শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

শরীয়তপুর-২ আসন তুমি কার?
গণসংযোগে এগিয়ে খালেদ শওকত জনসমর্থনে সুলতান মাহমুদ সিমন

SONALISOMOY.COM
সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮
news-image

সাকিব আল রোমান ও নিলয় মাহমুদ, নড়িয়া থেকে ফিরে : শরীয়তপুর-২ আসনে বর্তমান সাংসদ কর্নেল (অব.) শওকত আলী অবসরে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু হওয়ার পর থেকেই নতুন সম্ভাব্য প্রার্থীদের চলছে নমিনেশন পাওয়ার লড়াই। শরীয়তপুর-আসন ঘুরে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন আসনটিতে গণসংযোগে এগিয়ে আছেন বর্তমান সাংসদ কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে খালেদ শওকত ও জনসমর্থনে এগিয়ে সুলতান মাহমুদ সিমন।

শরীয়তপুর-২ সংসদীয় আসন হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটি। এটি শরীয়তপুর জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ২২২নং আসন। নড়িয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে শরীয়তপুর-২ আসন। শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানা এলাকা) আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের আসন হিসেবে পরিচিত। তবে এখানে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দীর্ঘকালের। গত দুই দশকে নিজেদের মধ্যে হানাহানি ও সংঘাতের বহু ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছে একাধিক দলীয় কর্মী। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকলেও তা সহিংসতায় রূপ নেয়নি। কিন্তু বিএনপি মনে করছে, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সুযোগে তাঁরা এ আসনটি দখল করে নিতে পারবেন। যদিও এর কোন আলামত এখন পর্যন্ত দলটি দেখাতে পারেনি। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকলেও আসনটি আওয়ামী লীগের দখলেই আছে বলা যায়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা জোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজনীতি থেকে অবসরে যাচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত আলী । সে কারণে দলে আসছে নতুন প্রার্থী। আলোচনায়ও আছেন সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী ।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় ও দলীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন কর্নেল (অব.) শওকত আলী। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি দলকে শক্তিশালী করার কাজে অনেক ভূমিকা রাখলেও। দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধের কারণে দলের অনেক পরীক্ষিত ও দায়িত্বশীল নেতাকর্মী তখন তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে যান। শুরু হয় নতুন কোন্দল।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে যাঁরা আলোচনায় আছেন তাঁরা হলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাভানা আক্তার ও সংসদ সদস্য শওকত আলীর ছেলে ডা. খালেদ শওকত আলী। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক

* ডা. খালেদ শওকত আলী বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত আলীর পুত্র। শওকত আলী ডেপুটি স্পিকার থাকাবস্থায় তাঁর হাত ধরে এলাকার রাজনীতিতে আসেন ডা. খালেদ। তাঁর সঙ্গেই তিনি দলীয় সভা-সমাবেশে যোগ দিতেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও দাতব্য কর্মকাণ্ডে যুক্ত। বেশ কিছুদিন ধরে ডা. খালেদ নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করছেন। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদ শওকত আলীর জন্য দলীয় মনোনয়ন চাওয়া হবে। খালেদ শওকত আলীর প্রত্যাশা, মুক্তিযুদ্ধে শওকত আলীর অবদান এবং নির্বাচনী এলাকায় চার দশক ধরে আওয়ামী লীগকে শক্তশালী অবস্থানে ধরে রাখার বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।

* সুলতান মাহমুদ সিমন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর। দীর্ঘ দিন ধরেই এই আসনের মানুষের সেবা করে আসছেন। ২০০১ সালে দলীয় নমিনেশন চেয়ে ব্যর্থ হলে সতন্ত্র নির্বাচন করেন এই নেতা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রায় ৩১ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। জনমত হিসেব করলে এই আসনটিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নামটি তার দখলেই। তিনি আগামী নির্বাচনে শরীয়তপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

* এনামুল হক শামীম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চট্টগ্রামের দায়িত্বে আছেন। সম্প্রতি তিনি নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়নের কাজ করেছেন।
এনামুল হক শামীম মনে করেন, নিজের মনোনয়নের চেয়ে তাঁর কাছে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আগামী নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা। সে জন্য তিনি রাত-দিন তৃণমূল থেকে কেন্দ্র আর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ করে যাচ্ছেন।

* নাভানা আক্তার সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য হওয়ার পর এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি শরীয়তপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে।

এখন দেখার অপেক্ষা কে হাসবে শেষ হাসি।