ই-কমার্সের অস্থিরতা পুন:রুদ্ধারে বাজারে ‘লেট’স গো মার্ট’র যাত্রা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক: “নেভার লেট গো অব ইউর নিডস” স্লোগানকে সামনে রেখে দেশের বাজারে চলমান ই-কমার্সের অস্থিরতা পুন:রুদ্ধারের জন্য বিজনেস টু কাস্টমার (B2C) মডেল নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল “লেট’স গো মার্ট”। আজ ৫ অক্টোবর রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারের এ.এইচ.এম মাহমুদুল হক মিলনায়তনে বাণিজ্যিক সূচনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ই-কমার্স বিজনেসের যাত্রা শুরু করে। এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় যেকোনো পণ্য কিনতে পারবেন গ্রাহকরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন “লেট’স গো মার্ট”-এর চেয়ারম্যান মেজর (অব:) মো রবিউল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান, পরিচালক ও প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফ-উস-সালেহীন ও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমসহ প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
“লেট’স গো মার্ট”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, “দেশের বাজারের আসা এই প্লাটফর্মটি ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে দারুণ কিছু উদ্ভাবনী ও কাস্টমাইজড সেবা নিয়ে এসেছে। বর্তমানে দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে যাতে ক্রেতারা সহজ, ঝামেলাবিহীন এবং দ্রুততম সময়ে পণ্য পেতে পারে সে লক্ষ্যেই মানসম্মত পণ্যসম্ভার নিয়ে “লেট’স গো মার্ট” এখন থেকে সেবা দিয়ে যাবে। “লেট’স গো মার্ট”এর সেবাগুলোর মাঝে রয়েছে, দ্রুত ডেলিভারির নিশ্চয়তা, মানসম্মত পণ্যের সমাহার, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ডেলিভারি করার সুযোগ। এছাড়া ফ্যাশন একসেসরিজ থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিকস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, স্মার্টফোন গেজেট, হস্তশিল্পসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যই পাওয়া যাবে। “ইউ শপ উই ড্রপ” এই নীতির উপর ভিত্তি করে লেট’স গো মার্ট এর সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেট’স গো মার্ট’-এর ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপনকালে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও প্রধান পরিচালনা কর্মকতা (সিওও) সৈয়দ আশরাফ-উস-সালেহীন জানান, “ প্রত্যেকটা ব্যবসার নিজস্ব একটি ইকো-সিস্টেম থাকে। সেক্ষেত্রে যে ব্যবসার ইকো-সিস্টেম যত ভালো সেই ব্যবসার পরিবেশ তত বেশি সুন্দর। বর্তমানে বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ইকো-সিস্টেমে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমরা আমাদের স্টেক হোল্ডারদের সাথে নিয়ে ই-কমার্সের এই সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কাজ করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের বিজনেস মডেলে দুটি বিষয় নিয়ে এসেছি। একটি হচ্ছে ক্যাশ অন ডেলিভারি। যেখানে আমরা মার্চেন্ট ও কর্পোরেট থেকে নগদ টাকায় পণ্য কিনে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দিব। অন্যটি হচ্ছে জিরো ওয়্যার হাউজ ও জিরো এ্যাডভান্স সিস্টেমে, যেখানে কোন ধরণের পণ্য মজুদ করা হবে না এবং কোন ধরনের এ্যাডভান্স নেয়া হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “দেশের ই-কমার্সগুলোতে বরাবরই দেখা গেছে অনেক ব্যবসায়ী রি-সেলার হিসেবে কাজ করেছে। যার কারণেই দেশের ই-কমার্স ব্যবসা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু লেটস গো মার্টে রি-সেলার হিসেবে ব্যবসার করার সুযোগ নেই। আমাদের এই ই-কমার্স প্লাটফর্মে আমরা সব সময় স্বচ্ছভাবে ভোক্তা ও ক্রেতা- বিক্রেতাকে সঠিক ভাবে ব্যবসা করার জন্য উৎসাহ প্রদান করবো। এর মাধ্যমে দেশের মধ্যে মুখ থুবরে পড়া ই-কমার্স শিল্পকে ঘুরে দাড়াতে দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে। অন্যভাবে বললে আমরা “রিভাইভ”-করে এই ই-কমার্স শিল্পের স্বরুপ তুলে ধরবো। একই সাথে এই ই-কর্মাসের মাধ্যমে আমরা দেশের নতুন নতুন নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা এবং উদ্যোক্তা তৈরিতে সবসময় কাজ করে যাব।”
দেশে মানুষ ই-কমার্সের প্রতি যে অবিশ্বাস বা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তাতে কিভাবে গ্রাহকদের মাঝে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বর্তমান পরিবেশে অবশ্যই একটি কঠিনতম কাজ হচ্ছে মানুষকে বিশ্বাস করানো। দেশের বাজারে ই-কমার্সগুলো বাকিতে মার্চেন্টের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অ্যাডভান্স নিয়েছে, যার কারণে পণ্য ডেলিভারি দিতে সমস্যায় পড়ছে। যার কোনটাই আমাদের এখানে করা হবে না। আমাদের ব্যবসায়িক মডেলটি খুবই ইউনিক। যেকোন গ্রাহক চায় নগদে পণ্য ক্রয় করতে। যেটা আমরা নিয়ে এসেছি। আমাদের পণ্য ক্রয় করতে কোন ধরনে অ্যাডভান্স দিতে হবে না। ফলে গ্রাহক নিশ্চিন্তে- নির্দ্বিধায় পণ্য ক্রয় করতে পারবে। আমাদের বিশ্বাস আমরা খুব দ্রুতই গ্রাহকে মাঝে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারবো।
লেট’স গো মার্ট -এর অ্যাপ ও ওয়েব সাইটে যে ইউজার ইন্টার ফেস রয়েছে, যেটি দেশের ভিতরে আর কোন ই-কমার্স ওয়েব প্ল্যাটফর্মে নেই। লেট’স গো মার্ট -এর ব্যবহারকারীরা চাইলেই অ্যাপ এবং ওয়েব সাইটকে নিজের পছন্দ মতো রঙে রাঙাতে পারবে। তাছাড়া লেট’স গো মার্ট’র ওয়েব সাইটে প্রবেশের পর বামপাশে ক্যাটাগরি অপশন পাবেন গ্রাহকরা। এখান থেকে যেকোনো ক্যাটাগরিতে গিয়ে পছন্দমতো পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন। যেখানে রাখা হয়েছে ১০ ক্যাটাগরিতে ৮ হাজারেও অধিক পণ্য। এসব পণ্য পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অর্ডার করলেই পণ্য পৌঁছে যাবে আপনার ঠিকানায়।