অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জুতা পেটার মিথ্যা অভিযোগ বাগমারায় প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা ছাত্রের
বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় আত্মহত্যার চেষ্টা করে সাহরান নামের এক ছাত্র। জানাগেছে উপজেলার পানিয়া-নরদাশ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বেশ কয়েক মাস ধরে নরদাশ গ্রামের এসকেন্দার আলীর সাহরান নামের এক বখাটে ছেলে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্ন সময় ছাত্রীটির পথ রোধ করে সে। শুধু তাই নয় ছাত্রীর শরীরে হাত দিয়ে শ্লীলতা হানির চেষ্টাও করে।
গত কয়েক মাস আগে ওই বখাটে ছাত্র প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জনসম্মুখে অন্য একটি ছাত্রীকে মারপিট করে। গত ২৩ জানুয়ারী আবারও পানিয়া-নরদাশ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের এক ছাত্রী কলেজ শেষে কয়েকজন বন্ধবী মিলে বাড়ি ফিরছিলেন সে সময় পিছু নেই ওই বখাটে সাহরান। পথ আগলিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে ছাত্রীটি রাজি না হলে বন্ধবীদের সামনেই গলা চেপে ধরে সাহরান।
পরে সেখান থেকে বান্ধবী সহ বাড়িতে রওনা দেয় ওই ছাত্রী। মাদিলা গ্রামের আলাউদ্দীনের বাড়ির সামনে গেলে পুনরায় তাদের সামনে গিয়ে পথ রোধ করে এবং শ্লীলতা হানির চেষ্টা করে। ওই সময় ছাত্রীটি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে হাজির হয়। পরে স্থানীয়রা এসে বখাটের হাত থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে।
এদিকে ওই বখাটের ভয়ে লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে ছাত্রীর। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী সাহরানের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পানিয়া-নরদাশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ গত ২৯ জানুয়ারী ওই বখাটে ছাত্রকে কলেজ ক্যাম্পাসে দেখতে পেয়ে ডাকে। সে সময় সেখানে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে ওই ছাত্রীর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সে কোন সদুত্তর না দিয়ে টাল বাহানা শুরু করে এবং সবার সামনে বলে উঠে আমি ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবো।
পরে ছাত্রটির মাথা থেকে প্রেমের ভূত তাড়াতে অধ্যক্ষ চড়থাপ্পড় দেয়ায় চেষ্টা করে সে সময় মাথা ঘুরালে তার পিঠে গিয়ে লাগে। সেই রাগে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সাহরান।
সাহরানের বড আব্বা একই কলেজের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সেকেন্দার আলী জানান, ঘটনাটি আমার সামনেই ঘটেছে। সেখানে সাহরানকে কোন অবস্থাতেই জুতাপিটা করার মতো ঘটনা ঘটেনি। তাকে একটু ভয়ভীতি দেখাতে সবার সামনে এই কাজ করা হয়েছে। যাতে এরকম কাজ কোন শিক্ষার্থী না করে।
অপরদিকে ওই ছাত্রীর কয়েকজন বান্দবী জানান আমাদের সামনে সাহরান প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার প্রেমে রাজি না হওয়ায় আমাাদের সামনেই বান্ধবীকে হত্যা উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে।
নরদাশ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে সাহরান। এসএসসি পাশ করে রাজশাহী বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয় সে। সেখানেই লেখাপড়া শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে না পড়ে পানিয়া-নরদাশ ডিগ্রী কলেজে লেখাপড়া করবে বলে বোর্ডের মাধ্যমে ভর্তি বাতিল করে আসার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় জানান দীর্ঘদিন থেকে ওই বখাটে সাহরান বিষের বোতল সাথে নিয়ে ঘুরাফেরা করে। শুধু তাই নয় সে মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে বলেও জানা গেছে।
এদিকে কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রকে প্রকাশ্যে জুতা পিটার মিথ্যা অভিযোগে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টার সংবাদ প্রকাশ করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ গভনিং বডির সদস্যরা তীব্র নিন্দা জানিয়ে গণস্বাক্ষর দেন।
কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন ছেলে যেন ছাত্রীদের বিরক্ত অথবা ইভটিজিং না করে তাই সবার সামনে তাকে শাসন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাকে জুতা পেটার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। একটি চক্র এলাকায় তার মান ক্ষুন্ন করতেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।