বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাগমারায় খাস জমি দখল মুক্ত করতে মৎস্যচাষী ও গ্রামবাসীর সংবাদ সম্মেলন

SONALISOMOY.COM
এপ্রিল ১২, ২০২১
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায সরকারী খাস জমিতে জোর পূর্বক দীঘি খননের প্রতিবাতে সংবাদ সংম্মেলন করেছেন স্থানীয় মৎস্য চাষীরা। সোমবার বেলা ১১ টায় বাগমারা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ঝিকরা ইউনিয়নের মৎস্যচাষী ও গ্রামবাসীরা।
এদিকে সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুকুর কিংবা জলাশয় ভরাট সহ নিজেদের পকেটভারি করার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কৃষিজমি নষ্ট করে দীঘি খনন করে চলেছে প্রভাবশালীরা।

সম্প্রতি উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের সেউজবাড়ী গ্রামে প্রায় পাঁচবিঘা ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে দীঘি খননের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি খাস জমি হবার পরেও অভিযুক্তরা ভেকু মেশিন ভাড়া করে দীঘিটি খনন করে চলেছে। ফসলিজমি নষ্ট করে দীঘিখনন কাজ বন্ধ করার জন্য গ্রামবাসির পক্ষে থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, চক সেউজবাড়ী গ্রামের মৃত মজিবর ছেলে রেজা, নরুল, আনোয়ার ও এরশাদ মিলে সরকারী জলাশয়ে জোরপূর্বক দীঘি খনন করছে। এতে গ্রামবাসির মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, দীঘি খনন স্থানে রয়েছে একটি মাঝারি আকৃতির ব্রীজ। অনেক বছর ভোগান্তির পর সরকারী ভাবে ওই স’ানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে দহ চক সেউজবাগী, শান্তপাড়া, গোয়ালীপাড়া, ভটখালি সহ বেশকয়েকটি গ্রামের লোকজন চলাচলের জন্য উক্ত ব্রীজ ব্যবহার করে আসছে। উক্ত সরকারি খাসজমিতে জোড়পূর্বক দীঘিখনন করাতে এরই মধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে ব্রীজের পিলারের নিন্মাংশ।

এছাড়াও ওই স্থানে জোড়পূর্বক দীঘি খনন করার ফলে হুমকিতে পড়বে আশেপাশের কৃষিজমিগুলোও। মাটি দিয়ে উঁচু করে দীঘির চারিপারশ বন্ধ করে দেয়ায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ছে। এতে বর্ষা মৌসুম বা বৃষ্টি হলে আশেপাশের কৃষিজমি ও এলাকাগুলোতে তৈরি হবে জলাবদ্ধতা। অবৈধভাবে দীঘিখনন কাজ বন্ধ করার কথা বলতে গেলে গোলাম রাব্বানীসহ আরো বেশ কয়েকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন অভিযুক্তরা বলেও জানান ভুক্তভোগী রাব্বানীসহ গ্রামবাসিকে। আরো জানান, অভিযুক্তরা প্রথমে সরকারি একটি বড় আকৃতির পুকুর ও পতিতজমি অবৈধভাবে নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেন। কয়েকবছর পর উক্ত পুকুরটির পাশে সরকারি জমিতে দীঘিখনন কাজ আরম্ভ করে।

অভিযুক্তরা আট ভাই মিলে প্রায় আটবছর ধরে উক্ত ব্রীজ সংলগ্ন সরকারি খাস জমি কোন প্রকার টেন্ডার বা লিখিত অনুমতি ছাড়াই জোড়জবরদস্তি ভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। সেখানে একটি বড় আকারের সরকারি পুকুর আছে। পুকুরটিতে এক সময় কয়েকটি গ্রামের সাধারণ কৃষকরা একত্রিতভাবে মাছ চাষ করতো।
ক্ষমতা আর পেশীশক্তির জোরে অভিযুক্তরা সরকারি ওই পুকুরটি নিজেদের দখলে নিয়ে নেন। এরপর থেকে অভিযুক্তরা গ্রামের কোন মানুষকে সেখান থেকে মাছ ধরতে দেয় না। প্রায় পাঁচ বিঘার বেশি সরকারি খাসজমির উপর আবাদী জমি, পুকুর ও দীঘিটি অভিযুক্ত রেজা, নুরুল, আনোয়ার, এরশাদসহ তাদের লোকজন বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। গ্রামের কোন ব্যক্তি সেখানে গেলে তাদের হাতে লাঞ্চনার স্বীকার হবার ঘটনা অহরহ বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। গ্রামেবাসীর দাবি, সরকারি জমিটি যেন সকলের স্বার্থে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মৎস্যচাষী ও গ্রামবাসীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গোলাম রাব্বানী, সাদ্দাম হোসেন, লুৎফর রহমান, মকলেসুর রহমান, আমিন উদ্দীন, আব্দুর রশিদ, আলতাফ, রিপন উদ্দীন, আব্দুল মজিদ, সাত্তার, হামিদুল ইসলাম, সৈয়দ আলী, কালাম, সালাম, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।