শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ইলেকট্রনিক্স মার্কেট করোনার কারণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে: এম এ রাজ্জাক খান রাজ

SONALISOMOY.COM
ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
news-image

দেশের ইলেকট্রনিক্স জগতের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান তরুণ প্রগতিশীল ব্যবসায়ী এম এ রাজ্জাক খান রাজ। ১৮ বছর ধরেই যেকোন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই  শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডটি। ‘আমার পণ্য আমার দেশ, গড়ব বাংলাদেশ’- এই স্লোগানকে লালন করে তাদের এই এগিয়ে চলা”।

 

একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি জানান, বিজয়ের এই ৪৯ বছরে ইলেক্ট্রনিক ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা, সামগ্রমিক পরিস্থিতিতে তাদের পথচলা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে।

সোনালী সময়: সামগ্রিক বছরটি ব্যবসার জন্য কেমন ছিল?

 

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: আমরা সবাই জানি এ বছর আমদের সকল ব্যবসায়ীদের জন্য মোটেও ভাল বছর ছিল না। এই মহামারীতে আমাদের সকলকেই অর্থনৈতিক মন্দার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।  আমাদের পক্ষে ব্যবসার সকল দিকে প্রয়োজনীয় অর্থ বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। তার পরেও আমরা ধীরে ধীরে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি।

সোনালী সময়: ইলেকট্রনিক্স মার্কেট করোনার কারণে কি পরিমাণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে তা কতটুকু কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলে মনে করেন। সামনে আরো কি করা উচিৎ?

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: যদি এক কথায় বলি, তাহলে আমি বলবো ইলেকট্রনিক মার্কেটে এই মহামারীর বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এর পেছনের কারণ যদি আমরা খুজতে চাই তাহলে দেখতে পাবো যে এই ধরণের ইলেকট্রনিক পণ্যগুলো এখন সর্বত্র ব্যবহৃত হলেও এগুলো কিন্তু অসলে বিলাসবহুল পণ্য। উদাহরণস্বরুপ আমরা টেলিভিশনকেই দেখতে পারি, একটা ভাল মানের টেলিভিশন কিনতে গেলেও কিন্তু মোটামুটি ২০ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এই কারণেই এই বছরটি ইলেকট্রনিক্স মার্কেটের জন্য ছহিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। আর এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে আমরা সঠিক সময়ে বহুমুখী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই ধরণের সময় উপযোগী সব পদক্ষেপ সামনেও আমাদের গ্রহণ করতে হবে , তাহলেই আমরা সকলে মিলে সামনে এগিয়ে যেতে পারবো।

সোনালী সময়: স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি আজ কি অবস্থায় আছে?

 

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: খারপ লাগলেও বলতে হয় আমাদের স্বাধীনতার ৪৯ বছর চলে গেলেও মাদের দেশীয় ইলেকট্রনিক মার্কেটে আমরা আমদের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারিনি। কারণ আমাদের দেশের গ্রাহকের বিদেশী ব্র্যন্ডের প্রতি দুর্বলতা গড়ে উঠেছে। এর পরেও বর্তমানে ধীরে ধীরে আমাদের দেশীয় ব্র্যান্ড তাদের নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে শুরু করেছে। এছাড়াও বর্তমান সরকারের বিভিন্ন ব্যবসাসুলভ নিতি নির্ধারন আমাদের ব্যবসাকে আরও সহজ করে তুলছে।

সোনালী সময়: মিনিস্টারের বর্তমান পরিকল্পনা নিয়ে কিছু বলুন। মিনিস্টারকে আপনি কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: মিনিস্টার গ্রুপ বরাবরই একটি লক্ষ্য রেখে কাজ করে এসেছে। আর সেটি হচ্ছে ন্যয্যমূল্যে মানুষকে সেরা পণ্যটি প্রদান করা। আর আমরা এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে আসছি এবং গ্রাহকদের থেকেও সেইভাবে সাড়াও পেয়ে আসছি। আর আমরা আমাদের ব্র্যান্ডকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই যেখানে, আমরা আমাদের দেশ ছাপিয়ে বিদেশের মাটিতে একটি দেশীয় মাল্টি ন্যাশনাল হিসেবে আত্নপ্রকাশ করব।

সোনালী সময়: বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নতিতে ব্যবসায়ীদের ভুমিকা কি?

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: : আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে ব্যবসায়ী সমাজ। আমদের দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এবং সমাজ সংস্করণে ব্যবসায়ী গোষ্ঠি প্রশাসনের সাথে মিলে মিশে অনেক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে। এসব কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের সাথে ব্যবসায়ীদের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার একটি সুযোগ তৈরী হবে।

সোনালী সময়: বিজয় দিবসের প্রাক্কালে সকলের প্রতি আপনার আহ্বান কি?

এম এ রাজ্জাক খান রাজ: আমি বিজয় দিবসের প্রাক্কালে সকলের প্রতি একটাই আহ্ববান জানাই, সেটি হচ্ছে আমরা সবাই শপথ করব আমরা যে যেখানে আছি, সেখান থেকেই নিজেদের কাজকে ভালবাসবো, এবং দেশকে ভালবেসে কাজ করবো। এতে করে যা হবে আমাদের সকল কাজের মাধ্যেই দেশপ্রেমটি ফুটে উঠবে। আর সকলেই যখন দেশ প্রেমকে ধারণ করে কাজ করব তখন সেই কাজ থেকেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।

স্বপ্নের শুরু ২০০২ সালের ১ লা জুন মোহাম্মাদপুরের একটি ছোট ফ্যাক্টরীতে মাত্র ৫ জন সহকর্মী এবং ৫ লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে। সিঙ্গাপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা ও চাকরির পরই দেশে এসে একটি দেশীয় মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ডের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের উপর ভর করে আজ তিনি তার সফলতার চরম শিখরে। একের পর এক নতুন পণ্য বাজারে এনে তিনি সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। আর সেই স্বপ্নবাজ মানুষ হলেন এম এ রাজ্জাক খান রাজ; যিনি কাল পরিক্রমায় ধীরে ধীরে আজ আস্থার একটি নাম হয়ে উঠেছেন।

তিনি জানান, বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য টিভি থেকে মিনিস্টার টিভি চোখকে রাখবে ক্ষতি হওয়া থেকে সুরক্ষিত কারণ এই টিভি আই প্রোটেক্টিভ টেকনোলজি দ্বারা তৈরি। এতে রয়েছে উন্নত মানের প্যানেল তাই বজ্রপাতেও প্যানেল নষ্ট হয় না। এছাড়া এই টিভিতে রয়েছে ফোর কে ও ফুল এইচডি সিস্টেম। এটা কম্পিউটার মনিটর হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। টিভির সাথে ২টি রিমোট ও একটা ওয়াল হ্যাঙ্গার ফ্রি। মিনিস্টারের টিভিতে ৭ বছরের ওয়ারেন্টি আর ৪ বছরের প্যানেল গ্যারান্টিসহ রয়েছে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি।

এছাড়া বাজারে স্বল্প মূল্যে এবং কম ভোল্টেজে চলে এমন ফ্রিজের অনুসন্ধানের সূত্র ধরে তিনি নিয়ে আসেন বিল্ট ইন স্টেবেলাইজার সমৃদ্ধ এনার্জি সেভিং ফ্রিজ, যা ইতোমধ্যে মানুষের চাহিদার যোগান দিতে সক্ষম। এবং এই স্বল্পমূল্যে স্বল্প ভোল্টেজে চলা ফ্রিজের চাহিদা বাজারে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এই ফ্রিজের কম্প্রেসারে ১২ বছরের গ্যারান্টি।

ফ্রিজের অগ্রযাত্রার ফলশ্রুতিতে তরুণ নেতা এম এ রাজ্জাক খান বাজারে নিয়ে আসেন এয়ার কন্ডিশনার। তিনি জানান, মিনিস্টার এসি এনার্জি সেভিং, ইনভার্টার এবং ইএস টেকনোলজি সমৃদ্ধ এবং মানেও উন্নত। ফ্রিজের মত ইনভার্টার এসির কম্প্রেসারেও থাকছে ১২ বছরের গ্যারান্টি।

 

এই সব পণ্যের পাশাপাশি তিনি বাজারে নিয়ে আসেন ব্লেন্ডার, রাইস কুকার সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক গৃহস্থালির তৈজসপত্র ।

 

করোনা পরবর্তী এই সময়ে মূলত স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্যই মিনিস্টার বাজারে এনেছে “মিনিস্টার হিউম্যান কেয়ার”। বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে গঠিত ৬টি নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে বাজারে এসেছে মিনিস্টার। “সেইফটি প্লাস”, “ইজি ওয়াস”, “চাঁদ”, “হেক্সিন”, “কেয়ার এন্ড কেয়ার” ও “ফ্ল্যাশ” এই ৬টি ব্র্যান্ডে প্রোডাক্টসমূহ আলাদা করা হয়েছে। “সেইফটি প্লাস” এর মধ্যে হ্যান্ড ওয়াস, গ্লাস ক্লিনার, ফ্লোর ক্লিনার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ভেজি ওয়াস অন্তর্ভুক্ত। “ইজি ওয়াস” এর অধীনে ডিটারজেন্ট পাউডার, লন্ড্রি সোপ, লিকুইড ডিটারজেন্ট রয়েছে। “চাঁদ” এর অধীনে থাকবে ফেব্রিক ব্রাইটেনার (ব্লু), ডিশ ওয়াস লিকুইড, ডিশ ওয়াস বার। “হেক্সিন” এর মধ্যে থাকবে হ্যান্ড রাব। “কেয়ার এন্ড কেয়ার” এর অধীনে থাকছে বডি ওয়াস, বডি লোশন, পেট্রোলিয়াম জেলি। “ফ্ল্যাশ” এর অধীনে থাকবে টয়লেট ক্লিনার, টয়লেট ক্লিন পাউডার।