শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

ঢাকার ল্যাবে যাচ্ছে তাসপিয়ার পোশাক

SONALISOMOY.COM
মে ১৪, ২০১৮
news-image

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসপিয়া আমিনের (১৫) মরদেহের পোশাক রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডির ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।তাসপিয়া হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ভিকটিম তাসপিয়ার পরনে থাকা পোশাকগুলো ডিএনএ ম্যাচ (রাসায়নিক পরীক্ষা) করানোর জন্য রোববার আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরও জানান, এ ছাড়া আদালত পিবিআইকে এ মামলার আসামি ও তাসপিয়ার প্রেমিক আদনানের ব্যবহার করা মোবাইল এবং তার সিমের সব তথ্য পাওয়ার ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এর আগে তাসপিয়ার মরদেহের ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সিআইডি ভিসেরার ভিত্তিতে কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেনি।

তা ছাড়া সনাক্ত করা যায়নি তাসপিয়াকে বহনকারী সেই সিএনজি অটোরিকশার নম্বরও।

রোববার তাসপিয়া আমিন হত্যা মামলার আসামি আদনান মির্জাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর চট্টগ্রাম মহানগর শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরীর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

একই সঙ্গে তাকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত আগামী ৩১ মে শুনানির দিন ধার্য করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জানান, গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের উপস্থিতিতে পুলিশ আদনানকে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আদনান তার সঙ্গে তাসপিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আদনান স্বীকার করেছে, তাসপিয়ার ফেসবুক তার বাবা বন্ধ করে দেন। এরপর তারা দু’জনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতেন।

সিএমপির তাসপিয়া মার্ডার মামলার তদন্ত টিমের ইনচার্জ এডিসি আরেফীন জুয়েল জানান, তাসপিয়ার জন্য ভাড়া করা অটোরিকশা চিহ্নিত করা গেলেও সেটির নম্বর সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ওই অটোরিকশার স্ক্রিনশট ঢাকার সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২ মে স্থানীয়রা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সৈকত এলাকার ১৮ নম্বর ব্রিজের উত্তর পাশে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনেরা লাশটি তাসপিয়ার বলে সনাক্ত করেন।

সুরতহাল রিপের্টে মরদেহের এক চোখ উপড়ে ফেলা, অপর চোখ নষ্ট করে দেয়া ছাড়াও নাক-মুখ থেঁতলানো, পিঠ, বুক এবং নিতম্বে নির্যাতনের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। তার বুকের মাঝেও নখের দাগ রয়েছে।

এর আগে গত ১ মে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল স্কুলছাত্রী তাসপিয়া আমিন।

এ ঘটনায় ৩ মে তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গা থানায় তাসপিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আদনান মির্জা মামলার আসামি ফিরোজের পরিচালিত ‘রিচ কিডস’ নামের গ্যাংস্টারের (এডমিন) প্রধান। আর বাকি চার আসামি সেই গ্যাংস্টারের সদস্য- শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও সোহায়েল প্রকাশ সোহেল।

তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন আসামিদের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনেছেন।