শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বাগমারায় দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী

SONALISOMOY.COM
জুন ১৫, ২০২১
news-image

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় দিন দিন বেড়ে চলেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যতো বেশি পরীক্ষা ততো বেশি আক্রান্ত। অনেকের করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলেও করাচ্ছেন না পরীক্ষা। ফলে গোপনে ওই লোকজনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে অন্যদের মাঝে করোনা ভাইরাস।

এদিকে প্রতিদিন গড়ে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষা করতে আসছেন ৩০-৩৪ জন। পরীক্ষা কম হওয়ায় আক্রান্ত কম হচ্ছেন। তবে পরীক্ষা বেশি হলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারনা চিকিৎসকদের। সোমবার ৫১ জনের করোনা ভাইরাসের নমূনা পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ হয় ৩২ জনের। পরীক্ষার সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের রোগী।

করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এ এসে পরীক্ষার ভিত্তিতে করোনা পজিটিভ হয়েছে ১৩৩ জন। এদের মধ্যে ৯ জনকে রাখা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে। ৯ জনের মধ্যে দুই জন পুরুষ আর ৭জন নারী। আক্রান্ত ৯ জনের বয়স ৪০ থেকে ৬০ এর মধ্যে। তবে সঠিক চিকিৎসা আর পরিচর্যায় আগের চেয়ে অনেক সুস্থ আছেন তারা।

মঙ্গলবার বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে চিকিৎসাধিন রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রাব্বানী। আইসোলেশন সেন্টার পরিদর্শন শেষে ডাঃ গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, সীমিত সংখ্যক পরীক্ষা দিয়ে তেমন কিছু বুঝার উপায় নেই। যতো বেশি পরীক্ষা করা হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি হচ্ছে। প্রতিদিনই করা হচ্ছে করোনা পরীক্ষা। একজন ব্যক্তি করোনা পরীক্ষা করলে ১০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল দেয়া হচ্ছে। বেশি লোকজনের করোনা ভাইরাসের নমূনা পরীক্ষা করতে গেলে একটু দেরী হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর থেকে প্রায় ২০ জন করোনা পজিটিভ রোগী সুস্থ হয়েছেন। অন্যদের নিজ নিজ বাড়িতে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। আক্রান্তরা যেন সবার সাথে না মিশে সে বিষয়েও খেয়াল রাখা হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের বিষয়ে মানুষ সচেতন না হওয়ার ফলে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী চললে সংক্রমণের হার কম হবে।

এদিকে বাগমারা উপজেলায় করোনা প্রতিরোধে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনামূলক পরিস্থিতি অনুযায়ী কার্যক্রম চলমান রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উপজেলার যে যে এলাকায় করোনা রোগী সনাক্তের হার বেশি সে সকল এলাকায় লকডাউন জোরালো ভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চলাফেলা পর্যবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে সার্বক্ষনিক নজরদারী চালাতে বলা হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত কোন ব্যক্তি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হলে তাকে সব ধরণের সহযোগীতা প্রদানের জন্য সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে করোনা প্ররিরোধ কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার। সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রাব্বানী জানান, বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিনের স্থলে ছয়দিন করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান, কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ আক্তার বেবি, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা এসএম মাহমুদুল হাসান সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ হাট-বাজার বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নের করা হচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ বাগমারা থানাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।