বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যতবার হামলার শিকার হন শেখ হাসিনা

SONALISOMOY.COM
আগস্ট ২৭, ২০২১
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট গ্রেনড হামলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রথম কিংবা শেষ চেষ্টা নয়। এর আগে পরে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর ১৫ বার সশস্ত্র হামলা করা হয়।

১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার পর থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সে বছরই তার ওপর হামলা চালায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীরা।

 

২৪ জানুয়ারি ১৯৮৮। লালদীঘি ময়দানে ৮ দলীয় জোটের সমাবেশে যোগ দিতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে যাওয়ার পথে ট্রাক মিছিলে সশস্ত্র হামলা হয়। এতে সাতজন নিহত হন। আহত হন ৩০০ জন। পরদিন জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয় শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গুলি করেছিল পুলিশ ও বিডিআর।

পরের বছর ১১ আগস্ট ১৯৮৯ সাল। আবারও বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক-রশিদের ফ্রিডম পার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা। শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে আছেন তা নিশ্চিত হয়ে রাত ১২টার দিকে ৭-৮ মিনিট ধরে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করলেও তা বিস্ফোরিত হয়নি।

১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সাল। গ্রিন রোডে একটি কেন্দ্রে ভোটের পরিস্থিতি দেখতে যান শেখ হাসিনা। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই ২০-২৫ রাউন্ড গুলি ও বোমাবর্ষণ করা হয়। দৈনিক ইত্তেফাকে লেখা হয় বিএনপির ওয়াহিদের নেতৃত্বে দলটির কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছিল।

২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪। ইশ্বরদী ও নাটোর রেলস্টেশনের প্রবেশমুখে শেখ হাসিনাকে বহনকারী রেলগাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা।
১৯৯৫ সালের ৭ ডিসেম্বর রাসেল স্কয়ারের কাছে সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শেখ হাসিনা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।

১৯৯৬ সালের ৭ মার্চ। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনা বক্তৃতা শেষ করেছেন মাত্র। হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস থেকে সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ২০ জন আহত হন।

২০ জুলাই ২০০০। গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার প্রস্তুতি চলছে। হেলিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা ধরা পড়ে গোয়েন্দাদের কাছে।

৩০ মে ২০০১। খুলনার রূপসা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করে হুজি-বি। তিন দিন আগে সেতুর কাছাকাছি রূপসা নদী থেকে দুটি ইঞ্জিনের নৌভা থেকে ১৫ জঙ্গি ধরা পড়লে সেটি আর সফল হয়নি।

২৫ সেপ্টেম্বর ২০০১। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিলেটে নির্বাচনী জনসভায় শেখ হাসিনাকে হুজি-বি বোমা পেতে মারার পরিকল্পনা করে। সভাস্থলের ৫০০ গজ দূরে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে জঙ্গিদের দুজন নিহত হলে চক্রান্ত ভেস্তে যায়।
৪ মার্চ ২০০২। যুবদল ক্যাডার খালিদ বিন হেদায়েত নওগাঁয় বিএমসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের তৎকালীন নেতা শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়।

৩০ সেপ্টেম্বর এপ্রিল ২০০২। সাতক্ষীরা কলারোয়ায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো হয়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন জোটের এমপির প্রত্যক্ষ মদদে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালায় বিএনপি জামায়াত জোট সন্ত্রাসীরা।
আরো পড়ুন: ২১ আগস্ট: আইভি আপার সঙ্গে মরে গেলে ভালো হতো

২ এপ্রিল ২০০৪। আবারও বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীদের হামলা। বরিশালের গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলিবর্ষণ করা হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো সবচেয়ে বড় গ্রেনডে হামলায় ২৪ জন নিহত ও ৪০০ জন আহত হন। এসব হামলা ছাড়াও শেখ হাসিনাকে হত্যার বেশ কয়েকটি ষড়যন্ত্রের কথা জানা যায়।

১৯৯৯ সালের ১২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ৩১ জনকে হত্যার জন্য পুরষ্কার ঘোষণার একটি ইমেইল ফাঁস হয়। ইমেইল প্রেরণকারী ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক শোয়েব চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করা হয়।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ সাব-জেলে তাকে স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।