বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬

স্পোর্টস ডেস্ক: অনেক আশা-ভরসা নিয়েই ১৩তম এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাগতিকদের সেই আশা রূপ নেয় নিরাশায়। প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে ধরাশায়ী হন টাইগাররা। বুধবার বৃষ্টির শঙ্কা পেছনে ফেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে গড়ানো ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরে যায় ৪৫ রানে। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ২০ ওভার খেললেও ৭ উইকেটে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১২১ রানে। আর তাতে হারেই এশিয়া কাপ মিশন শুরু করল মাশরাফি-সাকিবদের বাংলাদেশ।

Indian cricketer Rohit Sharma (L) is watched by Bangladesh wicketkeeper Mushfiqur Rahim as he plays a shot during a Twenty20 cricket match between India and Bangladesh for the Asia Cup T20 cricket tournament at The Sher-e-Bangla National Cricket Stadium in Dhaka on February 24, 2016. AFP PHOTO/Munir uz ZAMAN / AFP / MUNIR UZ ZAMAN        (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের পক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য সরকারের সঙ্গে মোহাম্মদ মিথুন। তবে দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে ব্যাট করার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি মিথুন। তিন বলে মাত্র এক রান করে ফিরেছেন তিনি সাজঘরে। আশিষ নেহরার বলে বোল্ড হন তিনি। এরপর দ্রুত বিদায় নেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও। ১৪ বলে ১১ রান করে বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ধোনির হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

তামিম ইকবালের পরিবর্তে স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া ইমরুল কায়েসও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ২৪ বলে ১৪ রান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে যুবরাজ সিংয়ের তালুবন্দি হন ইমরুল। বলতে বলতে রানআউটে কাটা পড়ে সাকিবও ধরলেন প্যাভিলিয়নের পথ। ৮ বল মোকাবিলা করে ৩ রান করাই যথেষ্ট মনে করলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার! তার ব্যর্থতায় দলও তখন বিপর্যয়ের মুখে।

বাংলাদেশকে কিছুটা আশা দেখিয়েছিলেন সাব্বির রহমান রুম্মান। কিন্তু তাকে সেই আশার প্রতীক হতে দিলেন না হার্দিক পাণ্ডে। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে সাব্বিরকে উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির তালুবন্দি করেন ভারতের এই অলরাউন্ডার। বিদায়ের আগে ৩২ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন সাব্বির।

বিপিএলে আলো ছড়ানো মাহমুদউল্লাহও ছিলেন নিজের ছাঁয়া হয়ে। ৬ বলে করেছেন ৭ রান। আশিষ নেহরার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ক্রিজে এসে অধিনায়ক মাশরাফি যেন তাড়াহুড়াই করে ফেললেন। রানের খাতা না খুলেই নেহরার বলে ধরাশায়ী হন তিনি। অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও তাসকিন আহমেদ। ১৭ বলে ২টি চারে ১৬ রান করেন মুশফিক। পেসার তাসকিনের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। তিনি মোকাবিলা করেছেন ১৫ রান। একটি করে চার ও ছয়ে ইনিংসটি সাজান তাসকিন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ভারত শুরুতে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন মাত্র দুই রান। তবে দ্বিতীয় ওভারেই চমক দেখান দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামা পেসার আল আমিন হোসেন। নিজের তৃতীয় বলে শিখর ধাওয়ানের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। মাত্র চার রানে এক উইকেট হারিয়েছে ভারত।

সব পেসারই দুর্দান্ত বল করছেন বাংলাদেশের হয়ে। নিজের প্রথম ওভার করতে এসে চমক দেখান অধিনায়ক মাশরাফি। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই রোহিত শর্মা ক্যাচ দিয়েছিলেন। অল্পের জন্য ধরতে পারেননি সাকিব। তবে তৃতীয় বলেই বিদায় করেন কোহলিকে। মিড অফে শট খেলতে গিয়ে মাহমুদুল্লার হাতে তালুবন্দী হন ১২ বলে মাত্র ৮ রান করা কোহলি।

পেস অ্যাটাকের পর অষ্টম ওভারেই স্পিনার নিয়ে আসেন মাশরাফি। এসেই ঘূর্ণি বলে চমক দেখান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৭.৫ ওভারে সুরেশ রায়নার মিডল স্ট্যাম্পে আঘাত হানে রিয়াদের বল। ১৩ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন রায়না। এর মধ্যে দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন রায়না।

১০.৩ ওভারে দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাচ মিস করেন সাকিব আল হাসান। বল করছিলেন তাসকিন আহমেদ। পয়েন্টে রোহিত শর্মা ক্যাচ দিলেও তা লুফে নিতে পারেননি সাকিব। পরের তিন বলে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সুযোগের সদ্বব্যবহার করেন রোহিত শর্মা। তবে নিজের তৃতীয় ওভারে এসে যুবরাজকে আউট করে ক্যাচ মিসের প্রায়শ্চিত্ত করেন সাকিব আল হাসান। তার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন যুবরাজং সিং। ১৬ বলে মাত্র ১৫ রান করেন তিনি। তবে এর আগেই ৪২ রানে ফিফটি পূর্ণ করেন লাইফ পাওয়া রোহিত শর্মা।

শেষ পর্যন্ত এই রোহিত শর্মা বিদায় নেন ৫৫ বলে ৮৩ রান করে আল আমিনের বলে সৌম্যের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এর মধ্যে তিনি হাঁকিয়েছেন সাতটি চার ও তিনটি ছক্কা। ১৮ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডে। ধোনি দুই বলে আট রানে থাকেন অপরাজিত। স্ট্রাইকের সুযোগ পাননি রবীন্দ্র জাদেজা।

বাংলাদেশের হয়ে আল আমিন ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে পেয়েছেন সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। মাশরাফি, সাকিব ও রিয়াদ পান একটি করে উইকেট। ব্যর্থ মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়েও পাননি একটি উইকেটও।