শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

আলেপ্পোতে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি

SONALISOMOY.COM
ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
news-image

অনলাইন ডেস্ক: সিরিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত আলেপ্পো নগরীতে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে ভোটাভুটি করছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৯টায় এ ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

আলেপ্পোয় উদ্ধার তৎপরতা পর্যবেক্ষণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টি তদারকি করতে সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল ফ্রান্স। ওই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রবিবার ভোটাভুটি হয়। পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে দ্বিমত না থাকলেও খসড়া প্রস্তাবের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাতে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়া। ওই প্রস্তাবে আলেপ্পোকে ‘বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার সাংবাদিকদের জানান, খসড়া প্রস্তাবে রাশিয়ার আপত্তির পর প্রায় তিন ঘণ্টা আলোচনার পর তারা নতুন করে ভোটাভুটির জন্য সম্মতি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, ‘আগামীকাল (সোমবার) সকাল ৯টায় ভোটাভুটি হবে।’

জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূত ভিটালি চারকিন বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এখন আমাদের হাতে একটি ভালো বক্তব্য রয়েছে। আমরা আগামীকাল (সোমবার) সকালে ভোটাভুটির জন্য সম্মতি দিয়েছি।’

এর আগে শুক্রবার দিনশেষে একটি খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করে ফ্রান্স। আলেপ্পোতে মানবিক সংকটের অবনতি এবং সেখানকার কয়েক লাখ মানুষের ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতার ভীষণ প্রয়োজন উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এতে। বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা পরিষদ আতঙ্কিত। ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া দেলাত্রে বলেন, আন্তর্জাতিক উপস্থিতি আলেপ্পোকে আরেকটি সেব্রেনিৎসা হওয়া থেকে রক্ষা করবে। ১৯৯৫ সালে বলকান যুদ্ধের সময় বসনিয়ার সার্ব বাহিনীর কাছে সেব্রেনিৎসার পতন ঘটার পর সেখানকার হাজার হাজার পুরুষ ও তরুণদের হত্যা করা হয়।

এদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ অনুগত বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী বাস  ও অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্তত ৩৫০ আলেপ্পোবাসী যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীটি ত্যাগ করেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি অব হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে আটকা পড়া মানুষদের নিয়ে আসার জন্য পাঠানো কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। অন্তত পাঁচটি বাসে আগুন দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি।

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা জানান, বাসে আগুন দেওয়ার পর আটকা পড়াদের সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম বেশ কিছুক্ষণ থমকে থাকে। পরে দু’পক্ষের সমঝোতায় স্থানীয় সময় রবিবার রাত ১১টায় আবারও আটকা পড়া মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। অন্তত ৩৫০ জন বেসামরিক মানুষকে সিরিয়ার পশ্চিমে সরকারি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়। আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হাজার হাজার মানুষ এখনও উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন।

এর আগে সরকারি পক্ষের দাবি ছিল, বিদ্রোহীদের অবরোধের মধ্যে থাকা ইদলিব প্রদেশের শিয়া অধ্যুষিত কেফরায়া ও ফুয়া শহরের মানুষদের বাইরে আসার অনুমতি দেওয়ার পরই নতুন চুক্তি কার্যকর হবে। ওই এলাকাটি বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে সেখানকার দুই হাজার শিয়া জনগণের কেউ এখনও শহর ত্যাগ করেননি বলে জানা গেছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।