ওই নোটিসে বলা হয়েছে, সাংবাদিক ও অন্য বিভাগের যে কর্মীদের আর প্রয়োজন নেই, তারা অবসরে যাওয়ার সময় পর্যন্ত বর্তমান হারে মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। যারা মজুরি বোর্ডের অধীনে রয়েছেন তাদেরকে কোম্পানির প্রস্তাব গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে।
কুইন্ট লিখেছে, এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কথা বলতে তারা যোগাযোগ করলেও আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রুপের কোনো সাড়া পায়নি। ইমেইলে তাদের লিখিত প্রশ্নেরও কোনো উত্তর আসেনি।
চার পৃষ্ঠার আনন্দবাজার পত্রিকা নিয়ে ১৯২২ সালে যাত্রা শুরু করে এবিপি গ্রুপ। বর্তমানে এই গ্রুপের হাতে রয়েছে বাংলা ট্যাবলয়েড এবেলা, ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফ, দেশ ও সানন্দাসহ আটটি ম্যাগাজিন এবং এবিপি নামে বিভিন্ন ভাষার ছয়টি টেলিভিশন চ্যানেল।
এদিকে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাজার ও ৫০০ রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর আর্থিক সংকট তৈরি হওয়ায় বিভিন্ন কোম্পানি বিজ্ঞাপন খাতে খরচ কমিয়ে দিয়েছে, যার ধাক্কা লেগেছে সংবাদ মাধ্যমে।টেলিগ্রাফ ও আনন্দবাজার প্রত্রিকার প্রকাশক এবিপি গ্রুপ তাদের প্রকাশনাগুলোর পাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিভাগীয় প্রধানদের কর্মী ছাঁটাই করতে নির্দেশ দিয়েছে বলে ‘সংশ্লিষ্ট সূত্রের’ বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের খবরে।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, মজুরি বোর্ডের অধীনে থাকা কর্মীদের জন্য এবিপি গ্রুপ স্বেচ্ছা অবসরের প্রস্তাব দিয়েছে। কর্মীদের অবসরের বয়স ৬০ বছর থেকে কমিয়ে ৫৮ বছরে নামিয়ে আনা হয়েছে।
আনন্দবাজার ও টেলিগ্রাফের সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে কুইন্ট লিখেছে, এবিপি গ্রুপ তাদের পত্রিকা, সাময়িকী ও টিভি চ্যানেলগুলোকে ‘আরও সময়োপযোগী করতে এবং ব্যয় কমাতে’ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হে কন্সালটেন্সি লিমিটেডকে দায়িত্ব দেয়। ছয় মাস কাজ করে হে কনসালটেন্সির সম্প্রতি যে সুপারিশ তুলে ধরেছে, তাতে ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ কর্মী বাড়তি বলে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়।
আনন্দবাজার ও টেলিগ্রাফ মিলে কর্মীর সংখ্যা বারশর বেশি। এর বাইয়ে চ্যানেলগুলোরও বেশ কিছু কর্মী রয়েছে।ঠিক কতজন কর্মী ছাঁটাই করা হবে তা স্পষ্ট না হলেও কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগের হতাশার ছায়া পড়েছে সাংবাদিক ও অন্যান্য বিভাগের কর্মীদের ওপর।
এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে কুইন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, “এতো বড় সংখ্যক সংবাদকর্মীর জন্য নতুন কাজ পাওয়া এই বাজারে এমনিতেই কঠিন। পশ্চিমবঙ্গে এ সমস্যা আরও প্রকট হবে, কারণ পত্রিকা আর টিভি- দুই মাধ্যমেই বেশ কিছু দিন ধরে মন্দা যাচ্ছে।”
এর আগেও ১৯৯৯ সালে পরামর্শকের সুপারিশ নিয়ে কর্মী ছাঁটাই করেছিল এবিপি গ্রুপ। তবে সে সময় ছাঁটাইয়ের সংখ্যা তত বেশি ছিল না।
কুইন্ট লিখেছে, ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গত দুবছর ধরে এবিপি গ্রুপের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এবিপির প্রকাশনায় সরকারি বিজ্ঞাপনও বন্ধ রয়েছে।