বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দিনব্যাপী মধুমেলা শুরু

SONALISOMOY.COM
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) যৌথ উদ্যেগে পাঁচ দিনব্যাপী ‘মধুমেলা’ আজ থেকে শুরু হয়েছে। রাজধানীর সোবহানবাগে অবস্থিত ড্যাফোডিল টাওয়ারের নিচতলায় আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেলা চলবে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মো. ইফতেখার ও বাংলাদেশ এগ্রোপ্রসেসর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম মুনশি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম, বিসিকের প্রকল্প পরিচালক আমিনুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচলিক স্টুযেন্ট এফেয়ার্স  সৈয়দ মিজানুর রহমান ও ইনকিউবেশন এন্ড ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান।
সাধারণ মানুষের মধ্যে খাঁটি মধুর পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্যরক্ষায় এর উপকারিতা এবং মধু প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই  এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় প্রাকৃতিক উপায়ে প্রস্তুতকৃত উন্নত মানের খাঁটি মধু তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়া যাবে। মেলায় অংশ নেয়া মধু বিক্রেতারা প্রত্যেকেই বিসিকের নিকট নিবন্ধিত মৌচাষী। এঁদের মধ্যে বিদেশে মধু রপ্তানিকারী চাষীও রয়েছেন। মেলায় সারা দেশের ৩২ জন মৌচাষী অংশগ্রহণ করছেন। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মধুমেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পসচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, কৃষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে পারলে মধু উৎপাদন আরও বাড়বে। এজন্য বিসিকের ঋণ সহয়াতা প্রকল্প আরও সহজ করতে হবে। পাশাপাশি এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণদান  প্রক্রিয়াও আরও সহজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন,  মধু নিয়ে আমাদের দেশে খুব একটা প্রচারণা নেই। আমাদের প্রচারণা বাড়ানো উচিত। এক্ষেত্রে মধুমেলা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই শুধু দেশীয় পরিসরেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও মধুমেলার আয়োজন করা উচিত।
বিসিকের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফিতিখার বলেন, মধু নিয়ে বিসিকের বেশ কিছু পরিকল্পণা রয়েছে। যেমন মধুর নির্ভেজালত্ব নিশ্চিত করা, ব্রান্ডিং ও মার্কেটিংয়ে জোর দেওয়া এবং বিদেশে মধু রপ্তানীর ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এখন বিসিকের প্রধান লক্ষ্য, বিদেশে মধু রপ্তানিকরণ। এজন্য মধু প্রক্রিয়াজাত করণের দিকে বিসিক বেশি নজর দিচ্ছে।
বিসিকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিসিক এখন থেকে মধু বিষয়ে একাডেমিক জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্রে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা  নেবে।
বাপা’র সভাপতি  ফখরুল ইসলাম মুনশি  বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের বাজার ছেয়ে গেছে ভেজাল মধু দিয়ে। সেখানে খাঁটি মধু পাওয়াই দায়। এরকম পরিস্থিতিতে গ্রাহকের দোরগোড়ায় খাঁট মধু পৌঁছে দেওয়ার জন্য এমন মধুমেলা নিয়মিত হওয়া উচিত। এরকম একটি সময়পোযোগী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিসিক এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ। মধুর গুণাগুণ প্রচার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মধু বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে এ ধরনের মধুমেলা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
সভাপতির বক্তব্যে  মোঃ  সবুর খান বলেন, মধুর গুণাগুণ বলে শেষ করা সম্ভব নয়। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে যেমন সত্য তেমনি সব ধর্মেও মধুকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুতরাং মধূর বাজার তৈরি হয়েই আছে। এখানে প্রয়োজন শুধু বিনিয়োগ এবং সঠিক পন্থায় মার্কেটিং। এসময় তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কিভাবে মূল্য সংযোজন করে মধুকে আরো বেশী আর্কষণীয় করা যায় এবং মধুর প্যাকেটজাতকরণ পদ্ধতি এবং মার্কেটিং নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে।
ডিআইইউ চেয়ারম্যান আরও বলেন, এখন থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্যান্টিন এবং অফিসে চায়ের সঙ্গে চিনি মেশানো হবে না। দেশীয় মধুকে প্রমোট করতে এটি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উদ্যোগ।
সবুর খান আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন হোটেলে বিদেশে মধু পরিবেশন করা হয়। দেশেই যখন খাঁটি মধু উৎপাদিত হচ্ছে তখন বিদেশি মধু কেন?’ এটা দুঃখজনক উল্লেখ করে এসব হোটেলে দেশীয় মধু সরবরাহের ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান মো. সবুর খান।
সবশেষে মো. সবুর খান বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধুমেলা হবে। বিসিক ইচ্ছা করলে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়াতেও এ মেলার আয়োজন করা যেতে পারে।