শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যাটেল এগেইনস্ট সাইবার প্রোপাগান্ডা ‍’ব্লু হোয়েল’ শীর্ষক সেমিনা

SONALISOMOY.COM
অক্টোবর ৩০, ২০১৭
news-image

নিজেস্ব প্রতিবেদক: কেবল সরকারই নয় সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে সচেতন হতে হবে সেবা দানকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবহারকারী নিজেকেও। সাইবার ঝুঁকি এবং ব্লু হোয়েলের মত গুজব সম্পর্কে বিরত থাকতে প্রয়োজন সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান, তথ্য এবং প্রয়োগ বা চর্চা।

আমাদের দেশে সাইবার সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট সকলের একত্রে কাজ করা প্রয়োজন বলে জানায় সিটিও ফোরাম, ইনফরমেশন সিকিউরিটি এ্যালায়েন্স এবং মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেড আয়োজিত “ব্যাটেল এগেইনস্ট সাইবার প্রোপাগান্ডাঃ ব্লু হোয়েল” শীর্ষক সেমিনারে আগত বক্তারা। সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় আজ ২৮ অক্টোবর, ২০১৭, রোজ শনিবার, জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে।

সাইবার নিরাপত্তা এবং নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব সুশান্ত কুমার সাহা এবং মেট্টোনেট বাংলাদেশ লিমিটের প্রধান নির্বাহী পরিচালক আলমাস কবীর, সেমিনারের সভাপতি¦ত করেন সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার।

অনুষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় সচেতনতা বিষয়ে মূল বক্তব্য পেশ করেন সিটিও ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরফে এলাহি মানিক, এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. তৌহিদ ভূইঁয়া।

অনুষ্ঠানে শেষ ভাগে সিটিও ফোরামের উপদেষ্টা ও সাউথইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এম. মাঈনুদ্দীন চৌধুরীর

সঞ্চালনায় সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে অংশগ্রহণ করেন সিটিও ফোরামের সহ-সভাপতি দেব দুলাল রায়, কার্যকরী কমিটির সদস্য তাহের আহমেদ চৌধুরী সহ উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা।

সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার স্বাগত বক্তব্যে বলেন- গুজব নতুন কিছু নয়, গুজব ছাড়াতে ইন্টানেটের ব্যাবহার হয়তো নতুন। তাই আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে আর সচেতনতার জন্য প্রয়েজন তথ্য এবং তার পরির্চচা। আর আমাদের আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো সাইবার নিরাপত্তা বিধানে আমাদের দায়িত্ব কি এবং আমরা কিভাবে এ সাইবার গুজবে মোকাবেলা করতে পারি সে বিষয়ে আলোকপাত করা এবং সবাই মিলে একটি সুনির্দিষ্ট পথে এগিয়ে চলা। যেখানে সরকার, সেবা দানকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবহারকারী অংশগ্রহন অপরিহার্য।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযেগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন- নিরাপত্তা বিধানে এবং গনসচেতনতায় বিটিআরসি যৌথভাবে কাজ করছে জাতীয় টেলিকম মনিটরিং সেন্টার এর সংগে সেই সাথে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করনে সরকার বদ্ধপরিকর। কেবল বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বেই এখন সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। তাই সবার জন্য ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আমরা সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিকেও যথেষ্ঠ গুরত্ব দিচ্ছি। সেই সাথে সরকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ইন্টারনেটের অপব্যবহার করে সোস্যাল মিডিয়ার যে গুজব ছড়িয়েছে তা মোকাবেলায় সরকারের সাথে সকলের অংশগ্রহন প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব সুশান্ত কুমার সাহা বলেন- দেশের টেকসই আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন পুরনে অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহার অপরিহার্য আবার অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে কিন্তু তাই বলে প্রযুক্তি ব্যবহার তো বন্ধ করা যাবেনা বরং আমাদেরকে সচেতন হতে হবে এর ব্যবহারে। দেশ আজ বিশ্ব বাজারে নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে যেখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার অনীবার্য। সুতরাং ব্যবহারের সচেনতাই ঝুকি মোকাবেলার একমাত্র হাতিয়ার।

মেট্রোনেটের প্রধান নির্বাহী আলমাস কবীর বলেন- নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা আর নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার। ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকারী ভুমিকা রাখতে পারে। দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ব্লু হোয়েলের মত গুজব হতে রক্ষা করতে প্রয়োজন সর্বস্তরে গনসচেতনতা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন- ইন্টারনেট বা অনলাইন সহ নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের সম্যক ধারনা নেই বলে দেশে ব্লু হোয়েলের মত গেম নিয়ে এত গুজব রটেছে। তথ্য জ্ঞানের অভাবে আমরা সহজে এগুলো বিশ্বাস করছি যা তথ্য প্রযুক্তির কর্ম পরিধির বিস্তার লাভে প্রতিবন্ধক।তাই আমাদের সঠিক তথ্য জানতে হবে। সঠিক তথ্য জানার বা জানাবার জন্য সরকার,একাডেমী এবং ইন্ডাস্ট্রির যৌথ কার্যক্রম অপরিহার্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কারিকুলামে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক শিক্ষা প্রয়োজন কারণ তারাই আগামীর ভবিষ্যৎ। আবার ব্যবহারকারী জনসাধারনের মাঝে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য সচেতনতা বৃদ্বিতে কাজ করতে হবে সরকারী এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমুহকে। প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল, তাই ব্যবহারকারীদের থাকতে হবে হালনাগাদ। তবেই এ ধরনের সাইবার হুমকি এবং গুজব রোধ করা সম্ভব।

এছাড়াও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সিটিও ফোরাম, ইনফরমেশন সিকিউরিটি এল্যায়েন্স এবং মেট্টোনেট সহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।