া গ্রামের মৃত হাসেনের ছেলে রাজা (৪০), একই গ্রামের জেএমবি ক্যাডার ইসমাইলের ছেলে লালু (২৫), আশরাফুলের ছেলে রাজু (২০)। গ্রেফতারকৃত ৩জন এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী। এছাড়াও থানা পুলিশ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মীর্জাপুর গ্রামের মৃত অছির আলীর ছেলে গোয়ালকান্দি ইউপির ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা আবেদ আলী মোল্লা (৫০) এবং কনোপাড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রী কুদ্দুস আলী(৪০) কে আটক করে । এ ব্যাপারে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাজা, লালু ও রাজুকে ভুট্টুর মারপিটের মামলায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে । আগের মারপিটের মামলায় আবেদ ও কুদ্দুস আলী কে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দে এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং কনোপাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।