বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

শ্রীপুরে মাথাচাড়া দিয়েছে চেয়ারম্যান মকবুলের ক্যাডার বাহিনী ইউনিয়ন জুড়ে অস্ত্রের মহড়া

SONALISOMOY.COM
এপ্রিল ৬, ২০২১
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আশরাফুল ইসলাম নামের এক জেলে হত্যার মামলার আসামী চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা সহ তার ক্যাডার বাহিনী। ইউনিয়ন জুড়ে দেয়া হচ্ছে সুসজ্জিত অস্ত্রের শোডাউন। অস্ত্র আতঙ্কে দিন পার করছে ইউনিয়নবাসী। গত কয়েকদিন ধরে প্রকাশ্যে চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধার নেতৃত্বে তার ছেলে সোহাগ সহ ক্যাডার শাহজান, আফাজ, আশরাফ, বুলেট, নাহিদ, জাকির, রিকো, সাহেব, আনোয়ার, আলমগীর, খোরশেদ, রহিদুল চৌকিদার, শহিদুল, বুলবুল, রফিকসহ ২০-২৫ জনের একটি দল জঙ্গি স্টাইলে সশস্ত্র মোহাড়া দেয়।
এদিকে গত সোমবার বিকেলে শ্রীপুর ইউনিয়নের জামতলা মোড়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধার উপস্থিতিতে তার বাহিনীর সদস্য পুলিশের সামনে লাঠিসোটা এবং অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। এ সময় দলীয় কার্যালয়সহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন তারা। সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর তান্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। উত্তেজনা বিরাজ করছে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণের মাঝে।
স্থানীয় লোকজন জানান, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ১৯ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মকবুল হোসেন মৃধা। তাকে ভোট না দিলে গরীব লোকজনের বিভিন্ন প্রকার সরকারী সহয়াতা বন্ধ করে দেয়ারও হুমকী প্রদান করে থাকেন। দীর্ঘ সময় ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিলো ইউনিয়নবাসী। কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নে সময় পার করেছেন তিনি।

পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও তারা বিভিন্ন ভাবে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি এবং হুমকি প্রদান করেন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কেউ যেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচন করতে না পারে সে কারনে আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তারা। এ সব অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এখন তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যাচার করছেন এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের নানা কথা বলছেন।

একসময় চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধার নেতৃত্বে তার ছেলে সোহাগ সহ ১০-১২ জন সশস্ত্র ক্যাডার ইউনিয়নের খয়রার বিলে শ্রীপুর গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে। সে সময় তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে নিহতের পিতা। পুরনো সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করে চলেছে তারা।
এদিকে গত ১৩ মার্চ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রাথীদের তালিকা তৈরির জন্য তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মীদের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক জিল্লুর রহমানের নিকট পরাজিত হন। তৃণমূলের ভোটে পরাজিত হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন। সেই সঙ্গে পরাজয়ের পর থেকেই তার ক্যাডার বাহিনীরাও বেপরোয়া হয়ে উঠে। সাধারণ মানুষের দাবী অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা বলেন, আমার লোকজনের উপরে হামলা চালিয়েছে কয়েকজন ব্যক্তি। আমার কোন ক্যাডার বাহিনী নেই। আমার লোকজন কোন প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়নি। তবে প্রকাশ্যে অস্ত্রসহ মহাড়ার বিষয়ে মুখখুলেননি তিনি। অপরদিকে খোঁজ নিয়ে আরো জানাগেছে মকবুল হোসেন নিজেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগ আছে তার ছেলে সোহাগ এবং নাহিদের অবৈধ অস্ত্র রয়েছে।
আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান যখন ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সর্বস্তরের মানুষের সমর্থনে এগিয়ে ঠিক তখনই তিনি এমন কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে উঠেছেন।