সৃজিতের বয়স আসলে কত?
সোনালী সময় ডেস্ক: অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলাকে বিয়ের পর থেকে সৃজিত মুখার্জী একটি পরিচিত মুখ বাংলাদেশে। এই বিয়ে নিয়ে কত কিছুই না হয়েছে। একদিকে যেমন মিথিলাকে সহ্য করতে হয়েছে নানা কটাক্ষ, তেমনি বয়স নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সৃজিতকেও। ‘বুড়ো’ বলে হাসিঠাট্টা করা হয়েছে তাকে নিয়ে। এখনো সৃজিত-মিথিলার কোনো ছবি পোস্ট হলে তাতে হাসির রোল পড়ে যায়।
কিন্তু আসলেই কি সৃজিত ‘বুড়ো’? কত তার বয়স? এই প্রশ্নের জবাব টলিউড নির্মাতা নিজেই দিয়েছিলেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলাভিশনের ‘আমার আমি’ নামে একটি সেলিব্রিটি টক শো’তে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন মিথিলা। তার প্রশ্নের মাধ্যমেই উঠে এসেছিল সৃজিতের প্রকৃত বয়স। একেবারে বছর, মাস, দিন, ঘণ্টা উল্লেখ করে সেখানে নিজের বয়স জানান নির্মাতা।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানের অংশবিশেষ নতুন করে ভাইরাল। মিথিলা সেখানে সৃজিতের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াসহ সবখানে তোমার বয়স নিয়ে কথা উঠেছে। মিথিলা নাকি একজন ‘বুড়ো’ ডিরেক্টরকে বিয়ে করেছে। সে জন্য প্লিজ, সবাইকে তোমার বয়সটা বলে দাও।’
জবাবে সৃজিত বলেন, ‘১৯৭৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৩টা ৫৪ মিনিটে আমার জন্ম। সেই হিসেবে আমার বয়স হলো ৪২। আমি এ বছরের সেপ্টেম্বরে ৪৩ হবো। আমার পাকা দাড়ি দেখে বয়স পঞ্চাশোর্ধ ভাবার কোনো কারণ নেই। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী আমার মা। কারণ, আমার মার ২৫ বছর বয়স থেকে চুল পাকতে শুরু করে। এই জ্বীনে আমার কোনো হাত নাই।’
স্বামীর মুখে এমন উত্তর শুনে উচ্চস্বরে হেসে ফেলেন মিথিলা। মজা করে তিনি বলেন, ‘সৃজিতের আসল বয়স হচ্ছে ছয় বা সাড়ে ছয়ের কাছাকাছি। কারণ, আমার মেয়ে আইরা এবং ওর বন্ধুত্বটা যখন দেখি, তখন আমার মনে হয় দুজনের বয়স একই।’ সৃজিতও মজা করে বলেন, ‘আমি একটু ছোট আইরার থেকে।’ মিথিলা বলেন, ‘সে জন্যই ছয়, সাড়ে ছয় বললাম। কারণ, আইরার তো সামনে সাত বছর হবে।’
২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর কলকাতায় গিয়ে সৃজিতকে বিয়ে করেন মিথিলা। সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের সদস্য এবং কাছের কয়েকজন বন্ধুবান্ধব। ২০১৮ সালে কলকাতায় একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিং করতে গিয়ে গায়ক অর্ণবের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল সৃজিত-মিথিলার। সেই পরিচয় থেকে প্রেম, তারপর পরিণয়। এই বিয়ের সূত্রে দুই বাংলাতেই থাকতে হয় মিথিলাকে। কাজও করছেন দুই জায়গায়।
এটি মিথিলার দ্বিতীয় বিয়ে। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট তিনি প্রথম বিয়ে করেন বাংলাদেশি গায়ক-অভিনেতা তাহসান রহমানকে। বিয়ের পরে তারা যৌথভাবে একাধিক গানের অ্যালবাম বের করেন। দাম্পত্য জীবনও চলছিল ঠিকঠাক। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল তাদের সংসারে আসে মেয়ে আইরা। এর চার বছরের মাথায় হঠাৎই আসে ঝড়। সবাইকে অবাক করে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তারকা দম্পতি।
অন্যদিকে, টলিউড নির্মাতা সৃজিত মুখার্জী এর আগে বিয়ে না করলেও তার জীবনে এসেছেন একাধিক নারী। সৃজিতের প্রথম প্রেম হিসেবে সামনে আসে কলকাতার হট সেনসেশন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জির নাম। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ‘মিশর রহস্য’ ও ‘জাতিস্মর’ নামে দুটি সিনেমা নির্মাণ করেন সৃজিত। দুটিতেই নায়িকা ছিলেন স্বস্তিকা। গুঞ্জন রয়েছে, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ডিভোর্সি ও এক মেয়ের মা স্বস্তিকার প্রেমে পড়েন সৃজিত। যদিও তাদের সে সম্পর্ক দেড় বছরের মাথায় ভেঙে যায়।
এরপর ২০১৫ সালে ‘রাজকাহিনী’ নির্মাণ করেন সৃজিত। সেখানে প্রথমবারের মতো এই নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেন বাংলাদেশি সুপারস্টার জয়া আহসান। ওই বছরের শেষ দিকে হঠাৎ গুঞ্জন ওঠে, পরিচালক সৃজিতের সঙ্গে প্রেম করছেন জয়া। এমন গুঞ্জন নাকচ করে দেন জয়া-সৃজিত দুজনই। এক সাক্ষাৎকারে জয়া দাবি করেন, সৃজিত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার বেশি কিছু নয়। এর কিছুদিন বাদেই ইতি ঘটে জয়া-সৃজিতের প্রেমগুঞ্জনের।
২০১৮ সালের শুরুতে আবার গুঞ্জন ওঠে, কলকাতার সংগীতশিল্পী মধুবন্তী বাগচীর সঙ্গে প্রেম করছেন সৃজিত। ভারতের ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ এ নিয়ে খবরও প্রকাশ করে। পরবর্তীতে বিষয়টি অস্বীকার করে গায়িকা মধুবন্তী বাগচী বলেন, ‘আমি আমার জীবন এবং কাজকে খুব গুরুত্ব দেই। অযথা আমাকে নিয়ে গুঞ্জন রটাবেন না।’সে প্রেমকে পেছনে ফেলে আপাতত মিথিলাতে ডুবে আছেন সৃজিত।