শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সেলিনার স্বপ্ন পূরণ, ঈমনকে জানালেন স্পেশাল ধন্যবাদ

SONALISOMOY.COM
অক্টোবর ৭, ২০১৮
news-image

সাকিব আল রোমান : আত্মবিশ্বাসের কাছে ব্যর্থতার পরাজয়ে ইতিহাস লেখার মুহুর্ত। দেশসেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়ার সঙ্গে দেশ গড়ার প্রত্যয় নেয়ার মুহুর্ত। কত স্বপ্নই না ছিল। এই হ্যাট মাথায় পড়ার। স্বপ্ন যখন বাস্তবে রুপ নেয় তখন উল্লাস হবেই বাধ ভাঙা। তাই তো রেডি ওয়ান, টু, থ্রি- বলতেই একযোগে কালো হ্যাট আকাশে ছুড়ে দেয়া। সঙ্গে লাফিয়ে ওঠা। যেন আকাশে ওড়ার চেষ্টা। দীর্ঘ পরিশ্রম ও ব্যস্ততাকে ছুড়ে দিয়ে শনিবার যেন মুক্ত আকাশে ওড়ার চেষ্ট প্রতিটা হৃদয়ে দোল দিয়ে যায়।

 

গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ স্বীকৃতি দেয়ার পরে তো আর যেন মন মানছেই না। কেনই বা মানবে? সে যে রাষ্ট্রপতির সাধাসিধে কথা শুনে আরও পুলকিত। আচার্য হিসেবে সমাবর্তনে বক্তব্য দিতে গিয়ে রসিকতা করবেন না- এমনটি যেন মানায় না রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে। কিছুদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে ‘হেলিকপ্টার’ ও ‘হাতের ব্যায়াম’ নিয়ে তার বক্তব্যে মজেন গ্র্যাজুয়েটরা। এরও আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি মজা করে বলেন, ‘বুড়া বাতিল না হলে পথ পরিষ্কার হচ্ছে না’। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫১তম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে ভারতীয় নায়িকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে নিয়ে রসিকতা করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই ৫১তম সমাবর্তন। রেকর্ডসংখ্যক গ্র্যাজুয়েটের অংশগ্রহণে এবার ছিল প্রাণের উচ্ছ্বাস।

 

এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই দেখা যায়, গ্র্যাজুয়েটদের ব্যস্ততা। গত ৩ অক্টোবর কস্টিউম হাতে পাওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাস জীবনের শেষ সময় রঙিন ক্যামেরার ফ্রেমে বেঁধে রাখছেন গ্র্যাজুয়েটরা। তাইতো কখনো টিএসসি, কখনো কার্জন হল, কখনো বা কলা ভবন, মল চত্বর কিংবা সিনেট ভবনে। বাদ যাইনি ভিসি চত্বর, স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা, শহীদ মিনার, এফবিএসসহ অন্য এলাকাগুলোও। দিন শেষে প্রিয় হলে। সকাল-দুপুর-বিকেল ছাড়িয়ে রাত অবধি ছোটাছুটি। সব জায়গায় চষে বেড়ানো। নিজেদের শেষ স্মৃতিস্বরূপ বন্ধুদের নিয়ে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন নানা রঙে, নানা ঢঙে। ছবির তোলার ঢঙেও বেশ বৈচিত্রতা দেখা গেছে, এই যেমন- হতাশ গ্র্যাজুয়েটের বেশে, ভুতুড়ের বেশে, ভিক্ষা করার বেশে ছবি তুলেছেন অনেকে। কেউ আবার লুঙ্গি পরে গায়ে জড়িয়েছেন গাউন, মাথায় দিয়েছেন হ্যাট- এরপর ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুপারম্যানের সাজেও ক্যামেরার সামনে আসছেন গ্র্যাজুয়েটরা। আবার গ্র্যাজুয়েট দম্পতিরা হ্যাটের আড়ালে মুখ লুকিয়ে কী যেন করছেন। অনেকে মা-বাবাকে নিয়ে এসেছেন ক্যাম্পাসে। মা-বাবাকে নিজের গাউন ও হ্যাট পরিয়ে দিয়ে তুলছেন ছবি। আবেগাপ্লুত অনেক বাবা-মা সন্তানের সাফল্যে অশ্রুও ফেলেছন। গ্র্যাজুয়েটরা সময় করেই আবার ছুটে যাচ্ছেন শিক্ষকদের কাছে। প্রিয় শিক্ষকদের সঙ্গে নিজের শেষ স্মৃতিস্বরূপ তুলছেন ছবি। গত পাঁচ বছর যে ক্লাসগুলোতে সময় কাটিয়েছেন সেসব ক্লাসে গিয়েও ছবি তুলেছেন অনেকে।

 

কথা হয় সেলিনা আক্তার নামে এই গ্র্যাজুয়েটের সঙ্গে। তিনি বলেন, এটা অন্যরকম ভালো লাগা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যে স্বপ্ন ছিল, আল্লাহর রহমত ও সকলের দোয়ায় সেটি কবুল হয়ছে বলে গ্র্যাজুয়েট হতে পেরেছি। এটা আমার ও আমার পরিবারের জন্য অনেক বড় অর্জন। স্পেশাল ধন্যবাদ ঈমনকে (স্বামী)। তবে এ স্বীকৃতি শুধু স্বীকৃতি না, এর মধ্য দিয়ে নিজের আরও দায়িত্ব বেড়ে গেছে তা বলতেও ভুল করেন নি এই গ্র্যাজুয়েট।