দেশে ফিরতে চায় মালয়েশিয়ায় কারাবন্দী ১৪৬৬ বাংলাদেশি!
ডেস্ক রিপোর্ট : শেখ সেকেন্দার আলী মালয়েশিয়া প্রতিনিধি: মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগসহ বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আটক বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে চায়। মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের প্রধান দাতু খাইরুল দাজামি দাউদ ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ার কুচিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মালয়েশিয়ার ১৪ টি কারাগারে আটক বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ৮ হাজার ৭শত ৭৪ জন। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইন্দোনেশিয়ার ৩ হাজার একশত ৭২জন। দ্বিতীয় অবস্থানে মায়ানমারের ১ হাজার ৯শত ১২ জন।
তৃতীয় অবস্থানে আছেন বাংলাদেশি ১ হাজার ৪শত ৬৬ জন। বাকিরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এসময় তিনি আরও বলেন ব্যাক ফর গুড’ এর আওতায় বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭৫ হাজার ৩শত ৪৪ জন বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা ইমিগ্রেশন অফিসে দেশ ত্যাগের জন্য নাম লিপিবদ্ধ করেছে। যার মধ্য থেকে ৫৬ হাজার ২শত ৮৪ জন ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া ত্যাগ করেছে।
মালয়েশিয়ার কারাগারে আটক বাংলাদেশির আত্মীয় সফিকুল এই প্রতিবেদককে জানান, মাাঝে আমি কারাগারে আমার আত্মীয় কে দেখার জন্য কারাগারে সাক্ষাৎ করে জানতে পারি, আটক বাংলাদেশিরা একটি বিমানের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছে। অনেকেইর কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় মেয়াদ শেষ হলেও জেলে রয়েছে। এব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেলহাজতে আটক বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার দাবি জানান।
এদিকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগে একমত হলেও আবারো মালয়েশিয়া থেকে শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ যাওয়ার ঘোষণা দিলেন মালয়েশিয়া প্রতিনিধিদল। আগামী ১৯ অথবা ২০ নভেম্বর ঢাকায় আসবেন মালয়েশিয়া প্রতিনিধিগণ। গত বছরের ১লা সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি এসপিপিএ।
এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি মালয়েশিয়ায় বৈঠক করেও শ্রমবাজারটি চালু করতে পারেননি। এরপর ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নতুন করে কর্মী নেয়ার কিছু পদ্ধতি ঠিক হয়।
এদিকে, চলতি বছরের ১৪ মে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়া সফর করে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারানের সাথে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের অগ্রগতি হিসেবে ২৯ ও ৩০ মে মালয়েশিয়ায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু না এবারও শ্রমিক প্রেরণে কোনো সমাধানে আসতে পারেনি দু’দেশ। আবার একটি নতুন তারিখ পায় বাংলাদেশ।
সেই তারিখ অনুযায়ী গতকাল বুধবার মালয়েশিয়ার পুত্রজায়াতে আবারও অনুষ্ঠিত হয় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক।
বহুল প্রত্যাশিত সেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মালয়েশিয়া সরকার নিশ্চিত করে যে, স্থগিত হওয়া এসপিপিএ সিস্টেম বা এর সদৃশ্য কোনো সিস্টেম বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আর কখনো ব্যবহৃত হবে না। তবে বৈঠকে জি টু জি প্লাস সিস্টেমেই দুই সরকার কাজ করার বিষয়ে একমত হয়।
এদিকে, আগামী ২৪-২৫ নভেম্বর ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির সভায় উপরোক্ত বিষয় গুলো পুনঃপর্যালোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিন্ধান্ত গৃহীত হবে বলে দু’পক্ষই একমত পোষণ করে।