বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

ব্যস্ততা বেড়েছে কামারপট্টিতে

SONALISOMOY.COM
জুলাই ১৫, ২০২১
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: আর মাত্র কয়েক দিন। তার পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। আর এই ঈদুল আযহা ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগমারা উপজেলার কামাররা। প্রায় পাঁচশত অধিক কামার রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে। কেউ বা একা কাজ করেন। কেউ আবার দুই এক জন সহকারী রেখেছেন ঈদুল আযহার মহাকর্মযজ্ঞ পার করতে।

কামার পট্টির টুং টাং শব্দের আওয়াজ জড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি বাজার এবং কামারপাড়া। লোহার দাম বেশি হওয়ায় এবার প্রতিটি জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কাজের চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন অনেক কামার। যে কোন লোহা হাপরে দিয়ে পুড়িয়ে নরম করছেন। এরপর সেই লোহা দিয়ে চাহিদা মতো দা, ছুরি, বটি, হাসুয়া, কাটারী, চাপ্পড় সহ ক্রেতার পছন্দ মতো জিনিস বানিয়ে দিচ্ছেন তারা। কেউ আসছেন নিজেদের প্রয়োজন মতো নতুন জিনিস ক্রয় করতে। আবার কেউ আসছেন পুরাতন দা, ছুরি, বটি, হাসুয়া, কাটারী, চাপ্পড় সহ বিভিন্ন হাতিয়ার ধার দিয়ে তীক্ষ্ম করতে। যেনো কোন মরিচীকা না থাকে। মরিচীকা থাকলে মাংস কাটতে সমস্যা হবে।

বুধবার বিকেলে উপজেলার মচমইল হাটে কামার পট্টি দিয়ে দেখা যায়, খাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। যতো সেল ততো লাভ। বছরের অন্য সময় মানুষ তাদের দৈন্দিন ব্যবহার করতে দা, ছুরি, বটি, হাসুয়া, কাটারী লোহা দিয়ে তৈরি করে নিয়ে থাকেন। অথবা তারা নতুন করেও কামারের কাছ থেকে কিনে নেন। তবে ঈতুল আযহার সময়ে বাড়ি বাড়ি কুরবানি দিতে হয় বলে হাড় কাটার জন্য চাপ্পড় কিনে থাকেন। মচমইল হাটের কামার আব্দুল আলিমের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার আগের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি। চাপ্পড় বিক্রয় হচ্ছে প্রতি কেজি ৫শত টাকা, ছুরি হাসুয়া এবং বটি ৪শত টাকা আর আকার ভেদে ছুটি বিক্রয় হচ্ছে ৫০ থেকে ২০০ টাকায়।

এ বছর চাপ্পড় এবং ছুরির চাহিদা বেশি। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে কিছুটা কাজ কমে গেছে। তবে হাতে বেশি দিন না থাকায় হাতিয়ার তৈরির কাজ বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে তাদের। আব্দুল আলিম আরো জানায়, কামারী তাদের বাপ দাদার পেশা। বাবা মারা যাওয়ার পর তাকেই ধরতে হয়েছে ব্যবসার হাল। কাজের অনেক চাপ তাই একার পক্ষে কাজ শেষ করা সম্ভব না। সে জন্য একজন কর্মচারী রাখতে হয়েছে। লোহার দাম বাদ দিয়ে ভালই লাভ হয়। তার মতো মচমইল হাটে ত্রিনাথ, মাহাবুর, উত্তম কুমার, হারান সহ অনেক কামার রয়েছেন।

তারাও ব্যস্ত সময় পার করছেন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে। কাঠের কয়লা দিয়ে হাপরের সাহায্যে আগুন ধরিয়ে লোহা পুড়াতে হয়। প্রয়োজন মতো আগুনে লোহা পুড়িয়ে তার পর কাঙ্খিত জিনিসে রুপ দিয়ে থাকে কামার। অনেক কামার বলেন, সারা বছরের লোকসান এই ঈদে উঠে আসে। এতো অর্ডারের চাপ পড়ছে যে দিনের দিনে কাউকে পাছানো (ধার) দিয়ে দিতে পারছেন না। হাতিয়ার পাছানো জন্য আকার ভেদে ৩০ থেকে ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে।