বাগমারায় এখানো উচ্চ মূল্যে কেজিতে তরমুজ
বাগমারা প্রতিনিধি: গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজ কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, পুষ্টি গুনেও অনন্য। তীব্র তাপদাহের সময় এর কদর বেড়ে যায় বহুগুণ। এই রমজানে দেশের সবশ্রেণী-পেশার মানুষ ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে পেতে চায় এই তরমুজ।
দেশব্যাপী চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম হাকিয়ে তরমুজ বিক্রি করছেন। এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সর্বত্র তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে।
সম্প্রতি রাজশাহী জেলায় কেজি দরে তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে পিস হিসেবে বিক্রয় করতে বলেছে প্রশাসন। তারপরও বাগমারার বিভিন্ন বাজার ঘুরে কেজিতে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা যায়। দাম যথারীতি ৫০/৬০ টাকা কেজি।
নিষেধাজ্ঞার পরও উচ্চ মূল্যে কেজিতে তরমুজ বিক্রি হওয়া এবং এবিষয়ে প্রশাসনের কোন ভূমিকা না থাকায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এটা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাকবিতন্ডায় জড়াতে দেখা গেছে। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই অনেক ক্রেতা এসে এক কেজি তরমুজ চেয়ে বসছেন।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদের কাছে তরমুজ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, উচ্চ মূল্যে তরমুজ বিক্রি হওয়ার কথা তাঁরাও শুনেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও খবরে বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে তরমুজের দাম নির্ধারণ বা কেজিতে নাকি পিসে বিক্রয় হবে সেই বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা তিনি পাননি। তবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে অতিরিক্ত দামে তরমুজ বিক্রি ব্যাপারে খতিয়ে দেখেন তিনি।
নিম্ন আয় ও করোনার কারনে কর্মহীন মানুষের পক্ষে এবার তরমুজের স্বাদ নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। দ্রুত তরমুজের বাজারে নজরদারি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
চলতি মৌসুমে বাজারে পর্যাপ্ত তরমুজের দেখা গেলেও দাম অনেক বেশি। উপজেলার ভবানীগঞ্জ, তাহেপুর, শিকদারী, মচমইল নরদাশসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ৫০/৬০ টাকা কেজিতে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাগমারার বিভিন্ন বাজারে আসা তরমুজের সিংহভাগ এসেছে খুলনা বিভাগ থেকে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সেখানে বিভিন্ন আড়ৎ এবং ক্ষেতে পিস এবং কেজি দুই পদ্ধতিতেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কেজিতে দাম পড়েছে মানভেদে ২৫-৩৫ টাকা। এছাড়া পিস হিসেবে কিনলে ছোট বড় গড় দাম ৮০- ১২০ টাকার মধ্যে। তবে সবক্ষেত্রেই আড়ৎদারের কমিশন এবং খাজনা দিতে হচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা জানান জমি থেকে তরমুজ কিনলেও কমিশন দিতে হচ্ছে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সিন্ডিকেটকে। এর সংগে আছে পরিবহন খরচ।
ভবানীগঞ্জ গোডাউন মোড়ে এবার তরমুজ বিক্রি আব্দুর রহমান। ক্রেতার ইচ্ছে অনুযায়ী পিস এবং কেজি দুই পদ্ধতিতেই তরমুজ বিক্রি করছেন বলে জানান। প্রতি কেজি ৫০ টাকা হিসেবে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে সেখানে। পিস হিসেবে নিলে আকার ভেদে ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে সেখানে।
আরেক তরমুজ ব্যবসায়ী আকাশ জানালেন, নাটোর থেকে ৪০ টাকা কেজি তরমুজ এনেছেন তিনি। এখানে প্রতি কেজি ৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন।
বিগত বছরগুলোতেও কেজিতে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে দাম এতো বেশি ছিলো না। এবার আমদানি বেশি হলেও দ্বিগুণ দামে তরমুজ কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। তাই দাবি উঠেছে তরমুজের বাজারে ফাড়িয়াদের আধিপত্য কমিয়ে শীঘ্রই দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার। প্রয়োজনে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।