শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে ওরা !

SONALISOMOY.COM
মে ২৩, ২০১৮
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: এক সময় ঘুড়ি নিয়ে মজার খেলা জমে ওঠতো শহর ও গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। ঘুড়ি কাটাকাটি সহ কার ঘুড়ি কত উচ্চতায় উঠেছে তার প্রতিযোগিতায় থাকতো পুরস্কারের ব্যবস্থা। তখন নানান রং বেরংয়ের ঘুড়ি উড়ত আকাশে। তা দেখে মুগ্ধ হত দর্শক। সূতোয় মানজা(এক ধরনের কাঁচ মুক্ত আঁঠা) দিয়ে ঘুড়ি কাটার মজাই ছিল আলাদা। এখন ডিজিটাল যুগে ঘুড়ি উৎসব এসে স্থান করে নিয়েছে মোবাইলে। এ যেন দুধের স্বাদ গোলে মিটানোর কায়দা। তার পরও থেমে নেই প্রকৃতি। থেমে নেই নিরানন্দের মাঝে প্রকৃত আনন্দ খুঁজে বেড়ানোর মানুষ।

সম্প্রতি বাগমারা উপজেলার কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের ঢেকরতলা মেলায় এমনি ঘুড়ি উৎসবে মেতে উঠেছে শিশু কিশোররা। প্রতি বছর জৈষ্ঠ্যের শুরুতে এই মেলা বসে। মেলা চলে দুই দিন। মেলার মূল আকর্ষণ পাঠা বলি ও পালাগান। মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বেশি সমাগম ঘটে এই মেলায়। মেলায় মিষ্টি মিষ্টান্ন সহ বিভিন্ন গৃহস্থলী পন্যসহ বাচ্চাদের খেলনার নানান সামগ্রী নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা। পার্শ্ববর্তী নঁওগা নাটোর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন এই মেলাতে।

এই মেলায় শিশু কিশোরদের মতোয়ারা করে তোলে ঘুড়ি উৎসব। এখানে ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২/৩শ টাকা দামের ঘুড়িও পাওয়া যায়। স্থানীয় ভাবে এই সব ঘুড়ির নামকরণ করা হয়েছে চিলা, ধাউড়, ফিংগে, কোয়াড়া সহ নানান কিছু। মেলায় ঘুড়ি কিনতে এসেছেন পাহাড়পুর গ্রামের সুমন(১০) ও মিজানুর( ১২)। তারা জানান, এখানকার ঘুড়িগুলো খুব ভালো যা আকাশে উড়ে এবং দামেও সস্তা।

প্রতি বছর এই মেলায় ঘুড়ি নিয়ে আসেন আশরাফুল। তিনি প্রায় পাঁচশ ঘুড়ি নিয়ে আসেন এই মেলায়। দুই দিনে তার সব ঘুড়ি বিক্রি শেষ হয়ে যায়। ঘুড়ি বিক্রি থেকে সকল খরচ বাদে গড়ে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ টেকে। আশরাফুলের মত আয়নাল ও করিম ঘুড়ি নিয়ে এসেছেন এই মেলায়। তারা কেউ একশ কেউ দেড়শ ঘুড়ি বিক্রি করবেন। তাদের অভিযোগ প্রতি বছর মেলার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে। মেলার মাঝখানের ডারায় মাছ চাষ করায় সেখানে মেলা বসতে পারে না। এতে মেলায় আগতদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়।

কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাগমারার ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আকর্ষণ ধরে রাখতে হলে মেলা চত্তরের কিছু সংস্কার করা প্রয়োজন। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানতে চাইলে কাচারীকোয়ালীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আয়েন উদ্দিন জানান, মেলায় যাতায়াত সহজ করার জন্য দুই দিকের রাস্তা সংস্কার ও একটি কালভাট নির্মাণ করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গনকে আরো আকর্ষনীয় করতে আগামীতে আরো উন্নয়ন করা হবে।